মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎ’কারের পর মাথা কাটে শিক্ষার্থীরা

1
786

চুয়াডাঙ্গায় মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনকে বলাৎ-কার ও মাথাকেটে হ-ত্যা করা হয়েছিল এক শিক্ষকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে। মাদ্রাসার ৫ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর এ হ-ত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে এ তথ্য মিলেছে।

সোমবার রাতে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারো-ক্তিমূলক জবানব-ন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃতরা।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আনিসুজ্জামান (১৮), ছালিমির হোসেন (১৭) ও আবু হানিফ রাতুল (১৬) জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে ছাত্রদের দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষকদের ফাঁ-সাতে এ হ-ত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

গত ২৪ জুলাই চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার ২য় শ্রেণির ছাত্র আবির হুসাইনের মাথা বিহীন লা-শ উদ্ধার হয়। মাদ্রাসার অদূরের একটি আম বাগানের মধ্য থেকে তার লা-শ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার ২ দিন পর মাদ্রাসার অদূরের একটি পুকুর থেকে নিহত ছাত্রের মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ মাদ্রাসার ৫ শিক্ষককে আটক করে জিজ্ঞা-সাবাদ শুরু করে। পরে মাদ্রাসার সুপার আবু হানিফ ও শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফকে আলোচিত এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের গত ৩০ জুলাই রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞা-সাবাদ শুরু করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল খালেক জানান, রবিবার রাতে মাদ্রাসার ছাত্র সদর উপজেলার হানুড়বাড়াদী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে আনিসুজ্জামান, টেইপুর গ্রামের আব্দুল হাই কাতুর ছেলে ছালিমির হোসেন, আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আবু হানিফ রাতুল, মামুন হোসেনের ছেলে আব্দুর নুর ও বলদিয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে মুনায়েম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর তারা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আবির হুসাইনকে হ-ত্যার কথা স্বীকার করে।

পুলিশ সোমবার রাত ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৫ মাদ্রাসা ছাত্রকে চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোর্পদ করেন। এ সময় আনিসুজ্জামান, ছালিমির হোসেন ও আবু হানিফ রাতুল আদালতের বিচারক সাজেদুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারো-ক্তিমূলক জবানব-ন্দি প্রদান করেন।

জবানবন্দীতে তারা উল্লেখ করেন, দীর্ঘদন ধরে মাদ্রাসার শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফ ছাত্রদের ওপর নি-র্যাতন চালাতো। মারধ-রসহ ছাত্রদেরকে দিয়ে শরীর ম্যাসাজ করাতো, ঠিকমত খেতে দিতো না। এসব বিষয়ে আমরা (মাদ্রাসার ছাত্ররা) প্রতিবাদ করলে নি-র্যাতনের মাত্রা বাড়ানো হতো। বিষয়টি নিয়ে আমরা ৫ জন শিক্ষক তামিম বিন ইউসুফকে হ-ত্যার পরিকল্পনা করি। পরে সেই সিন্ধান্ত পরিবর্তন করে আমরা মাদ্রাসা ছাত্র আবির হুসাইনকে হ-ত্যার পরিকল্পনা করি। কারণ আবিরকে গ্রাম থেকে তামিম বিন ইউসুফ স্যারই মাদ্রাসাতে নিয়ে আসে।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে আমরা ৫ জন মিলে আবিরকে গল্প করতে করতে মাদ্রাসার পাশে আম বাগানে নিয়ে যাই। এরপর আনিসুজ্জামানসহ আমরা ৩ জন তাকে বলাৎ-কার করি। পরে তাকে শ্বা-সরোধ করে হ-ত্যা করি। এরপর গুজব ছড়াতে আবিরের মাথা শরীর থেকে কে-টে নেয় ছালিমির হোসেন। পরে মাথাটি পাশের পুকুরে ফেলে দেই। এরপর আমরা মাদ্রাসাতে ফিরে যাই।

এই ঘটনায় আদালতের বিচারক হ-ত্যার জবানব-ন্দি লিপিবদ্ধ শেষে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

six + 13 =