রাজউকের নিয়ম বহির্ভুত ভবনগুলো টিকেই যাচ্ছে টাকার বিনিময়ে সবাই ম্যানেজ

0
666

মোঃ আবদুল আলীম: রাজউকের অনিয়ম দুর্নীতির কারনে রাজধানী বসবাসের উপযোগিতা হারিয়েছ অনেক আগেই। এর পরও থেমে নেই নকশা বহির্ভুত ভবন নির্মান। বিষয়টি নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও দুদক বেশ চড়েচড়ে বসেছে। কিছুদিন আগে রাজউক ২২ টি টিম গঠন করে অনিয়মিত ভবনগুলোর তালিকা তৈরি করে। তালিকা অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার কথা। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানে শিথিলতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কোন ভবনের নকশা পাশ করতে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না যা দিব্যালোকের মত সত্য। রাজউকের কোন কোন কর্মকর্তা, অথারাইজড অফিসার ও ইমারত পরিদর্শক বিশাল বিত্য বৈভবের মালিক। কিছুদিন পর পরই বিশাল সম্পদের ও আয়ের উৎস দেখাতে না পারার কারনে রাজউকের অনেক কর্মকর্তাকে দুদক ধরে নিয়ে যাচ্ছে ও মামলা চলমান আছে। এর পরও থামছে না রাজউকের অনিয়ম দুর্নীতি।

নকশা অনুমোদন করে ও অনিয়মিত ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার বিনিময়ে রাজউকের অনেক ইমারত পরিদর্শক ও অথারাইজড অফিসার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ও নিচ্ছেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। রাজউকের অথারাইজড অফিসার ৭/২ এলাকায় অসংখ্য অনিয়মিত ভবন রয়েছে। তথ্য প্রাপ্তির এক আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজউকের স্মারক নং ২৫.৩৯.০০০০.০১১.৯৯.২৮৭ (৯) ১৫.৯৮৪ তারিখ ০৪.০৪.২০১৮ ইং থেকে জানা যায় (১) আরিফ হোসেন গং হোল্ডিং নং ৩৩/সি/১০০ শরৎ গুপ্ত রোড, নারিন্দা, ঢাকা রাজউকের স্মারক নং ২৫.৩৯.০০০০.১৩১.৩৩.০০৮.১৭.১২৯তারিখ ৩০/০৩/২০১৭ ইং এর মাধ্যমে ০৫ তলা ভবনের অনুমোদন হয়।

ভবনটির সেটব্যাক সন্মুখে ১.৫০ মি: এর স্থলে ০.০০ মি:, পশ্চাতে ১.০০ মি: এর স্থলে ০.০০ মি:, ডানে ০.৮০ মি: এর স্থলে ০.০০ মি:, বামে ০.৮০ মি: এর স্থলে ০.০০ মি: রেখে নির্মিত হয়েছে।(২) মো: মীর হোসেন (মীরু), হোল্ডিং নং ৯১/৯২, বেগমগঞ্জ, নারিন্দা, ঢাকা রাজউক থেকে স্মারক নং ২৫.৩৯.০০০০.১৩১.৩৩.১১৯.১৭.১০৫ তারিখ ১৯/১০/২০১৭ ইং এর মাধ্যমে ০৯ তলা ভবনের অনুমোদন হয়। ভবনটির সেটব্যাক:- রাস্তা প্রশস্ত করনের সমর্পনের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা (১.৪১/২৫.১২) বর্গমি এর স্থলে ০০ বর্গমি সমর্পন করেছেন অর্থাৎ রাস্তা প্রশস্তকরনের জন্য কোন জমি সমর্পন করেন নাই।

সন্মুখে ১.৫০ মি: এর স্থলে ০০ মি:, পশ্চাতে ৩.৮০/২.১০ মি: এর স্থলে ১.৫৭/০.৪৫ মি: ডানে ২.৫৮/১.৯৯ মি: এর স্থলে ১.৫৮/০.৯৯ মি: বামে ৩.৪৯/১.৯৬ মি: এর স্থলে ২.৪৯/০.৯৬ মি: ছেড়ে নির্মিত এভাবে দেখা যায় প্রচুর অনিয়মের মাধ্যমে ভবন দুইটি নির্মিত হলেও এসব ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কোন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। অথরাইজড অফিসার ৭/২ মোহাম্মদ নুর আলম কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক তথ্যে এ প্রতিবেদককে জানান হয় উক্ত অনিয়মিত ভবনগুলোর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার জন্য রাজউকের চেয়ারম্যান আদালতকে অনুমোদন দিয়েছেন। অথচ দীর্ঘদিন অতিক্রম হলেও উক্ত ভবনগুলোর অনিয়মিত অংশ উচ্ছেদ করার কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে নিকটস্ত ভবন মালিক ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

নিকটস্ত ভবন মালিক ও ক্ষতিগ্রস্তরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান রাজউকের অথারাইজড অফিসার ৭/২ ও সংশ্লিষ্ট ইমারত পরিদর্শক উক্ত অনিয়মিত ভবনগুলো হতে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে অনিয়ম করেও ভবনগুলো বহাল তবিয়তে। এ ব্যাপারে অথারাইজড অফিসার মোহাম্মদ নুর আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নাই। উক্ত জোনে নিয়ম বহির্ভুত ভবনগুলো সম্পর্কে এ প্রতিবেদকের তদন্ত অব্যহত আছে। আগামি সংখ্যায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত থাকছে। (চলবে)    

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − 8 =