সম্রাটকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা

0
440

কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান শেষে আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা।

র‍্যাবের অভিযান শেষে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তাঁর নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানী কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে সম্রাটের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে থেকে দেখা যায়, অভিযান শেষে কার্যালয়ে ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ায় সম্রাটকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। কার্যালয় থেকে তাঁকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্তত ৩০০ নেতাকর্মী কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। সে সময় পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কিও হয়।

কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান শেষে আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেতাকর্মীদের ওপর চড়া হয় র‍্যাব-পুলিশ। সে সময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। পরে এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করে রমনা থানা পুলিশ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সম্রাটের কার্যালয় থেকে তিনজনকে আটক করে আমরা থানায় নিয়ে এসেছি। তবে তাদের নাম-ঠিকানা এখনো জানা যায়নি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

গত ২৪ সেপ্টেম্বর সরকার সম্রাটের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সরকারের চলমান অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। আজ রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকারা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে পরিবহন ব্যবসায়ী মুনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে আটক করার কথা জানায় র‍্যাব।

ঢাকা মহানগর যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে আজ রোববার বিপুল বিদেশি মদ, ইয়াবা বড়ি, আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্র জব্দ করে র‍্যাব।

এরপর আজ দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ম্যানশনে তালা ভেঙে সম্রাটের কার্যালয়ে ঢুকে অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত অভিযান চলে।

কার্যালয়ে ঢুকে দেখা যায়, সম্রাটের কার্যালয়ের বেড রুমের তোষকের নিচে ছয়টি গুলিসহ একটি আগ্নেয়াস্ত্র পড়ে আছে। কার্যালয় থেকে এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে র‍্যাব। এ ছাড়া র‍্যাবের অভিযানে দুটি ইলেকট্রনিক শক দেওয়ার যন্ত্র, ১৬ বোতল মদ, পাঁচ বান্ডেল তাস ও পাঁচটি কার্তুজ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সেখানে দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়াও পাওয়া গেছে। এই চামড়া অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া রাখার দায়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সন্ধ্যায় র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এই আদেশ দেন।

অভিযান শেষে সারওয়ার আলম বলেছেন, সম্রাটের কার্যালয়ে দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়া গেছে। তাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে কারাগারে পাঠানো হবে।

পরে সম্রাটকে কড়া র‍্যাব পাহাড়ায় কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘তাঁর (সম্রাট) কার্যালয়ে বিপুল মদ ও গুলিসহ একটি পিস্তল পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়া গেছে দুটি। এসব অবৈধ জিনিসপত্রের বিষয়ে তাঁর নামে ভিন্ন ভিন্ন মামলা দায়ের করা হবে। মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে র‍্যাব।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 4 =