২২৯ বছর পর নতুন ঠিকানায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা

0
614

২২৯ বছর পর নতুন ঠিকানায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা। আর এখানে নতুন নিয়মে চলছে বন্দিদের সাথে সাক্ষাৎ পুরুষ-মহিলাদের সাথে সাক্ষাৎ আলাদা আলাদা ভাবে যা আগের থেকে অনেক জামেলা কমে গেছে। শান্তি মত বন্দিদের সাথে দেখা ও কথা বলতে পারছে বন্দিদের স্বজনরা।দুই হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলে ও সেখানে বর্তমানে রয়েছে মোট ২৬৫৬ জন।

কারা সূত্র জানায়, ১৭৮৯ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে সিলেট শহরের অভ্যন্তর ধোপাদিঘীর পাড়ে ২৪ দশমিক ৬৭ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছিল সিলেট জেলা কারাগার। পুরাতন কারাগারের অভ্যন্তরে ১০ একর এবং বাইরে রয়েছে প্রায় ১৫ একর ভূমি।

১৯৯৭ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তরের পর এর ধারণক্ষমতা দাঁড়ায় ১ হাজার ২১০ জনে। বর্তমানে এই জেলে বন্দি আছেন ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। সে হিসেবে প্রায় ২২৯ বছর পর প্রথমবারের মতো পুরনো কারাগার থেকে গত ১০ মাস আগে বন্দিদের নেয়া হয়েছে নতুন কারাগারে ।

দুই হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারটির উদ্বোধন হয় গত বছরের ১ নভেম্বর। ওইদিন সকাল ১০টায় সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কারাগারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবশ্য নতুন কারাগার হলেও পুরনো কারাগারটিও ব্যবহার করা হবে বলেও জানান জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল।

২০১০ সালে সিলেটের নতুন কারাগার নির্মাণ ও স্থানান্তরের প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির সভায় (একনেক) পাস হয়। ২০১১ সালের আগস্টে সিলেট নগর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সিলেট সদর উপজেলার বাদঘাটে ৩০ একর জমির উপর আধুনিক সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নতুন কারাগার গড়ে উঠে অভ্যন্তরে ১৬ একর ও বাইরে ১৪ একর জমিতে।

সদর উপজেলার বাদাঘাট চেঙ্গেরখাল নদী তীরে নতুন এ কারাগার নির্মাণ এবং পুরনো কারাগার এলাকায় নগরবাসীর হাঁটা-চলার জন্য পার্ক নির্মাণেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তবে সেখানে আর হচ্ছে না হাঁটা-চলার জন্য পার্ক। কিন্তু পুরনো কারাগারটিও ব্যবহৃত হবে বন্দি রাখার কাজে।

১৯৭ কোটি টাকা প্রক্কলন ব্যয় ধরে কারাগার নির্মাণের কাজ শুরু হলেও কাজ শেষ করতে ব্যয় দাঁড়ায় ২৭০ কোটি টাকায়। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে ৫৯টি ভবন। কারাগারে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ১শ’ শয্যার পাঁচতলাবিশিষ্ট চারটি হাসপাতাল, স্কুল ও লাইব্রেরি ভবন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের জন্য একশ’ ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে।

প্রায় ২ হাজার বন্দির ধারণক্ষমতার নতুন কারাগারে পুরুষ বন্দিদের জন্য ৬তলাবিশিষ্ট ৪টি ভবন, নারী বন্দিদের জন্য রয়েছে দ্বিতলবিশিষ্ট দু’টি ও ৪তলা একটি ভবন। নতুন কারাগারে করা হয়েছে ৪টি হাসপাতাল। রান্নার কাজের জন্য একতলাবিশিষ্ট ভবন করা রয়েছে ৫টি। স্টোর রুম বা খাবার মজুত রাখার জন্য রয়েছে ৪টি ভবন।

কারাগারে দ্বিতলবিশিষ্ট রেস্ট হাউসও করা হয়েছে একটি। রয়েছে চারতলাবিশিষ্ট একটি ডে কেয়ার সেন্টার, মসজিদ, স্কুল ও লাইব্রেরি। পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, ক্যান্টিন, বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার কক্ষ এবং প্রশাসনিক কার্যালয় করা হয়েছে।

দুই হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলে ও সেখানে বর্তমানে হাজতী রয়েছে মোট ২৬৫৬ জন এর মধ্যে পুরুষ ২৫৮৪ জন আর মহিলা ৭২ জন।এদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামীর সংখা পুরুষ ১৬৯৭ আর

মহিলা ৫৩ জন।মোট সাজাপ্রাপ্ত আসামী ১৭৫০

এবং ফাঁসীর আসামীর সংখ্যা পুরুষ ৮৬ জন মহিলা ২ জন মোট ৮৮ জন। এ সব তথ্য সিলেটপোষ্টের প্রতিবেদকের সাথে সরজমিনে আলাপ করে দিয়েছেন জেলার আবু সায়েম।তিনি আরো বলেন,বন্দিদের সাথে সাক্ষাৎ করতে হলে আইনগত ভাবে একমাস পর,কিন্তু আমরা জেল কর্তৃপক্ষ মানবিক চিন্তা করে ও জেল সুপারের স্পেশিয়াল কোটায় আমরা এক সপ্তাহ পরপর বন্দিদের স্বজনদের সাথে সুশৃঙ্খল ভাবে দেখা ও সাক্ষাৎ করার সুযোগ দিয়েছি।

তাছারা জেলের ভিতরে বন্দিদের কি খাবার দেওয়া হয় জানতে চাইলে জেলার আবু সায়েম জানান,সকাল ৪ দিন রুটি, সবজি দুই দিন খিচুরী এক দিন হালুয়া রুটি।দুপুরে ভাত ,সবজি,ডাল ও রাতে ভাত, সবজি, ডাল ,মাছ অথবা মাংশ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − 5 =