হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়াবে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0
851

অবি ডেস্ক: মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা দূর করতে ব্যর্থ হলে জেলা ও বিভাগীয় নেতৃত্বের ওপর তার দায় বর্তাবে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে প্রতিদিনের নজরদারি আরও কঠোর করা হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময় মতো হাজির হচ্ছেন কিনা, যন্ত্রপাতিগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, ওষুধের অপ্রতুলতা আছে কিনা, পরিচ্ছন্নতা অভিযান সার্বক্ষণিক চলছে কিনা তা তদারকির জন্য মনিটরিং নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ সম্প্রতি সচিবালয়ে দেশের সব বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, ৬৪ জেলার সিভিল সার্জন এবং বিভিন্ন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘জেলা ও বিভাগীয় নেতৃত্বে যে কর্মকর্তাই থাকবেন তার দায়িত্ব হচ্ছে অধীনস্ত প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর তত্ত্বাবধান করা। এই দায়িত্বে কোনও গাফিলতি বা শৈথিল্য মেনে নেওয়া হবে না। যেকোনও সমস্যার দ্রুত নিরসনের লক্ষ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি তাতে কেউ ব্যর্থ হন তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার বাধ্য।’ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্মত সেবা পৌঁছে দিতে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সবাইকে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী। মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যখাতের প্রতি গণমানুষের আস্থা আরও বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক, জেলার সিভিল সার্জন ও জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়করা উপস্থিত ছিলেন।


রোগী ও স্বজনের মানসিক অবস্থাকে মানবিকতার সাথে অনুভব করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনের মানসিক অবস্থাকে মানবিকতার সাথে অনুভব করার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। সম্প্রতি সচিবালয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)’র প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে অধিকতর রোগীবান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে চিকিৎসক, নার্স এবং সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মাঝে ইতিবাচক ও সেবামূলক মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। দেশের গ্রামে গঞ্জে খেটে খাওয়া কোটি কোটি মানুষের অতি সাধারণ প্রত্যাশা, তারা যেন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের আন্তরিক ছোঁয়া পায়।’ তাদের আকাংখা যেন চিকিৎসকদের সেবায় প্রতিফলিত হয় সেদিকে সচেতন থাকতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের আবাসন সংকটের উদ্যোগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নেওয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য দুইটি করে ডরমেটরি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বিভাগীয় পর্যায়ে ক্যান্সার ও কিডনী হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, মাঠ পর্যায়ে চিকিৎসক স্বল্পতা দুর করতে খুব শীঘ্রই আরো ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। নতুন এই চিকিৎসকদেরকে গ্রামে পদায়ন করা হলে হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট অনেক কমে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।গত পাঁচ বছর চিকিৎসা শিক্ষার মান বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন পর নতুন ৭৫০টি আসন বাড়ানো হয়েছে। আগামীতে উচ্চতর শিক্ষার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলেও তিনি জানান।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকেও এখন থেকে নিয়মিত কঠোর নজরদারির আওতায় আনা হবে। এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)’র নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্বকালে বলেন, হাসপাতালে অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান এবং মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজের নেতৃত্বে কার্যকরী কমিটির ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 4 =