চট্টগ্রাম পতেঙ্গা কাটগড় দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জায়গা ১৫ বছর ধরে তিন জামায়াত নেতার দখলে রেখে কোটি টাকার মালিক

0
785

বিশেষ প্রতিনিধিঃ পতেঙ্গা ধুমপাড়ার কাটগড় ও ফুলছড়ি পাড়া রোডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জায়গায় দশমিক ৬৫ একর জায়গায় দখলদার বাহিনী তিন জামায়াতে ইসলামী নেতার দখলে। এলাকাবাসী জানান অনেক বছরধরে দূর্যোগ ব্যবস্হপনা ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের জায়গায় দখল করে দোকান ঘর, ভাড়া বাসা, নিজেদের বাসস্হান তৈরী করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারী জায়গায় দখল করে কি ভাবে জামায়াতের তিন নেতা ভোগদখল করেন। সাধারণ জনগন প্রশাসনের কাছে জানতে চাই। কিসের ক্ষমতা ও প্রভাব কাটিয়ে ১৫/২০ বছর সরকারী জায়গা দখলের মধ্য দিয়ে এলাকায় জামায়াতে ইসলামী গোপন বৈঠক গোপনে ত্রাস সৃষ্টি অবৈধ টাকার দাপট নিয়ে চললে ও বলার কেউ নেই। প্রথমে ক্লাব এবং স্কুলের নামে দখলের মধ্যে সম্পূর্ণ জায়গা দখল করে নেন। নগরীর উত্তর পতেঙ্গার ধুমপাড়া এলাকায় ‘নবারুণ সংঘ’ নামের একটি ক্লাব জামায়াত শিবিরের গোপন বৈঠকের স্থান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা হলেও নবারুণ সংঘ ক্লাবে গোপনে চলছে জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম। এখানে গোপনে তাদের সাংগঠনিক কাজ পুরোপুরি চালু আছে। এছাড়া ক্লাবটিকে ঘিরে আশপাশের বিপুল পরিমাণ সরকারি খাস জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে নানা স্থাপনা। যেগুলো থেকে নিয়মিত আদায় করা হয় মাসোহারা। তবে প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্লাবটির বর্তমান সভাপতি মো. হারুন। যিনি জামায়াত ছেড়ে বর্তমানে পতেঙ্গা থানার ৪০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক পতেঙ্গা থানা জামায়াতের সাবেক অর্থ সম্পাদক মো. আলী আকবর আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন পতেঙ্গা থানা জামায়াতের আমির মো. জানে আলম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ২০০৪ সালে জামায়াতের কয়েকজন মিলে ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখনো গোপনে ক্লাবটিতে শিবিরের মিটিং হয়। কিন্তু সামান্য দূরত্বে প্রশাসনের উপস্থিতি থাকলেও কেন তারা নিরব তা চিন্তার বিষয়। এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, পতেঙ্গা ধুমপাড়ার কাটগড় ও ফুলছড়ি পাড়া রোডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জায়গায় দশমিক ৬৫ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে  নবারুণ সংঘ, পতেঙ্গা রেঁনেসা কিন্ডারগার্টেন স্কুলসহ দুটি সামাজিক ক্লাব। ওই জায়গার গলির ভেতরে রয়েছে একটি তিনতলা ভবন। এছাড়া রাস্তার পাশে দীর্ঘ সারিতে রয়েছে দোকানপাট, সেমি পাকা ও কাঁচাঘরসহ শতাধিক স্থাপনা। জানা গেছে, বিশাল এই জায়গার এক-তৃতীয়াংশ দখলে রেখেছেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হারুন। তিনি ২০০৪ সাল থেকে ওই জায়গায় পতেঙ্গা রেনেসাঁ কিন্ডারগার্টেন কেজি স্কুলসহ ২০-২৫টি দোকানপাট ও স্থাপনা নির্মাণ করে বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়েছেন।

প্রতিটি দোকান থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করা হয় ৫-৬ হাজার টাকা করে। শুধু তাই নয়, দখল করা ওই জায়গায় পুকুরের মধ্যে একটি একতলা ভবনের নির্মাণকাজও ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন তিনি। আরও জানা গেছে, ওই জায়গার কিছু অংশ দখলে নিয়েছেন আরেক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. ইমতিয়াজ। তার দখলে রয়েছে ধুমপাড়া এলাকার পূর্ব গলি থেকে জামালের পানির ট্যাংক পর্যন্ত অংশ। ইমতিয়াজের দখলেও রয়েছে ৩০-৪০টি টিনশেড দোকান ও ভাড়া ঘর। তিনিও এসব স্থাপনা ভাড়া দিয়ে মাসে আদায় করছেন লাখ টাকা। অন্যদিকে ধুমপাড়ার মূল সড়ক থেকে ওই জায়গার কিছু অংশ দখলে নিয়ে স্থাপনা করেছেন আরেক বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন। তিনিও ২০-২৫টি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তার আয়ও মাসে লাখ টাকা।

রতিটি দোকান থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করা হয় ৫-৬ হাজার টাকা করে। শুধু তাই নয়, দখল করা ওই জায়গায় পুকুরের মধ্যে একটি একতলা ভবনের নির্মাণকাজও ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন তিনি। আরও জানা গেছে, ওই জায়গার কিছু অংশ দখলে নিয়েছেন আরেক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. ইমতিয়াজ। তার দখলে রয়েছে ধুমপাড়া এলাকার পূর্ব গলি থেকে জামালের পানির ট্যাংক পর্যন্ত অংশ। ইমতিয়াজের দখলেও রয়েছে ৩০-৪০টি টিনশেড দোকান ও ভাড়া ঘর। তিনিও এসব স্থাপনা ভাড়া দিয়ে মাসে আদায় করছেন লাখ টাকা। অন্যদিকে ধুমপাড়ার মূল সড়ক থেকে ওই জায়গার কিছু অংশ দখলে নিয়ে স্থাপনা করেছেন আরেক বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন। তিনিও ২০-২৫টি দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তার আয়ও মাসে লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ বছর আগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় একটি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়। সাইনবোর্ডে লেখা হয়—তফসিলভূক্ত দশমিক ৬৫ একরের জায়গার মালিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তফসিলভূক্ত ভূমিতে কোন প্রকার অনুপ্রবেশ, নির্মাণ, সংস্কার, পরিবর্তনের প্রচেষ্টা চালালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।তবে জেলা প্রশাসনের লাগানো এই সাইনবোর্ড কৌশলে ঢেকে ফেলেছে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও স্থাপনায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাবেক বন্দর বর্তমানে উত্তর পতেঙ্গা মৌজা তফশীলভূক্ত জমির মালিক দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দশমিক ৬৫ একরের জায়গার বিএস খতিয়ান নম্বর হল ৬।

আরএস দাগ নম্বর ১০০৩১ ও বিএস দাগ নম্বর ৭৬৮৬। ওই জায়গাটিতে অধিদপ্তরের দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্থায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়্যারহাউজ স্থাপন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জায়গায় ভাড়াটে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ২০০৪ সাল থেকে তারা সেখানে ব্যবসা করছেন। ওই সময় প্রতিটি দোকান ৫০ হাজার টাকা সালামি নিয়ে ১৫ বর্গফুটের একেকটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৫ বছর পর পর ভাড়ার কথিত চুক্তির মেয়াদ বাড়ায় দখলদাররা। বর্তমানে তিন ব্যক্তির দখলে থাকা জায়গায় পৃথকভাবে দোকান ও ঘর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি দোকানে বর্তমানে সালামি হিসেবে নেওয়া হচ্ছে লাখ টাকা। পতেঙ্গা থানা ৪০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হারুনকে দখলে আছে  জানা যায়।

  ক্লাবে জামায়াত-শিবিরের গোপন বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর বারেক কোম্পানির জানান, হারুণ আগে জামায়াত করত। জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর সে বিএনপি’র লেবাস লাগিয়েছে। তবে নবারুণ সংঘে এখনো জামায়াত-শিবিরের মিটিং হয়। আর ক্লাবটি সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারি একটি জায়গার উপর কিভাবে জামায়াত-শিবির ক্লাব চালাতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এছাড়া ক্লাবের পাশে যে কিন্ডার গার্ডেন স্কুল আছে সেটিতেও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি নেয়া হয়। প্রশাসনের উচিত অচিরেই ক্লাবসহ সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা।

৪০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী জয়নাল আবেদীন বলেন, তারা যেভাবে জায়গা দখল করে দোকানপাট ও স্কুল বানিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে হয়। সিটি করপোরেশন থেকে অনুমতি নিয়ে আমি ওই স্থানে একটি বয়েজ কলেজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হারুণ ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বাধার মুখে করতে পারিনি। কারণ কলেজ হলে তারা সেখানে গোপন বৈঠকও করতে পারবে না, মাসে মাসে লাখ টাকা কামাতেও পারবে না। প্রশাসনকে অনেকবার আমি বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে প্রশাসন নিশ্চুপ। সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে  দখলদার হিসেবে পরিচিত হারুন মোবাইলে আমাদের প্রতিনিধি কে জানান, তিনি সরকারী কোন জায়গা দখল করেননি কিছু মানুষ দুর্নাম রটাচ্ছে। 

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × one =