Site icon Aparadh Bichitra

গণ পরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য

রাজধানীর গণ পরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতি ও হয়রানির শিকার হচ্ছে যাত্রী সাধারন। প্রথম থেকেই দুরত্ব অনুযায়ী বাসের ভাড়া নির্ধারন করলে এই নৈরাজ্য ঠেকানো সম্ভব হত। প্রতি কিলোমিটারে কত টাকা ভাড়া হবে তা নির্ধারনের আইন থাকলেও তা বাস্তবায়নের কোন কর্তৃপক্ষ সর্বদাই অনুপস্থিত।

এ দায়িত্ব সরকারের যে সংস্থার হাতে রয়েছে সে সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাই বলতে পারবে না প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া কত। কাজেই এই অজ্ঞতার সুযোগ গণ পরিবহনের মালিক শ্রমিকরা ব্যবহার করবে এটাই স্বাভাবিক। সিটিং সার্ভিসের নামে বাস ও মিনিবাসে দেড় গুন থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদি যাত্রীকে পরিবহন শ্রমিকরা অমার্জিত গালিগালাজ করে এমনকি গায়ে হাত তোলে।

পৃথিবীর কোথাও গণ পরিবহনে এমন ফ্রি স্টাইল অরাজকতা নেই। আছে শুধু আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে। অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশ সব দিকেই স্বাধীন। গত বছর বিআরটিএ রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস নিষিদ্ধ করে। মাস খানে তা থাকার পর পরিবহন শ্রমিকদের চাপে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। ভুক্তভোগীরা বলছে সরকারের চাইতে পরিবহন শ্রমিকরা বেশি শক্তিশালী।

এর আগেও সড়কে স্বাভাবিকতা বজায় রাখার সকল প্রক্রিয়ায় সরকার পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকদের অন্যায্য দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়ে গেছে। গণপরিবহণে নৈরাজ্য প্রতিরোধ করার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি যাত্রী সেজে বাস ও মিনি বাসে ভ্রমন করবে ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার সময় হাতে নাতে ধরে জেল জরিমানা করবে।

অতিতেও এধরনের উদ্যোগ নিয়ে তা সফল করতে পারেনি সরকার। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ ব্যর্থ হবে বলেই ভুক্তভোগীদের বিশ্বাস। বাসের কন্ডাক্টারের চাহিদা মত ভাড়া দিতে না পারায় ও ছাত্রদের হাফ ভাড়াকে কেন্দ্র করে বাসে হাতাহাতি নিত্য দিনের ব্যাপার।

এই হাতাহাতির এক পর্যায়ে ছাত্রকে বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে হত্যার মত ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। পরিবহন শ্রমিকদের দৌড়াত্ব থামাতে না পারলে এই সেক্টরে অরাজকতা দমন করা সম্ভব হবে না।