পাঁচ আসামি নিয়ে গেলেন আ’লীগ নেতা

0
489

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার সময় আট ব্যক্তিকে আটক করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)।

এ ঘটনার পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করে আটক পাঁচ আসামিকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নড়িয়া উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিকদারে বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশ তার ভাই সুমন সিকদাকরকে আটক করেছে।

নড়িয়া থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, নড়িয়ার পদ্মা নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিলেন উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিকদার। তিনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তারের স্বামী।

মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নড়িয়া উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার রাশেদুজ্জামান ওই খননযন্ত্রটি জব্দ করেন। সেখানে বালু উত্তোলনে জরিত আট ব্যক্তিকে আটক করেন তিনি। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় পৌঁছলে মোস্তাফা সিকদার ও তার ভাই সুমন সিকদারের নেতৃত্বে তার সমর্থরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওই দলকে অবরুদ্ধ করে পাঁচ আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা সিকদারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে তিনি পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশ তার ভাই সুমন সিকদারকে আটক করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ভাঙন ঠেকাতে নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ওই ঠিকাদারি কাজটি করছেন মোস্তফা সিকদার। তিনি ওই কাজে ব্যবহারের বালু অবৈধভাবে পদ্মা নদী থেকে উত্তোলন করছিলেন।

মোস্তফা সিকদারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী নড়িয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার স্বামী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তিনি নড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছেন। তখন সেখানে হৈচৈ দেখে এগিয়ে যান। ওই সময় এসিল্যান্ড তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে তিনি দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদুজ্জামান বলেন, নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন করার সময় একটি খনন যন্ত্র জব্দ করি। এ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটজনকে আটক করি। স্থানীয় এ আওয়ামী লীগ নেতা ওই খনন যন্ত্র ও আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেয়। সে বার বার পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের রেফারেন্স দিচ্ছিলেন আর আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছিলেন। পরবর্তীতে তাকে আটক করার নির্দেশ দিলে সে পালায়। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা করা হবে।

নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আর ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

12 − 10 =