রাজধানীতে প্রকাশ্যে দিবালোকে আইন ভঙ্গ করে চলছে তামাকের বিজ্ঞাপন

0
759

স্টাফ রিপোর্টার:
সিগারেট বিক্রয় বাড়াতে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় এমনকি স্কুল-কলেজের পাশেও বসছে কোম্পানিগুলোর এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান। তামাক জাতীয় পণ্য হাতের নাগালে থাকায় ধূমপানে আগ্রহী হয়ে পড়ছে অপ্রাপ্তবয়স্করাও। প্রকাশ্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করে ধূমপানের প্রতি আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে প্রজন্মকে। তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন নামি দামি ব্যান্ড্রের প্রচার ও প্রসারের জন্য সুবিধাজনক স্থানকে বেছে নেওয়া হচ্ছে এই কাজে। কোম্পানির নিয়োগ করা কর্মীদের দিয়েই চলছে এই আইন বিরোধী কাজ।


রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আইন লঙ্ঘনে এগিয়ে রয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি। সিগারেটের নাম ও দামসহ ব্যানারে উল্লেখ করা হচ্ছে ‘এখানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য (সিগারেট) বিক্রয় করা হয়’। আইন ফাঁকি দিতে সঙ্গে বিক্রি করা হচ্ছে চকলেট। চাকরির শর্ত অনুযায়ী কোম্পানির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই এ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিক্রয় কর্মী। এছাড়াও নেভী, ডার্বি, পাইলট, হলিউডসহ কয়েকটি ব্রান্ডের সিগারেট সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রয় হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।


প্রকাশ্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন ও স্থায়ী দোকানগুলোতে প্যাকেট ও লিফলেট প্রদর্শন করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করা হলেও তা বন্ধে ভূমিকা রাখছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ এর (ক) ধারায় প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনো বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা বা করানো যাবে না। (খ) ধারায় তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়ে প্রলুব্ধ করার উদ্দেশ্যে, এর কোনো নমুনা, বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে, জনসাধারণকে দেওয়া যাবে না এবং (ছ) ধারায় তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে যেকোন উপায়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। আইনে ৬ এর (ক) (১) ধারায় কোনো ব্যক্তি অনধিক আঠারো বৎসর বয়সের ব্যক্তির কাছে তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে পারবে না।
একই আইনে ৫ এর ৪ ধারায় উল্লেখ রয়েছে কোনো ব্যক্তি এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে তিনি অনূর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হবে এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করলে তিনি পর্যায় ক্রমিকভাবে উক্ত দন্ডের দ্বিগুণ হারে দন্ডনীয় হবেন।


তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, কাস্টমার এসে দোকানে থাকা পণ্য চাইলে তা বিক্রি করাই আমার কাজ। অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিষেধ করলে তাদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তাই প্রশাসন যদি ব্যবস্থা নেয় তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতা সবাই সতর্ক হবে।


আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে সিগারেট বিক্রি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো। সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সিগারেট বিক্রি বন্ধে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন হতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সেসঙ্গে অভিভাবকদের পারিবারিক শিক্ষা ও সুরক্ষা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × three =