মীরসরাই থানার ওসির ছত্রছাঁয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের ভিটেবাড়ী দখল

0
670

চট্টগ্রাম ব্যুারো: চারিদিকে যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘর জমি জমা দখল ও বিভিন্ন প্রকার নির্যাতনের বিষয়ে নিয়ে দেশ বিদেশে আলোচনার ঝড় উঠেছে ঠিক তখনি চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের একটি সংখ্যালঘু পরিবারের আয়োজনে আয়োজিত চট্টগ্রামে প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় থানার ওসির বিরুদ্ধে ভিটেবাড়ী দখল করার মতো অভিযোগ এসেছে। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামে মীরসরাই উপজেলার হিন্দু পরিবারের দুলাল কান্তি দাশ, পিতা: বরদা কুমার দাশ, সাকিন: বরদার বাড়ী, মধ্যম তালবাড়ীয়া, পোঃ পূর্ব মঘাদিয়া, থানা: মীরসরাই, জেলা: চট্টগ্রাম সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন; আমি আমার বাপ দাদার পৈত্রিক ভিটায় ওয়ারিশ সূত্রে দীর্ঘদিন যাবৎ পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের প্রচলিত আইন কানুন মেনে বসবাস করে আসছি।

প্রতিপক্ষ বিবাদীগং মীরসরাই থানার ওসি জাহিদুল কবিরের ছত্রছাঁয়ায় সুমন দাশ, পিং: কৃষ্ণ দাশ ও কৃষ্ণ দাশ, পিং: ব্রজ বাঁশি বৈষ্ণব, উভয় সাকিন: সাকিন: মধ্যম তালবাড়ীয়া, পোঃ পূর্ব মঘাদিয়া, থানা: মীরসরাই, জেলা: চট্টগ্রাম। তিনি ও তৎ ব্যক্তিগণ পক্ষান্তরে হিংসুটে, বেপরোয়া, উশৃঙ্খলা পরধনলোভী দেশের প্রচলিত আইন অমান্যকারী ব্যক্তি হন। নিম্ন তপশীলোক্ত আর.এস ৩৫৮২ ভিটা দাগে ৭ শতকে ও আর.এস ৩৫৮৪ বাড়ীর দাগে ০৬।। (আট) আনা বা অর্ধেকাংশের মালিক দখলকার ছিলেন ফকির চাঁদ, পিতা: কুল চন্দ্র ধুপী তাহার আর.এস ২৫৯ নং খতিয়ান চুড়ান্ত প্রচার আছে। উক্ত দাগের বাকী অর্ধেক সম্পত্তিতে মালিক দখলকার ছিলেন ফকির চাঁদের ভ্রাতুস্পুত্র তথা ক্ষেত্র মোহন দাশ, পিতা: শরৎ চন্দ্র। উপরোক্ত ফকির চাঁদের মৃত্যুতে একমাত্র পুত্র বরদা কুমার দাশ ওয়ারিশ বিদ্যমান হয়। ফলে নি¤েœাক্ত সম্পত্তির তফশীলোক্ত আর.এস ৩৫৮২ ও ৩৫৮৪ দাগের সম্পত্তিতে বরদা কুমার দাশ ও ক্ষেত্র মোহন দাশ তুলনাংশে স্বত্ব স্বার্থ দখল অর্জন করেন। তাহারা উভয়ের নামে তফশীলোক্ত পি.এস ২৬৫নং খতিয়ান প্রচার আছে। ক্ষেত্র মোহন দাশ এর দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা ছিল, উক্ত কন্যা নিঃসন্তান অবস্থায় পিতা ক্ষেত্র মোহন দাশের জীবদ্দশায় মারা যায়। ইহা ছাড়া ক্ষেত্র মোহন দাশের স্ত্রী ১৯৭১ ইং সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতে চলে গেলে তিনি আর ফিরে আসেনি। ক্ষেত্র মোহন দাশ উপরোল্লিখিত মতে আর.এস ৩৫৮২ নং দাগের তিন ভাগের এক অংশ আর.এস ৩৫৮৪ নং দাগের ৬ শতকের আন্দর ৩ শতক স্বত্ব দখলে থাকিয়া আর.এস ৩৫৮৪ নং দাগের আন্দর উক্ত ৩ শতক সম্পত্তি বিগত ১০/০৩/১৯৮৫ ইং তারিখে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত ১৩১১নং কবলামূলে উপরোক্ত বরদা কুমার দাশের বরাবরে বিক্রি করেন এবং দখল অর্জন করেন।

এ সময় উল্লেখিত সন্ত্রাসী বিবাদীগং সুমন দাশ, পিতা: কৃষ্ণ দাশ, (২) কৃষ্ণ দাশ, পিতা: মৃত ব্রশ বাঁশী বৈষ্ণব তাদের কোন জায়গা সম্পদ না থাকায় আমাদের বাড়ীতে এসে বিগত ১৫-১৮ বৎসর পূর্বে কান্নাকাটি শুরু করিলে তাদের প্রতি সদয় হয়ে মানবিক কারণে আমাদের ভিটা বাড়ীতে একটি অংশে ঘর নির্মাণ করে বসবাসের জন্য অনুমতি প্রদান করা হলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত আমাদের বসত বাড়ীতে বসবাস করে প্রায় সময় আমার ও আমাদের পরিবারের সাথে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সময় অযথা ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকে। যার কারণে উক্ত সুমন দাশ, পিতা: কৃষ্ণ দাশ, (২) কৃষ্ণ দাশ, পিতা: মৃত ব্রশ বাঁশী বৈষ্ণব-কে আমাদের নামীয় রেজিষ্ট্রিকৃত ও দখলকৃত সম্পত্তি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলিলে তাহারা উল্টো আমাদের হয়রানির উদ্দেশ্যে স্থানীয় মীরসরাই থানার কিছু অসাধু পুুলিশ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওসির ছত্রছাঁয়ায় অবৈধ যোগসাজশের মাধ্যমে আমাদের ভিটা বাড়ী দখলের পাঁয়তারা চালায়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দুলাল কান্তি দাশের কন্যা কনা দাশ। তিনি এ সময় বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ব থেকে আমাদের পূর্ব পুরুষগণ উক্ত বসত ভিটায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। পার্শ্ববর্তী একই এলাকারসুমন দাশ, পিং: কৃষ্ণ দাশ ও কৃষ্ণ দাশ, পিং: ব্রজ বাঁশি বৈষ্ণব, উভয় সাকিন: সাকিন: মধ্যম তালবাড়ীয়া, পোঃ পূর্ব মঘাদিয়া, থানা: মীরসরাই, জেলা: চট্টগ্রাম।

তাদের নিজস্ব বসতবাড়ী না থাকায় আমাদের পরিবারের কাছে স্মরণাপন্ন হলে আমার মা বাবা মানবতার দিকে তাকিয়ে তাদেরকে অস্থায়ী ভাবে ঘর বেঁধে থাকার অনুমতি প্রদান করিলে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উক্ত কৃষ্ণ দাশ স্থানীয় মীরসরাই থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবিরের ছত্রছাঁয়ায় আমাদের বসত ভিটা দখল করে তাতে দালান ঘর নির্মাণ করে। এ সময় তাদের বাঁধা দিলেও পুলিশ প্রশাসনের ঘুষ বাণিজ- স্বজনপ্রীতির কারণে ও মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের বসত ভিটায় তারা ঘর নির্মাণ করে। আমরা বার বার আইনের আশ্রয় নিয়েও প্রশাসনের কাছে ব্যর্থ হয়েছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে ওসির স্মরণাপন্ন হলে তিনি আমার বাবা, ভাই, মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কৃষ্ণ পদ দাশের পরিবারের সাথে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে আমাদের বসত ভিটা দখল করার সুযোগ করে দেয় তাদের। এমনকি গত ১৪ জুলাই উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীটি জোর পূর্বক আমাকে বসত ভিটায় হামলা চালিয়ে ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালালে আমরা স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করলে এতে থানার ওসি জাহিদুল কবির ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এমনকি এক সাংবাদিককে থানায় ডেকে নিয়ে ছবি তোলার কারণ দর্শাতে বলে তাকেও ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নাজেহাল করে। এ সময় উক্ত অসহায় পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন; “আমাদের বসত ভিটা ফিরে পেতে জাতির জনকের স্বপ্নের রূপদানকারী, মমতাময়ী মা বাংলাদেশর সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে চাই “মাগো আমরা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরা এ দেশে কি বাপ দাদার ভিটায় কি বসবাস করতে পারবো না? এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণায়, ডিআইজি, সিএমপি পুলিশ, র‌্যাব এবং আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থার নিকট আমাদের ন্যায্য ভিটা বাড়ী পাওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি”। উক্ত সংবাদ আরো উপস্থিত ছিলেন দুলাল কান্তি দাশের স্ত্রী বাসন্তি দাশ, ও তিন ছেলে ও মেয়ের জামাই রূপন দাশ, বিশ্বজিৎ দাশ, পুনম দাশ, ও রাজিব দাশ প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 − two =