ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যু

0
1200

রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ঔষধ প্রশাসনে চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে সাময়িক বরখাস্তকৃত ওই দুই কর্মকর্তা হলেন তৎকালীন ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন।

আজ রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এর আগে গত ২৮ জুলাই অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে সাময়িক বরখাস্তকৃত তৎকালীন ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেনের ফের ঔষধ প্রশাসনে চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। তবে স্বাস্থ্য সচিব ও ঔষধ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যদি তাঁদের অন্য কোনো দপ্তরে পদায়ন করার প্রয়োজন মনে করেন, তবে তা করতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে পরে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। এর বিরুদ্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আপিল বিভাগে আবেদন করলে আজ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে রিড ফার্মার বিষাক্ত প্যারাসিটামল সিরাপ পানে কিডনি নষ্ট হয়ে ২৮ শিশু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন সারাদেশে ব্যাপকভাবে চাঞ্চল্যের জন্ম দেয়।

কারখানায় ভেজাল ও নিম্নমানের প্যারাসিটামল তৈরির অভিযোগ এনে ২০০৯ সালের ১০ আগস্ট ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক (সহকারি পরিচালক) শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে আদালতে মামলা করেন।

এ মামলায় বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকার ড্রাগ আদালত এক রায়ে আসামিদের খালাস দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ হাইকোর্ট এক আদেশে ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ পান করে ২৮ শিশু মৃত্যুর ঘটনার মামলায় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিকসহ নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া পাঁচ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর মামলা পরিচালনায় অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান হাইকোর্ট। এরপর স্বাস্থ্য সচিব আদালতে হাজির হয়ে জানান যে, সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

কিন্তু গত ৩১ মার্চ ওই দুই কর্মকর্তাকে তিরস্কার করে তাদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন রিটকারীপক্ষের আইনজীবী। এরপর শুনানি শেষে আদালত তাদের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

11 + fourteen =