এসিড নিক্ষেপ মামলার আসামী কুখ্যাত ডাকাত বশির বাহিনীর যত অপকর্ম

0
563

স্টাফ রিপোর্টার: বরিশালের বাকেরগঞ্জে পুলিশের নাকের ডগায় বসে কুখ্যাত ডাকাত বশির বাহিনী নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার নির্যাতনের এলাকার শত শত পরিবার সহ তার প্রথম স্ত্রী। এসিড নিক্ষেপ, খুন, ধর্ষন, ডাকাতি, চাদাবাজি, জমিদখল ও লুটতরাজ নিয়মিত পেশায় পরিনত হয়েছে বশির খাঁ বাহিনীর। একাধিক মামলার আসামী হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বুক ফুলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে নানা অপকর্ম। বশির খাঁ অত্যাচারে প্রান ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অনেক পরিবারে পুরুষ লোক। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
জানা গেছে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভান্ডারীকাঠি গ্রামের মৃত জয়নাল খাঁর পুত্র বশির খাঁ নানা অপকর্মের মহাগুরু।

র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত বরিশালের শীর্ষ সন্ত্রাসী নান্টু তার মামা। তার বাহিনীতে ২৫ থেকে ৩০ সক্রিয় সদস্য রয়েছে। যারা প্রকাশ্য দিবালোকে বা রাতে আধারে ঝাপিয়ে পড়ে নিরহী জনগনের উপরে। লুট করে নেয় দামী জিনিসপত্র সহ মূল্যবান সম্পদ। তাদের প্রকাশ্যে চাদাবাজি থেকে রেহাই পাচ্ছে না কেউ। ভুক্তভোগিরা থানা পুলিশের নিকট অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায় না। এতে করে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে আরো বেশী আতংক। অটো চালক কবির জানান, সে বাকেরগঞ্জের ডিসি রুটের একজন অটো চালক। বশির খাঁ ও তার সহযোগি নাছির খাঁ কবিরের কাছে প্রতিদিন ২শ টাকা করে চাঁদা দাবী করে। কিন্তু কবির চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বশির খাঁ কবিরের অটো গাড়িটি কয়েক দফায় আটক ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি স্থাণীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারগণ জেনেও প্রান ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি।


৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বশির খাঁ একটি দাঙ্গা বাহিনী গড়ে তোলে। কারনে অকারনে নির্যাতন তাদের নিয়মিত পেশায় পরিনত হয়। মানুষের জানমাল লুটে নেয়াই একমাত্র কাজ। এলাকায় এই আধিপত্য বিস্তার করার বশির খাঁ দিনে দুপুরে সাবেক সাত্তার মেম্বারের বাম পাঁ কেটে নিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়।
৯৮ সালে পাশর্^বতী কলকাঠি ইউনিয়নের দুধাল গ্রামের আরশেদ খাঁর বাড়িতে বশির বাহিণী দুর্ধর্ষ ডাকাতি করে। এঘটনায় আরশেদ খাঁ বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ একটি ডাকাতি মামলা করে। যেখানে বশির খাঁকে ১নং আসামী করা হয়।
ঢাকা কেরানীগঞ্জের কমতলী এলাকার মাদক সম্রাট কামাল হোসেনের একই এলাকার আ: বারেক ঘরামীর জমি দখল করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু বারেকের জমি দখল করার জন্য কামাল তার সহযোগি বশির খাঁকে সঙ্গী করে বারেক ঘরামীকে হত্যার উর্দেশ্যে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে বারেক প্রানে বেচে গেলেও তার বাম চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এই মামলায় বশির খাঁ ৫নং আসামী।


বাকেরগঞ্জ থানায় ৩/৯/২০১৮ তারিখের ১৩২৬ নং জিডি সুত্রে জানা গেছে, বশির খাঁ ভান্ডারীকাঠী গ্রামের জনৈক হানিফ মিয়ার জমি জোড়পূর্বক দখল করে নেয়। হানিফ মিয়া বাধা দিলে বশির বাহিনী তাকে মারধর করে এবং প্রকাশ্য জনসম্মূখে তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে। হানিফ পুলিশে কাছে অভিযোগ করেও কোন সহযোগিতা পায়নি। বরং বশির খাঁ প্রকাশ্যেই এলাকায় দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। বশির খাঁর স্ত্রী আছমা আক্তার হাসি জানায়, জোড়পূর্বক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২০০৪ বশির খাঁ তাকে বিয়ে করে। প্রানের ভয়ে আছমা বশির খাঁ ঘরসংসার করে। কিন্তু বশির খাঁর হাতের শাররিক নির্যাতনের হাত থেকে কখনোই রেহাই পায় না। শত নির্যাতনের মাঝে তার কোলজুড়ে জন্ম নেয় ২ মেয়ে ও ১ ছেলে।

কিন্তু বশির খাঁ সম্প্রতি আছমা আক্তারের কাছে মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবী করে পাশবিক নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। কোন ভরনপোষন দিচ্ছে না। অথচ অন্য নারীদের নিয়ে দিব্যি আরাম আয়েশ করছে।
বশির খাঁর মামা নান্টু ও তার দুই সহযোগি রফিক ও জালাল র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। মামা নান্টুর ওয়ারিশ সুত্রে বশির খাঁ এখন ঐ সাম্রাজ্যের মহারাজা। তার কমান্ডে চলে নান্টুর বাহিনী। মানুষের অর্থ সম্পদ লুটে নিয়ে বশির খাঁ এখন শত কোটি টাকার মালিক। আর তারই একাংশ ব্যয় করছে অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের পেছনে। ফলে বশির খাঁ থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে।

বাকেরগঞ্জ থানায় বশিরের নামে মামলা ও জিডি মিলে প্রায় ডজন খানেক। বশিরের কোনো অপকর্মেরই যেন কোন বিচার নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। এতে জনমনে আতংকের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কেউ বশির খাঁর অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বশিরের নির্যাতনের শিকার আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, বশিরের যেন খুব দ্রুত মৃত্যু হয়, তা নাহলে আল্লাহ যেন ওরে পুরোপুরি ভালো মানুষ বানিয়ে দেয়। ওর অত্যাচার আর সহ্য হয়। কিছু হলেই রাম-দা নিয়া কোপাতে আসে। চলবে…

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

fifteen − fourteen =