একজন ইউএনওর কাছে সাংবাদিক তথ্য চাইতে পারে

0
612

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ের তথ্য চাওয়ায় ক্ষেপে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক সোহেল রানার সাথে অশালীন ব্যবহারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এ ঘটনায় বুধবার (১০ জুলাই) রাতে সাংবাদিক সোহেল রানা ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ সময় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথোপকথনের একটি ভয়েস রেকর্ডও দিয়েছেন সাংবাদিক সোহেল রানা।

সাংবাদিক সোহেল রানা ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। এছাড়াও তিনি স্থানীয় দৈনিক লোকায়ন পত্রিকা ও জাতীয় দৈনিক দেশকাল পত্রিকায় কর্মরত রয়েছেন।

সাংবাদিক সোহেল রানা বলেন, বুধবার বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ্ আল মামুনের কাছে ধান ক্রয় সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য ফোন দিয়েছিলাম। এসময় তিনি আমাকে আংশিক তথ্য প্রদান করেন। আমি তার কথা বুঝে উঠতে না পারায় এ বিষয়ে আমি আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য ইউএনওকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমার উপর ক্ষেপে যান এবং আমাকে এ বিষয়ে বেশি বারাবারি করলে মামলার হুমকি প্রদান করেন।

সোহেল রানা বলেন, কিছুদিন আগে একজন কৃষক অভিযোগ করেছিলেন। ওই কৃষক ইউএনও’র অফিসে গিয়েছিলেন তখন ইউএনও ওই কৃষকের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এ বিষয়ে ইউএনওর কাছে জানতে চাইলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং আমার সাথে অশালীন আচরণ করেন। আমি কেন উনার কাছে তথ্য জানতে চেয়েছি এজন্য তিনি আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি প্রদান করেন।

এছাড়াও ইউএনও সাংবাদিক সোহেল রানাকে হলুদ সাংবাদিক হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন এবং এছাড়া উনার কাছে টাকা খাওয়ার জন্য ফোন দিয়েছি বলে কথা বলেন ইউএনও।

সাংবাদিকের সাথে ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুনের এ ধরণের অশালীন আচরণ ও আইনগত ব্যবস্থার হুমকির ঘটনায় উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সাংবাদিক মহল।

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান মিঠু বলেন, একজন ইউএনওর কাছে সাংবাদিক তথ্য চাইতে পারে। তাই বলে তিনি সাংবাদিকের সাথে খারাপ আচরণ করবেন- এটা ইউএনও কাছে কাম্য নয়।

ঠাকুরগাঁও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিয়াউর রহমান বকুল বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনে একজন ব্যক্তি তথ্য চাওয়ার ক্ষমতা রাখে। সে আইন অনুযায়ী সাংবাদিক সোহেল রানা ইউএনও’র কাছে তথ্য চেয়েছে। তাই বলে ইউএনও সাংবাদিক সোহেলকে হলুদ সাংবাদকি হিসেবে অখ্যায়িত করবেন এটা কেমন কথা। ইউএনও কাছে এমন আচরণ ঠিক নয়।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ধান ক্রয় সম্পর্কে সাংবাদিক সোহেল রানা আমার কাছে তথ্য জানতে পারে এতে আমার কোনও আপত্তি নেই। কথার এক পর্যায়ে একজন ব্যক্তিকে নিয়ে সাংবাদিক সোহেল রানা আমাকে অভিযুক্ত করেন তখন তার সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়।

সোহেল রানা হলুদ সাংবাদিক ও টাকা খাওয়ার জন্য ফোন দিয়েছে এ কথা প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, আপনি যখন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে অভিযুক্ত করবেন তখন আপনি হলুদ সাংবাদিক হিসেবে আখ্যায়িত হবেন। আমি সাংবাদিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

ইউএনও এমন আচরণের ঘটনায় জেলার সাংবাদিকরা বিষয়টি দ্রুত সুরহা চান, অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে হুশিয়ারি দেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen + 1 =