ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে ক্ষত-বিক্ষত চট্টগ্রাম

0
577

চট্টগ্রাম :  দেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক  রাজধানী  চট্টগ্রাম  নগরবাসীর দুর্ভোগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছেনা। নগরের প্রায় প্রতিটি রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আছে। আর নগরজুড়ে অব্যাহত খোঁড়াখুঁড়িতে সৃষ্ট এই দুর্ভোগ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। অন্যদিকে  নগরীতে যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িকেই দায়ী করে আসছে ট্রাফিক বিভাগ। জানা যায়, ওয়াসার মূল সরবরাহ লাইন থেকে বাসাবাড়িতে সংযুক্ত প্রায় ৫০ হাজার পাইপ লাইন নতুনভাবে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এর ফলে চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে পুরনো ৬৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন অপসারণ করে বসানো হবে নতুন সংযোগ লাইন। ওয়াসা জানিয়েছে, নতুন সংযোগ লাইন স্থাপনের জন্য তাদের নগরজুড়ে অলিগলি থেকে বাসাবাড়ির সামনের রাস্তা, ভবনের আশপাশও কাটতে হবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটহাজারী রোড সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অলিখাঁ মসজিদ থেকে অক্সিজেন সড়কটি ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এটি বাস্তবায়ন করেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উদ্বোধনের পাঁচ বছর না পেরুতেই চট্টগ্রাম ওয়াসা উন্নয়ন কাজের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষত-বিক্ষত করেছে সড়কটিকে। শুধু এ সড়কটিই নয়, এরকম চিত্র নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রায় প্রতিটি সড়কে চলাচল মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী।

দূর্ভোগের শিকার রাস্তায় চলাচলরত মানুষরা জানান, খোঁড়াখুঁড়ির ফলে পুরো রাস্তা জুড়ে রয়েছে ধূলোবালি, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। আর অল্প বৃষ্টিতে এসকল গর্তে পানি জমে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তা। এতে দিনদিন অসহনীয় হয়ে পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। তাই দ্রুত এর প্রতিকার চায় চট্টগ্রামবাসী।

এদিকে চসিক মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম নগরীর অনেক এলাকায় এখনো ওয়াসার সংযোগ লাইন স্থাপিত হয় নি। আবার অনেক এলাকায় পাইপ লাইন থাকলেও পানি সরবরাহ করতে পারছে না ওয়াসা। প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে ওয়াসা বারবার রাস্তা কাটছে। এতে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরবাসী। অবশ্য এই দূর্ভোগের কারণ হিসেবে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করলেন মেয়র।   

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম ফজলুল্লাহ জানান, নতুন সংযোগ লাইন স্থাপনের জন্য ওয়াসাকে খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে। এর কোন বিকল্প নেই। রাস্তা তো কাটতেই হবে।

তিনি বলেন, এই ভোগান্তি  যদি নগরবাসী  সহ্য করে ওয়াসাকে সহযোগিতা করেন, তাহলে আগামী ১০০ বছরে তাদের আর কোনো চিন্তা  করতে হবে না। জাইকার অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের অধীনেই নতুন সংযোগ লাইনগুলো স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার এই কর্মকর্তা।

তিনি আরো  বলেন, এতদিন ধরে আমরা মূল পাইপ লাইন বসিয়েছি, যেগুলো সরাসরি পানি সরবরাহ কেন্দ্রের  সঙ্গে সংযুক্ত। এখন আমরা সংযোগ লাইনে হাত দিচ্ছি অর্থাৎ মূল পাইপ লাইন থেকে পানি যেসব লাইনের মাধ্যমে বাসাবাড়িতে পৌঁছে। আগামী নভেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সময় লাগবে আরো এক বছর।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 + eight =