আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে নানা ঘটনা

0
766

আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে নানা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নবী-রাসুলদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আশুরার দিনে মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য উপাখ্যান ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়।

আশুরার দিন বা মুহাররমের ১০ তারিখ যেসব তাৎপর্যময় ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল, সংক্ষেপে সেগুলো তুলে ধরা হলো—

এক. এ দিনে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেন। আর এ দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।

দুই. এ দিনে আল্লাহ মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-কে প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি করেন। জান্নাত থেকে দুনিয়ায় প্রেরণ করেন। এ দিনে আল্লাহ পাক আদম (আ.)-এর দোয়া ও তওবা কবুল করেন। এ দিনে তিনি স্ত্রী হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে সাক্ষাৎ করেন।

তিন. আল্লাহর নবী নুহ (আ.)-এর জাতির লোকেরা আল্লাহর গজব মহাপ্লাবনে আক্রান্ত হওয়ার পর ১০ মুহাররম তিনি নৌকা থেকে ঈমানদারদের নিয়ে ‘জুদি’ নামক পাহাড়ে অবতরণ করেন।

চার.  আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হওয়ার ৪০ দিন পর ১০ ম‍ুহাররম সেখান থেকে মুক্তি লাভ করেন।

পাঁচ. আল্লাহর নবী আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর কঠিন রোগ ভোগ করার পর, মুহাররমের এ দিনে আল্লাহর রহমতে সুস্থতা লাভ করেন।

ছয়. আল্লাহর নবী ইয়াকুব (আ.)-এর পুত্র ইউসুফ (আ.) তার ১১ ভাইয়ের ষড়যন্ত্রে কূপে নিক্ষেপ হন। পরে এক বণিক দলের সহায়তায় মিসরে গিয়ে হাজির হন। তারপর আল্লাহর বিশেষ কুদরতে তিনি মিসরের প্রধানমন্ত্রী হন। ৪০ বছর পর ১০ মুহাররম পিতার সঙ্গে পুনরায় মিলিত হন।

সাত. আল্লাহর নবী ইউনুস (আ.) জাতির লোকদের প্রতি হতাশ হয়ে নদী অতিক্রম করে দেশান্তরিত হওয়ার সময় নদীর পানিতে পতিত হন এবং মাছ তাকে গিলে ফেলে। মাছের পেট থেকে তিনি আল্লাহর রহমতে ৪০ দিন পর মুক্তি পান ১০ মুহাররম তারিখে।

আট. এ দিনে আল্লাহ হজরত মুসা (আ.) ও তার অনুসারী বনি ইসরাইলদের ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্ত করে পানির মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিয়ে পার করে দেন। আর ফেরাউনকে তার দলবলসহ সাগরে ডুবিয়ে মারেন।

নয়. আল্লাহর নবী ঈসা (আ.)-কে ইহুদিরা হত্যার ষড়যন্ত্র করলে মুহাররমের ১০ তারিখ আল্লাহ তাকে আসমানে উঠিয়ে নেন।

দশ. মুহাররম মাসের ১০ তারিখ কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা সংঘটিত হয়। এদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হজরত হোসাইন (রা.) কারবালা প্রান্তরে শাহাদাতবরণ করেন।

এগারো. ঘটনাক্রমে সুলায়মান (আ.) সাময়িকভাবে রাজত্ব হারান। আল্লাহ তাআলা তাকে আবারও রাজত্ব ফিরিয়ে দেন আশুরার দিনে।

বারো. এ দিনে আল্লাহর নবী ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয় এবং আল্লাহ তাআলা তাকে ফেরেশতাকর্তৃক সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন এ দিনেই।

তের. এ দিনে সর্বপ্রথম পবিত্র কাবা শরিফ গিলাফাবৃত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, আল্লামা ইবনুল জাওজি (রহ.) তার বিখ্যাত ‘মাওজুআতু ইবনে জাওজি’-তে বলেন, আশুরার দিনে সংঘটিত ঘটনাবলি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তা সত্ত্বেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে এসব ঘটনার আবেদন কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × four =