তথ্যগোপন করে ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজকে শতকোটি টাকা ঋণ দিতে যাচ্ছে সোনালী ব্যাংক

0
630

স্টাফ রিপোর্টার:

সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেংকারীর দাগ এখনো মানুষের মন থেকে দুর হয়নি। অথচ সেই হলমার্ককেই অনুসরন করে ঋণ গৃহীতা ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজের প্রকৃত গোপন রেখে পুনরায় অন্তত শতকোটি টাকার ঋণ দেয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম আব্দুস সালাম। এই নিয়ে খোদ সোনালী ব্যাংকেরই অপরাপর কর্মকর্তাদের চরম ক্ষোভ লক্ষ করা যাচ্ছে।

জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শিল্প ঋণ কর্মসূচির আওতায় হাটাব, মাসুমাবাদ রূপগঞ্জ নারায়নগঞ্জে ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজের একটি প্রকল্পে ১৮ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে ২০১৫ সালে। উল্লেখিত ঠিকানায় ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করলেও সেখানে তাদের কোন কার্যক্রম ছিলো না। শুধু তাই নয় ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজের প্রধান কার্যালয় রাজধাণীর লালবাগের ৫০ সুবোল দাস রোডে দেখানো হলেও সেখানেও তাদের কোন প্রতিষ্ঠান ছিলো না । আবার যেই প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ পাশ করানো হয়েছিলো সেই প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব এখন আছে কাগজেকলমে। তারপরে তাদেরকে তৎকালীন সোনালী ব্যাংকের শিল্প প্রকল্প অর্থায়নের ডির্পামেন্টের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আবুল কালাম মো: ইছহাক ১৮ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে। তবে ঐ ঋনের বিপরীতে জামানত হিসেবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীলিপ কুমার দাস ঢাকা খিলগাও থানাধীন গজারিয়া মৌজাস্থ ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা মুল্য নির্ধারন করে ৫৩ শতাংশ জমির দলিল বন্ধক রাখে। যা ১৮ কোটি টাকা ঋণের সাথে সামঞ্জস্য নহে। অথচ ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজের এমডি দীলিপ কুমার দাস উক্ত ঋনের টাকা পরিশোধ না করেই সোনালী ব্যাংকের শিল্প প্রকল্প অর্থায়নের ডির্পামেন্টের বর্তমান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুস সালামের নিকট অর্ধশত কোটি টাকা ঋণ প্রাপ্তির আবেদন করেছে। আর মোটা অংকের কমিশনের চুক্তিতে দীলিপ কুমার দাসকে ঋণ পেতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে সোনালী ব্যাংকের শিল্প প্রকল্প অর্থায়নের ডির্পামেন্টের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মো: নজরুল ইসলাম। তবে নজরুল ইসলাম বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখায় কর্মরত রয়েছে। তবে মোটা অংকের কমিশন দিলে হলমার্কের মতো যে কোন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানই সালাম সিন্ডিকেটের নিকট থেকে কোটি কোটি ঋণ বাগিয়ে নিতে পারে এমনটাই বলে বেড়ায় সোনালী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা।


এদিকে ফ্লাইরাবার এন্ড ফুটওয়ার ইন্ডাষ্ট্রিজকে একই জামানতের উপর ভিত্তি করে ২য় দফায় ৫০ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রেখেছে আব্দুস সালাম সিন্ডিকেট। কিন্তু জামানতের ঐ ৫৩ শতাংশ জমি নিয়ে সুবোল কুমার দাসের সাথে তার প্রতিপক্ষের দুইটি মামলার বিচার কার্যক্রম আদালতে চলমান রয়েছে। যার একটি যুগ্ন জেলা জজ আদালত-১, মামলা নং-১১৫/১০ এবং অপরটি যুগ্ন জেলা জজ আদালত-২,মামলা নং-৪০৯/১৬। তবে আদালতে মামলা থাকার পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিভাবে ঋণ প্রদান করে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে থাকবে বিস্তারিত প্রতিবেদন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four + 5 =