নিজেরাই নিজেদের আশেপাশের ময়লা পরিস্কার করলে জলাবদ্ধতা ও অপরিচ্ছন্নতা থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা কমিটির উদ্যোগে ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর: তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিদেশে কেউ একটা কাগজের টুকরো রাস্তায় ফেলে না। ঢাকা শহরে এক কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন, আর সিটি করপোরেশনের ৫-৭ হাজার কর্মী শহর পরিষ্কার করবেন- এভাবে শহর পরিস্কার রাখা যাবে না। চট্টগ্রামে ৭০ লক্ষ মানুষ শহর যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন, আর সিটি করপোশনের ৩ হাজার কর্মী শহর পরিস্কার করবে- এটা সম্ভব না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজেরা নিজেদের শহর পরিস্কার রাখুন। কেউ যেন নালায়, নর্দমায়, রাস্তায় আবর্জনা না ফেলি। আমি নিজে যেখানে সেখানে কিছু ফেলি না। টিস্যু কোথাও ফেলতে না পারলে আমি পকেটে রাখি। আমার ছেলে-মেয়েকেও আমি এ বিষয়ে তাগিদ দিই। আমার চালকও যদি কখনো যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলে তাকে বকা দিই।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সবমিলিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিডিএকে দেয়া হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, চসিককে দেয়া হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দেয়া হয়েছে ১৬শ’ কোটি টাকা, আরো কিছু প্রকল্প আছে। তবে এখানে প্রচণ্ড সমন্বয়নহীনতা আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে।
‘সিটি করপোরেশন রাস্তা করে গেল, দেখা গেল দুই মাস পর ওয়াসা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন খুঁড়ে ফেলছে। বিদেশেও এভাবে খোঁড়াখুঁড়ি আছে। তবে সেখানে সমন্বয় করা হয়। রাস্তা খুঁড়লে সাথে সাথে ঠিক করে দেয়া হয়। কিন্তু এখানে সাথে সাথে মেরামত করে দেয়া হচ্ছে না। রাস্তা মেরামতের জন্য টাকা বরাদ্দ প্রকল্পেই থাকে, কিন্তু সেটা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্য মন্ত্রীপরিষদ সচিব আগামীকাল বুধবার সবাইকে নিয়ে বৈঠক করবেন। সেখানে সিটি মেয়র, সিডিএ চেয়ারম্যান, ওয়াসার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে সমন্বয়হীনতা নিয়ে অনেক আলোচনা হবে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকেই বৈঠকটির আয়োজন করা হয়েছে। কোন একটি শহররের উন্নয়ন প্রকল্পের সমন্বয় নিয়ে আগে কখনো মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে সভা আহ্বান করা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই, তবে চট্টগ্রাম নিয়ে এ ধরনের সভা আগে কখনো হয়নি। আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্য।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। কর্ণফুলীতে টানেল হচ্ছে। ভারতীয় উপমহাদেশে এটি প্রথম, আর কোথাও টানেল নেই। নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল পাকিস্তানে নেই, ভা রতেও নেই। ঢাকা-চট্টগ্রাম দ্রুতগতির ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। অর্থ্যাৎ চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সবকিছু করা হচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন শেষ হলে জলাবদ্ধতার দূর হবে।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা ছাত্রছাত্রী এবং তরুণ পেশাজীবীরা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে কীভাবে দেখতে চান, সে বিষয়ে নানা প্রশ্ন করেন। মঞ্চ থেকে প্যানেল বক্তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে নানা বিষয়ের প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান প্রমুখ।