ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আবরার এর হত্যাকাণ্ডটি তুলে ধরেন

0
519

কাশ্মীর & হিউম্যান রাইটস এবং ভারত কর্তৃক কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সুরক্ষা ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল 370 এবং 35 এ প্রত্যাহার করে নেবার প রিণতি এবং উপমহাদেশে এর প্রভাব নিয়ে গতকাল হাউজ অব কমন্সে ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

গ্রাহাম জন্স এমপির সভাপতিত্বে ও সংগঠনের চিফ এডভাইজার মুজাক্কির আলীর পরিচালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিবিসিএ এর সেক্রেটারি ফয়জুন নূর, টেম্পল কোর্ট চেম্বারের ব্যারিস্টার সংগঠনের সভাপতি আফজাল জামি সৈয়দ আলী সেমিনারটির পটভূমি এবং আলোচনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন ভারতের এই আচরণ শুধু কাশ্মীর নয় পুরো দক্ষিণ এশিয়াকে হুমকির মুখে ফেলে দেয় এবং ভারতের আগ্রাসন বাদী ধর্মীয় রাজনৈতিক আদর্শের প্রভাব বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এবং উদাহরণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ এর হত্যাকাণ্ডটি তুলে ধরেন। তাকে হত্যা করা হয় তার ফেসবুক পোস্টে ভারত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কালের পানি চুক্তিটির সমালোচনা করবার জন্য।

উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক ডেপুটি মেয়র জনাব অহিদ আহমদ,জম্মু-কাশ্মীরের মেম্বার অফ লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি রশিদ তুরাবি, শ্যাডো হেলথ মিনিস্টার যুলি কুপার এমপি , আফজাল খান এমপি ডেবী আব্রাহাম্স এমপি এবং কাউন্সিলর ডেল ফারিয়ার. ডিএফআইডি মিনিস্টার আন্ড্রো স্টিফেনসন সেমিনার শেষে যোগদেন।

যুলি কুপার আর আফজাল খান এমপি একই সুরে বলেন যে আমরা কাশ্মীরের অধিকারের সমর্থন এইজন্য করি কারণ কাশ্মীরের জনগণ আমাদের সাধারণ মানবিক বোধ এবং অনুভূতির অংশ।বিশেষ করে যুলি কুপার বলেন ভারতের আচরণ আরেকটি প্যালেস্টাইন তৈরি করতে যাচ্ছে।

ডেবি আব্রাহাম্স এমপি বলেন, যে এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক কাশ্মীরের জনগণের দুর্গতি তাদের বৈধ অধিকার গুলোর অবদমনের কাহিনী ব্রিটিশ মিডিয়াতে তেমন ভাবে আসেনি যেভাবে হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের ইতিহাস কথাগুলো উঠে এসেছে. তিনি বলেন আমাদের উচিত হবে আমাদের এমপিদের কাছে এ ব্যাপারে চিঠি লেখা যাতে করে এই ঘটনাগুলো কাগজে-কলমে রেকর্ডে থাকে।অল পার্টি কমিটি অন কাশ্মীরের চেয়ার হিসেবে তিনি বলেন এটা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব যাতে করে কাশ্মীর ইস্যুতে জরুরি আলোচনা অব্যাহত থাকে।

সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর ওহিদ আহমদ হিউম্যান রাইটসের উপর আলোচনায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড তুলে বলেন এখন সময় এসেছে বাস্তবিকভাবে ভারতের উপর কি ধরনের চাপ প্রয়োগ করা যায় সেটা ভাববার। শুধুমাত্র এভাবেই ভারতের ব্যবহারে আচরণে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

আব্দুর রশিদ তুরাবি বলেন দখলদারের কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং এটা তিন মাসের উপরে হতে চলল এখন. তিনি বলেন এই কারফিউর অর্থনৈতিক বাস্তবতা হলো কাশ্মীরে প্রধান অর্থকরী ফসল আপল তাদের বাগানে ধ্বংস হয়ে গেছে কাশ্মীরের ইকোনমিক অর্থনীতিকে ধ্বসিয়ে দেয়া হয়েছে।তিনি বলেন স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরের প্রধান নেতা সৈয়দ আলী সাজিলাকে তার নিজ ঘরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে যেখানে পরিবারের বাদবাকি সদস্যদেরকে প্রবেশাধিকার দেয়া হচ্ছে না। তিনি এখন নিজ গৃহে সলিতারি কনফাইনমেন্ট এর মধ্যে আছেন। আরো অনেক নেতাকর্মীকে দিল্লিতে জেলে বন্দি করে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের স্থানে রাখা হচ্ছে। কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা দেড় মিলিয়নের সীমা অতিক্রম করে গেছে এবং মোদির উগ্রবাদী ধর্ম প্রভাবিত রাজনৈতিক দর্শন কাশ্মীরকে একটি সম্ভাব্য গনহত্যার মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বাস্তবতা হলো বর্তমানে কাশ্মীরের যে লেফটেন্যান্ট গভর্নর তিনি গুজরাট গণহত্যার’ সময় মোদির অধীনে কর্মরত ছিলেন। এখন সময় এসেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সপ্তম অধ্যায় এর অধীনে বাধ্যতামূলক প্রয়োগ যোগ্য রেজুলেশন গ্রহণ করবার।

পরিশেষে প্রধান চীফ এডভাইজার মুজাক্কির আলি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আমরা যদি কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করতে না পারি তাহলে পুরো দক্ষিণ এশীয় এলাকায় একটি সংঘাতময় স্থানে পরিণত হবে এবং আশপাশের দেশগুলো সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে যেইভাবে এখনই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের কোন সমালোচনা করা যায় না এবং বাংলাদেশের ব্যাপারে বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর ব্যাপারে ভারতের বর্তমান অবস্থা হচ্ছে এগুলো তারা তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে দেখছে। এই আগ্রাসী মনোভাব প্রতিবেশী এলাকায় নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten + 16 =