আমরা ভারতকে যা দিয়েছি, তারা তা মনে রাখবে : ওবায়দুল কাদের

0
372

ভারতকে অতিরিক্ত সুবিধা দিয়ে সম্পাদিত বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সাতটি চুক্তির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কিছু পেতে হলে আগে দিতে হয়। আমরা ভারতকে যা দিয়েছি, তারা তা মনে রাখবে। বর্তমান সরকারের আমলেই তিস্তা চুক্তিসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান হবে।’

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি র‍্যাবের চলমান শুদ্ধি অভিযান, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যাসহ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘বিএনপি বলে আমরা নাকি দেশটা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। আপনারা কী বলেন? আমরা কি দেশটা বিক্রি করে দিয়েছি নাকি দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করছি? সম্পর্ক ভালো থাকলে সবকিছুই আদায় করে নেওয়া যায়। আমরা এ নীতিতে বিশ্বাসী। আমরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভালো রেখেই ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। দেওয়া-নেওয়া সম্পর্ক বন্ধুত্বে থাকে। সব দিয়ে ফেলেছি, বিষয়টা এমন নয়। আমাদের পাওয়ার বিষয়টা অনেক বেশি। সীমান্ত সমস্যার সমাধান আমরাই করেছি। যারা অভিযোগ করে, তারা তা করতে পারেনি। ৬৮ বছর পর এ সমস্যার সমাধান হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে ছিটমহল সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়নি। সমুদ্রসীমার ব্যাপারে ভারত আপিল করতে পারত, তারা তা করেনি। সম্পর্ক ভালো থাকলে অনেক কিছুই পাওয়া যায়। বৈরিতা করে কিছু পাওয়া যায় না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘গঙ্গা চুক্তি শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে। তিস্তা চুক্তিও এ সরকারের আমলেই হবে। ভারত সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের চুক্তি আড়াল করতে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হাস্যকর মনে হয় না? দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্পর্ক কী? গ্রেপ্তারে কেন বিলম্ব হয়েছে, সেটা র‍্যাবের ডিজি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বাংলাদেশে শেষ পর্যন্ত কেউ রেহাই পায় না। পালিয়ে থাকার মতো অবস্থা সৃষ্টি করা যায়, তবে সেটি ফলপ্রসূ হয় না, একপর্যায়ে ধরা পড়বেই। সম্রাট ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, তাই সীমান্তের কাছাকাছি একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।’

চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অভিযান চলবে। ১৫ দিনেই কি সব কমপ্লিট করব? আরো অনেক কিছুই দেখার আছে। কাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, কেন চলছে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এখানে কোনো লুকোচুরির কিছু নেই। আমরা যা বলছি, মুখে বলছি না, অ্যাকশনে প্রমাণ করেছি। যারা কালপ্রিট, করাপশন করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় কোনো সংকোচ নেই।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে কেউ রেহাই পাবে না। অভিযুক্ত করতে হলে অভিযোগ পেতে হবে। রাশেদ খান মেননও একটি ক্লাবের (ইয়ংমেনস ক্লাব) সভাপতি। তাই বলে তাঁকে কি ক্যাসিনো ব্যবসায় সম্পৃক্ত বলা যাবে?’

যুবলীগ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের সম্মেলন হচ্ছে। চারটি সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যেই সম্মেলনের কাজ শেষ করতে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নেত্রী সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। তাঁর কাছে সময় চাওয়া হচ্ছে। যুবলীগের কাউন্সিলররা ঠিক করবেন, তাঁরা কাদের নেতৃত্বে আনবেন। পার্টির সভাপতি ফাইনাল অথরিটি। তিনি পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই করবেন।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eleven + sixteen =