আমাদের সবার মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে

0
409

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, শতকরা ৯৮ শতাংশ মানুষই যদি আইন না মানে তাহলে পুলিশ কেন, ফেরেশতা নেমে এলেও আইন প্রয়োগ সম্ভব নয়। তাই আমাদের সবার মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ডিএমপি কমিশনার হিসেবে আমি গত পৌনে পাঁচ বছরে বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বার বার বসেছি। বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করে আমরা সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজেছি। কিন্তু এর সঙ্গে বাস মালিক-শ্রমিক এবং পুলিশের বাইরেও সিটি করপোরেশন, ওয়াসাসহ অনেকগুলো সংস্থা জড়িত। সেসব সংস্থার সমন্বয়ের অভাবে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাইনি।

তিনি বলেন, বাস বেশি না থাকার কারণে গাড়িগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়েই যাত্রী উঠানামা করছে। এক্ষেত্রে হাজারো জরিমানা করে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ১৬৭টা বাসস্ট্যান্ড চিহ্নিত করেছে। ফুটপাত দিয়ে যেন মোটরসাইকেল চলাচল করতে না পারে সেজন্য মেটাল পিলার স্থাপন করেছে। অথচ এগুলো ডিএমপির কাজ না হওয়া সত্ত্বেও নিজ অর্থায়নে ডিএমপি করেছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে এখনও হাত উঁচিয়ে গাড়ি চলাচলে সিগনাল দেওয়া হয়। আমরা এখনও এই সিগনাল ব্যবস্থাটাকে ডিজিটাল করতে পারলাম না। বেশিরভাগ মানুষ অপরাধ করলে পুলিশের দ্বারা আইন প্রয়োগ অসম্ভব।

তিনি বলেন, চালকরা মোবাইলে কথা বলার সময় গাড়ি চালাবেন। পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ির সামনে লাফ দিয়ে রাস্তা পারাপার হবেন। শতকরা ৯৮ শতাংশ মানুষই যদি আইন না মানে তাহলে পুলিশ কেন, ফেরেশতা নেমে এলেও আইন প্রয়োগ সম্ভব নয়। তাই আমাদের সবার মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, বিভিন্ন অপরাধে গাড়ি চালকদের আমরা প্রচুর পরিমাণে জরিমানা করছি। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ যেন রাজস্ব আদায়ের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এটি ঠিক নয়। গাড়ির মালিক-শ্রমিকদের মনে রাখতে হবে এটা শুধু ব্যবসা নয়, সেবা। যত্রতত্র গাড়ি না থামানো, গাড়ির দরজা বন্ধ রাখা, বিনা কারণে হর্ন না বাজানো, শুধু আন্তরিক হলেই এসব মেনে চলা যায়। আমরা সহযোগিতা করবো। কিন্তু মূল উদ্যোগটা মালিক-শ্রমিকদেরই নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একটা দুর্ঘটনা হয় আর একটা আন্দোলন হয়। সড়ক নিরাপদ না করা গেলে জনগণের এই ক্ষোভ দমানো সম্ভব নয়। আর এই রোশানল থেকে কেউই রেহাই পাবে না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফুটেজ দেখে যদি পথচারীর গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে চালকের পাশাপাশি সেই দায় পথচারীকেও নিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty + 8 =