ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনা একমাত্র নারী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত

0
574

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৮ সালের ক্ষমতাধর শত নারীর তালিকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ২৬তম স্থান অর্জন করেছেন। আর হিলারি ক্লিনটন, যিনি বিশ্ব ব্যাংককে আমাদের পেছনে লাগিয়েছিলেন, আমরা দুর্নীতি করেছি সে হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য, আমাদের গায়ে দুর্নীতির কালিমা লেপন করার জন্য। সেই হিলারি ক্লিনটন আগে তিনের মধ্যে ছিলেন, এখন পিছিয়ে তিনি ১০০-র কাছাকাছি চলে গেছেন।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) প্রভাব এতটাই সুবিস্তৃত ২০১৬ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ফরচ্যুন ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে তিনি বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের তালিকায় দশম স্থানে রয়েছেন। ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেই তিনি একমাত্র নারী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন।

তিনি বলেন, শুধু মেধা দক্ষতায় নয়, সততাতেও আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত, পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে বলছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয়। জাতীয় গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাতারে আমাদের নেত্রী স্ববিশেষভাবে উজ্জ্বল।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব গুণে বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রধান ম্যাগনামারার বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ম্যাগনামারা আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হয়েছিলেন এবং বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি বলেছিলেন- বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু টিকে থাকতে পারবে না। যদিও পারে সেটা সাহায্যের ওপর টিকে থাকতে হবে। ম্যাগনামারার এই বক্তব্য ভুল প্রমাণ করেছেন- আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আর এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী অন্যন্য উচ্চতায় উঠেছেন।

আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে মন্তব্য করে কৃষিবিদ ড. রাজ্জাক বলেন, ২০০১-০৫, বিএনপির পাঁচ বছরে তেমন কোনো প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি কৃষিতে। আজকে বাংলাদেশে আমরা শুরু করেছিলাম ২ কোটি ৯০ লাখ বা ৩ কোটি খাদ্য শস্য উৎপাদন ছিল। গত ১০ বছরে দুই মেয়াদে খাদ্য উৎপাদন বিশেষ করে চাল, গম এবং ভুট্টা তিনটি মিলে আমাদের উৎপাদন হলো ৪ কোটি ১৩ লাখ টন।

তিনি বলেন, আজকে চাল উৎপাদনে আমরা পৃথিবীর চতুর্থ। আমরা আজকে সবজি উৎপাদনে তৃতীয়। মৎস্য উৎপাদনে পৃথিবীতে আমরা তৃতীয় স্থান অর্জন করেছি। আমাদের আলুর প্রয়োজন ৭০ লাখ টন, এই বছর আলুর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ টন। ৩৩ লাখ টন আলু আমাদের উদ্বৃত্ত।

আমের উৎপাদন প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশে উন্নত জাতের আম পাওয়া কঠিন ছিল, অনেক বেশি দাম ছিল। আমাদের সুস্বাধু আম কোনো ক্রমেই আপেলের চেয়ে কম নয়। বরং স্বাদের দিক থেকে অনেকের কাছে অনেক বেশি।

‘আম গতবছর এত বেশি উৎপাদন হয়েছে যে যারা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমের বাগান করেছে, কৃষকের কাছে শুনেছি- তার আম উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৭ টাকা ১ কেজি আম। সেটি সে বিক্রি করেছে ২০ টাকায়। অর্থাৎ আমেও আমরা উদ্বৃত্ত। এ বছরও উদ্বৃত্ত হবে। আলু এটাতে আমরা সপ্তম স্থান, আমেও আমরা সপ্তম স্থান অধিকার করেছি।

গত ১০ বছরে উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রামে প্রায় রাস্তাই এখন ফাঁকা, প্রতি গ্রামে বিদ্যুৎ আছে। বিএনপি বলছে, নির্বাচন অবৈধ, কারচুপি হয়েছে। কিন্তু আমরা নির্বাচনে বিএনপির কোনো প্রার্থী প্রচারে নামতে দেখিনি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। তারা যদি নির্বাচনী প্রচারে আসতো তাহলে তারা দেখতে পেতো কিভাবে আমাদের পক্ষে গণজোয়ারের প্লাবণ সৃষ্টি হয়েছে।

‘আর এটা হয়েছিল কেবল শেখ হাসিনার অভূতপূর্ব উন্নয়নের কারণে। শেখ হাসিনা শুধু উন্নয়নই করেননি, বেশ কিছু ক্ষেত্রে সাহসী পদক্ষেপও নিয়েছেন। যেমন হেফাজত, জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস-মাদকের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা তিনি রেখেছিলেন, যার জন্য পৃথিবীজুড়ে তিনি প্রশংসিত,’ বলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × four =