গৃহকর্মী লিমাকে আটকে রেখে তার ওপর নির্মম নির্যাতন

0
507

রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের কচুক্ষেতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গৃহকর্মী লিমাকে (১৫) চার মাস আটকে রেখে তার ওপর নির্মম নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন দর্শারপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে নির্যাতনের শিকার লিমা জানায়, আজ থেকে প্রায় চার মাস পূর্বে তাকে প্রতিবেশী আছিয়া কাজের কথা বলে বাবা-মাকে না জানিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়।

পরে ক্যান্টনমেন্ট কচুক্ষেত এলাকার চৈতালী ১/ডি ব্লকের বাসায় দিয়ে আসে। কিছুদিন কাজ করার পর থেকে বাসার গৃহকত্রী মীম ওরফে মাহা নানা অজুহাতে আমার ওপর নির্যাতন শুরু করে।

লিমা বলে, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমি আন্টিকে বলি আন্টি আমার বেতন দিয়া দেন আমি বারিত যামুগা। এমন কথায় সে আয়রন গরম করে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছেঁকা দেয়।

তালা দিয়ে আঘাত করে আমার দাঁত ফালাইয়া দেয়, খুন্তি গরম কইরা আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গাসহ লজ্জাস্থানে ছেঁকা দেয়। প্লাস দিয়ে পায়ের নখ তুলে ফেলে। ঈদের দিনেও আমাকে পেট ভইরা ভাত খাইতে দেয়নাই। আমার মাথা ফাটাইয়া চুল কাইট্টা দেয়।

উনি মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে গেলে তার ছেলে ওয়াদা ও অপর এক কাজের মেয়ে পিংকীকে আমাকে মারার জন্য বলতো। তারা আমাকে অনেক মারছে। ব্যথার যন্ত্রণায় আমি বারবার কইতাম আন্টি আমারে কয়ডা বড়ি (ট্যাবলেট) আইন্না দেন আমি আর সহ্য করতে পারতাছি না।

আমারে কোনো দিনও এক টাকার বড়িও আইন্না দেয় নাই। লিমা আরও বলে, মঙ্গলবার আমি অনেক কৌশলে বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে তারাই আমাকে ময়মনসিংহের বাসে তুলে দেয়। বাসের ড্রাইভার আমাকে আমার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

এ ব্যাপারে গৃহকত্রী মীমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তার খালাতো ভাই কাজল জানায়, লিমাকে কেউ মারধর করেনি। ওকে বাড়িতে আসতে না দেয়ায় রাগে নিজের গায়ে নিজেই আঘাত করেছে।এ ঘটনায় হালুয়াঘাটের ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস হাসপাতালে গিয়ে লিমার খোঁজখবর নিয়েছেন।

হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুশফিকা জানান, মেয়েটির গায়ে প্রচুর পরিমাণে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 − six =