লালমনিরহাটে সিঙ্গাদার স্কুল চলছে ৪ জন ডেপুটেশন শিক্ষক দিয়ে- পাঠদান ব্যাহত

0
549

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে সিঙ্গাদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ৪ জন ডেপুটিশন শিক্ষক দিয়ে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে । শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে স্কুলে আসলেও সঠিক সময়ে আসছে না শিক্ষকেরা। সিঙ্গাদার স্কুলটি ডিপুটেশন প্রাপ্ত একজন প্রধান শিক্ষক ও তিনজন সহকারী শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত। এই স্কুলটির তিনজন শিক্ষক ডিপিইএড ট্রেনিংয়ে ও অপর একজন শিক্ষক মাতৃকালীন ছুটিতে থাকার কারনে পুরো স্কুলটি চলছে ডেপুটেশনের শিক্ষক দিয়ে।  ২৬সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সকাল ৯.৩০ মিনিটে স্কুলের অফিস রুম খুলছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্বে থাকা অঞ্জলি রাণী। তিনি নিজেই অফিস রুম পরিস্কার ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এদিকে সকাল ৯.০০টা থেকে শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাশ রুমে বসে শিক্ষকের অপেক্ষা করছে। প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রাণীর সাথে কথা বলা অবস্থায় সকাল ৯.৪৫মিনিটে কামনা রাণী নামের আরেকজন সহকারী  শিক্ষিকা স্কুলে আসেন । প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জলী রাণী জানান, তিনি ১ জানুয়ারী ২০১৯ থেকে সিঙ্গাদার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দ্বায়িত্ব পালন করছেন। অন্যান্য শিক্ষকের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন সহকারী শিক্ষক মাহমুদ হাসান ভ’ইয়া ছুটিতে আছেন।

অপর সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম এখনো এসে উপস্থিত হননি। শিক্ষকদের এই দ্বায়িত্বহীনতা ও কর্তব্যে অবহেলার কারনে ব্যাহত হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান । এ বিষয়ে ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী  মিম আক্তার মিশুর মা মোছাঃ বিউটি বেগম বলেন, হামার ছাওয়া সকাল ৯টায় স্কুলোত আসে, শিক্ষকরা তো দেরিতে আসপে। গবাই ঈন্দ্রারপাড় এলাকার আব্দুস সালাম বলেন, সকাল ৯টার আগে একজন শিক্ষক স্কুলে এসেছিলেন কিন্তু স্কুল খোলা না থাকায় তিনি চলে গেছেন।

একটি স্কুলের চারজন শিক্ষকের মধ্যে তিনজন ডিপিইএড ট্রেনিংয়ে যাওয়ার বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে, সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবেদা খাতুন বলেন, সিনিয়রিটির দিক থেকে সিঙ্গাদার স্কুলের তিনজন শিক্ষক ট্রেনিংয়ে আছেন। অনুরূপ হরিনচওড়া আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উমাপতি হরনারায়ন  সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ডিপিইএড ট্রেনিং করছেন।

লেখাপড়া চালানোর জন্য এই স্কুল তিনটিতে  অন্য স্কুলের শিক্ষককে ডেপুটেশনে দেয়া হয়েছে। সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দ্বায়িত্বে) রমজান আলীকে একাধিকবার মোবাইল করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (চলতি দ্বায়িত্বে) গোলাম নবী বলেন, যারা ট্রেনিং নেননি, তারা সকলেই ট্রেনিংএ যেতে পারবেন। তবে সকাল ৯টার পরে কেউ স্কুলে গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্য ডিপিইএড ট্রেনিং সম্পন্ন করলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা  একগ্রেড আপারে বেতন পাবেন। তাই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এক স্কুল থেকে তিনজন শিক্ষক ডিপিইএড করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে এই তিনটি স্কুল জাতীয়করণ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nine + 11 =