আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি : রিজভী

0
449

আবরার ফাহাদ হত্যা নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলে ২০১১ কক্ষের শিক্ষার্থী বুয়েট ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছে দলটি।

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। তিনি দাবি করেন, গোটা দেশকে আজ টর্চার সেলে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ।

অমিত সাহার গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষটি অমিত সাহার। এই কক্ষে আবরার ফাহাদকে ঢেকে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। অথচ সেই অমিত সাহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এজহারেও তার নাম নেই, তাকে বহিষ্কারও করেনি ছাত্রলীগ। তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন ও বির্তকিত পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।”

তিনি বলেন, “আবরার ফাহাদকে মারার সময়ে অমিত সাহা উপস্থিত ছিলো, সে মারামারিতে অংশ নেয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অন্যরা আবরারের লাশ নিয়ে গেলেও অমিত তার রুমেই ছিলো। কক্ষের ভেতরে আবরারের ওপর অকথ্য টর্চার চলে তখন পুলিশ খবর পেয়েও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাকে বাঁচানোর জন্য এখন নানা রকম অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে একটি গোষ্ঠী। আমরা অবিলম্বে অমিত সাহাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”

রিজভী  বলেন, ‘‘আবরারের স্ট্যাটাসের পেছনে কারণ ছিলো দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা ও সত্য ইতিহাস তুলে ধরা। আমরা যতটুকু পড়েছি, সেখানে সেটিই দেখিছি। আর এই দেশবিরোধী চুক্তিটি করেছেন বর্তমান মিডনাইট ভোটের সরকার জনগণের সাথে দিনে দুপুরে প্রতারণা করে। সুতরাং আবরার হত্যার দায় সরকারও এড়াতে পারেন না। গণমাধ্যমের কাছে জেনেছি আজ প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য দেবেন। জাতির সামনে বক্তব্য দেয়ার আগে সকল দেশশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবেন কিনা এটা জনগণ জানতে চায়।”

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে এই সময়ের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক হিসেবে অভিহিত করে রিজভী বলেন, ‘‘মৃত্যুঞ্জয়ী আবরার ফাহাদ দেশের জন্য জীবন দিয়ে মৃত্যুকে জয় করেছে। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধের প্রধান প্রেরণা হয়ে থাকবে আবরার ফাহাদ। সে আমাদের প্রাণের পতাকা।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘গোটা দেশটাকে এখন একটা টর্চার সেলে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো এখন কন্সেট্রেশন ক্যাম্প। ছাত্র-যুবক-অবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই এখন লীগের টর্চারের সেলের নির্মম শিকার। আপনারা দেখেছেন, যু্ব লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তারের পর সেখানে পাওয়া গেছে আধুনিক টর্চার সেল। যুব লীগের দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের অফিসেও পাওয়া গেছে টর্চার সেল। বুয়েট ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহার ২০১১ নম্বর কক্ষ, যেখানে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হয় সেই কক্ষটিও একটি টর্চার সেল। এদিকে চলছে গুম-খুন-অপহরণ আর বিচিারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং আরেকদিকে রয়েছে ছাত্রলীগ-যুব লীগের টর্চার সেল। এই টর্চার সেলগুলোই ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের গর্ভে জন্ম নেয়া বর্তমান সরকারের শক্তির উৎস।”

এই সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য কবীর মুরাদ, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, মোস্তাক মিয়া, আবদুল আউয়াল খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

20 + 20 =