ঋণের কিস্তি শোধের চাপে দিশেহারা নিম্ন-আয়ের মানুষ

0
710

    অভাব অনটন, বন্যা, প্রাকৃতিক দুযেআগ, কৃষির অনগ্রসরতা এসব নানা কারণেই দরিদ্রতার ঘেরাটোপে প্রায়শই গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ক্ষুদ্রঋণের আশ্রয় নিতে হয়। নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিম্নআয়ের মানুষের এমনিতেই চুলো জ্বলছে না।

এর ওপর বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সমিতি থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি শোধের চাপে দিশেহারা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। ইতোমধ্যেই এনজিও ঋণের টাকা পরিশোধে অনেকে শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করে নিঃস্ব হচ্ছেন।

এনজিও কর্মী অথবা সমিতির লোকজন বাড়িতে গিয়ে কিস্তি শোধের চাপ দিয়ে টাকা আদায় করতে না পেরে পুলিশী হয়রানীও করছেন। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা সময় মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় এনজিও’র পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের হয়রানি ও ভয়ে গ্রাহকদের কেউ কেউ বাড়ি ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

পুলিশের হয়রানিতে দিশেহারা কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের সতিঝিরগ্রামের রাবিয়া বেগম বলেন, অভাবে পড়ে ব্র্যাকের সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা দিতে না পারায় পুলিশ ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে আটকে রাখে। পরে কিস্তির টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনি। ব্র্যাকের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে স্বামীরে একটি রিকশা কিনে দিলেও অভাব আর দুর্যোগের কারণে কিস্তির টাকা বকেয়া পড়ে। পরে ম্যানেজার থানায় অভিযোগ দেয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্র্যাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, টিএমএস, ব্যুরো বাংলাদেশ, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস বাংলাদেশ, মুসলিম এইডসহ প্রায় ২২টি এনজিও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন নামে ১৫টি সংস্থা ঋণদান করছে।

ব্র্যাক শমশেরনগর শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বলেন, ‘কিস্তি আদায় করতে না পেরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কমলগঞ্জ থানার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহ আলম বলেন, ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ১০ জন গ্রাহকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ রয়েছে।’

কমলগঞ্জ ইউএনও আশেকুল হক বলেন, ‘ক্ষুদ্র ঋণের জন্য কারো পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া ঠিক নয়। এ ধরণের অভিযোগের বিষয়ে জানতে থানার ওসির সঙ্গে কথা বলবো।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − one =