কারাগার কর্তৃপক্ষ কখনও বন্দিদের সঙ্গে কোনো খাবার দেননি

0
452

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের জন্য সরকারিভাবে খাবার বরাদ্দ রয়েছে। তিন বেলা করে এসব খাবার পান কারাবন্দিরা। প্রতিজন কারাবন্দির জন্য সকাল, দুপুর ও রাতের এ খাবার মেন্যুতে কী কী থাকবে তা নির্দিষ্ট করা রয়েছে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিতে আসা বন্দিদের জন্য দুপুরের খাবারের বরাদ্দ রয়েছে।

কারাগার কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, আদালতে হাজিরা দিতে আসা একজন বন্দির জন্য দুপুরের খাবার হিসেবে ৯০ গ্রাম চিড়া ও ৪৭ গ্রাম আখের গুড় বরাদ্দ রয়েছে। ৬০ টাকা দরে ৯০ গ্রাম চিড়ার জন্য প্রতিজন বন্দির জন্য বরাদ্দ ৫ টাকা ৪১ পয়সা এবং ৬৭ টাকা ২৯ পয়সা দরে ৪৭ গ্রাম আখের গুড়ের জন্য বরাদ্দ ৩ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ আদালতে হাজিরা দিতে আসা একজন বন্দির জন্য দুপুরের খাবারের জন্য সরকারি বরাদ্দ ৮ টাকা ৮১ পয়সা।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ বন্দি চট্টগ্রাম আদালতে আসেন মামলার হাজিরা দিতে। এসব আসামি সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান করেন আদালতের হাজতখানায়।

নিয়মানুযায়ী, সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনার সময় বন্দিদেরকে প্যাকেট করে চিড়া ও গুড় সঙ্গে দিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে।

কিন্তু আদালতে আসা বন্দিরা জানিয়েছেন, কখনই কারাগার কর্তৃপক্ষ তাদের আদালতে আনার সময় চিড়া ও গুড় দেয়নি। কারাবন্দিরা অনেকে এসব খাবারের কথা জানেনও না।

কিন্তু কারাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সকালে বন্দিদের আদালতে পাঠানোর সময় সঙ্গে চিড়া ও গুড় প্যাকেট করে দিয়ে দেন।

গত ১৮ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন তার কার্যালয়ে  বলেন, আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়া প্রত্যেক বন্দির জন্য দুপুরের খাবার হিসেবে ৯০ গ্রাম চিড়া ও ৪৭ গ্রাম আখের গুড় বরাদ্দ রয়েছে। সকালে তারা যাওয়ার সময় প্যাকেট করে সঙ্গে এসব খাবার দিয়ে দেওয়া হয়।

বন্দিদের দুপুরের খাবার সঙ্গে না দেওয়ার অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায় আদালতের মেট্রো ও জেলা হাজতখানা ঘুরে।

হাজতখানার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরাও জানিয়েছেন, কারাগার কর্তৃপক্ষ কখনও বন্দিদের সঙ্গে কোনো খাবার দেননি।

২২ জুলাই চট্টগ্রাম আদালতের হাজতখানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বন্দি  বলেন, আদালতে যাওয়ার সময় কারাগার কর্তৃপক্ষ সঙ্গে কোনো খাবার দেন না।

একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে গত ১১ মাস ধরে কারাগারে বন্দি আছেন সীতাকুণ্ডের এক বাসিন্দা। নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে আসেন তিনি। ওই বন্দি বলেন, গত ১১ মাসে হাজিরা দিতে আসার সময় কখনও খাবার সঙ্গে দেয়নি কারাগার কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন দাবি করেন, বন্দিরা আদালতে যাওয়ার সময় সঙ্গে খাবার নিতে চান না। তারা ফেলে চলে যান।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 2 =