Site icon Aparadh Bichitra

শিল্পে আগাম কর-এ ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে শিল্প উদ্যোক্তাদের ঘাড়ে আগাম করের বোঝা চাপানো হয়েছে। তবে এই বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেই বলে ব্যবসায়ীরা হতাশ। বাজেটে শিল্প স্থাপন ও উৎপাদন ব্যয় দুটোই বাড়বে। কারন মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশ আগাম কর পরিশোধের বিধান করা হয়েছে।

এ পদ্বতি ব্যবসা বান্ধব নয় বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। সার, বীজ থেকে শুরু করে ডাল, গম, পেয়াজ, ভোজ্যতেল আমাদানির ওপর কর ধার্য করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এর প্রভাবে চিনি ও ভোজ্য তেলের দাম ইতোমধ্যে বেড়ে গিয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার কারণে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন এভাবে আগাম কর আদায় এক ধরনের হয়রানি। এই আগাম করের কারনে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠান আরও পিছিয়ে পড়বে। তারা আগাম কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। দেশের বিভিন্ন কাষ্টম হাউসগুলোতে আগাম কর আদায় শুরু হয়ে গেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ আইনের মাধ্যমে নতুন ভ্যাট আইনের ৩১ ধারা সংশোধন করে সব ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে আগাম কর আরোপ করা হয়েছে। আগে ১ কোটি টাকার মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে শিল্প উদ্যোক্তাকে ১ লাখ টাকার শুল্ক দিতে হতো।

বাজেটে আগাম কর আরোপ করায় ১ শতাংশ আমদানি শুল্কের সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ আগাম করসহ মোট ৬ শতাংশ শুল্ক কর দিতে হবে। ফলে ১ কোটি টাকার মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে খরচ পড়বে ৬ লাখ টাকা। এতে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আরও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে। কারন দ্রব্যমূল্য বাড়ার সাথে তাদের আয় বাড়ছে না।

সমাজে সৃষ্টি হবে ধনী-দরিদ্রদের মধ্যে বৈষম্য। এই বৈষম্যের ফলে দেশে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধিরও যথেষ্ট শংকা রয়েছে। তাদের মধ্য থেকে প্রতিবাদ উঠছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। অর্থনীতিবিদগণ বলছেন একটি নির্ধারিত বছরে সরকারের সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের হিসাবকে বাজেট বলা হয়ে থাকে। বাজেট হওয়া উচিৎ ব্যবসা বান্ধব ও জনকল্যাণমুখী।

এতে ব্যবসায়ী ও গণমানুষের দাবি যদি উপেক্ষিত হয় তবে তা দেশের অর্থনীতির জন্য শুভ পরিণতি হয়ে আনতে পারবে না। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর আগাম করের আঘাত যদি ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা সইতে না পারে তবে সরকার তথা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।