স্বমহিমায় ভাস্বর বরগুনা’র এসপি মো: মারুফ হোসেন, পিপিএম

0
1960

রাশেদুল ইসলাম: রাষ্ট্রের জনগণের জানমালের হেফাজত, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলে জনগণের সাথে সেতুবন্ধন রচনার মাধ্যমে কার্যকর পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলে জনগণকে রাষ্ট্র প্রদত্ত সেবা প্রদান করে জনগণের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেওয়ার মাঝেই রয়েছে একজন চৌকস, দক্ষ ও অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তার সফলতা। সে দুরহ কাজটি অত্যন্ত সফলতার সাথে করতে সক্ষম হয়েছেন বরগুনার এসপি মো: মারুফ হোসেন, পিপিএম। স্বমহিমায় নিজে যেমন ভাস্বর হয়েছেন ঠিক তেমনি ভাস্বরিত করেছেন বরগুনা বাসীকে। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সাফল্য ও নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্র অর্পিত যে কোন কাজ সুনিপুন ও দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বরগুনা’র আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ব্যক্তি জীবনে এক কন্যা সন্তানের জনক পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল পারিবারিক ইতিহাস। তার পিতা এম আনোয়ার হোসেন ও মাতা খায়রুন্নেছার ঔরসে পিরোজপুরের এই কৃতি সন্তান ১০ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সৎ ও আদর্শবান ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ছোট বেলা থেকে পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে তার দীপ্ত পথচলা। এসপি মারুফ হোসেন ১৯৮৮ সালে পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯০ সালে সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, পিরোজপুর হতে এইচএসসি, ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। ২২ তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন এএসপি হিসেবে। সারদা ট্রেনিং শেষে ২০০৫ সালে সিআইডি’তে যোগদান করেন।

২০০৬ সালে সিএমপি’তে এসি হেডকোয়ার্টার, এসি ফোর্স, এসি সাপ্লাই ও এসি পাঁচলাইশ জোনে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে র‌্যাব-৭ এ এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে ভূয়সী প্রশংসা অর্জণ করেন। ২০০৮ সালে ডিএমপি’র এসি, ডিবি হিসেবে গুলশান জোনে যোগদান করেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরে এসি, ডিবি হিসেবে মিরপুর জোনে যোগদান করেন।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মিরপুরের ০৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করেন। তিনি এসি, ডিবি হিসেবে মিরপুর ও গুলশান বিভাগে দায়িত্ব পালন কালে হাউজ ডাকাতি, শ্যুটিং ইন্সিডেন্সসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

২০০৯ সালে লাইবেরিয়া মিশনে যোগদান করেন। ২০১১ সালে ট্রাফিক এন্ড ড্রাইভিং স্কুলের (টিডিএস) কমান্ড্যান্ট এর দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেন। ২০১২ সালে সুদানের দারফুর মিশনে রুল অব ল ইউনিটের ওআইসি প্লানিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

সুদানের দারফুর মিশন শেষে ২০১৪ সালে এডিসি হিসেবে এসএমপি, সিলেটে যোগদান করেন এবং সেখানে অনুষ্ঠিত টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিরাপত্তার প্লানিং-এর দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করে আইসিসি’র ভূয়সী প্রশংসা অর্জণ করেন।

এসএমপিতে ৩ (তিন) মাস সফলতার সাথে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৪ সালের নির্বাচনোত্তর অশান্ত লক্ষীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখানে তিনি সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে লক্ষীপুর বাসীর মন জয় করেন।

এরপর ২০১৫ সালে ডিএমপি’তে বাংলাদেশ সচিবালয়ে এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সচিবালয়ে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, বাহির গেইটের সম্প্রসারণ, ভেহিকেল স্ক্যানার স্থাপন সহ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে ব্যাপক প্রশংসিত হন।

সেখানে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালনের পর পদোন্নতি পেয়ে ২০১৬ সালে ডিসি (এমটি ও সরবরাহ) ও ডিসি (ডিবি) হিসেবে আবারও সিএমপি’তে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৩.০৮.২০১৮খ্রি. থেকে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন অদ্যাবদি।

নিজের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার এবং বরগুনার আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে “অপরাধ বিচিত্রা”কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন-‘‘মাদক, জঙ্গী ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সকে সামনে রেখে বরগুনার মাটি থেকে মাদক, জঙ্গী ও সন্ত্রাস নির্মূলে আমি বদ্ধপরিকর।

মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যাপক ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করেছি এবং মাদক ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক সমূলে উৎপাটন করতে জনগণ ও জন প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

তিনি ১৬৪ জন মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের আত্মসর্ম্পণের মাধ্যমে তাদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয়ের প্রেরণায় ‘নব দিগন্ত’ নামক রেজিস্টার্ড সমাজ সেবা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে জেলায় ভূয়সী প্রশংসা অর্জণ করেন।

জঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং বরগুনার মাটিতে কোন জঙ্গী কার্যক্রম যেন না চলে সে ব্যাপারে মাঠে স্পেশাল টীম কাজ করছে। দেশ জুড়ে আলোচিত “রিফাত হত্যা” মামলার তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

মা-বাবা’র দোয়া, পিরোজপুর বাসীর ভালবাসা ও কর্মক্ষেত্রের জনগণের সহযোগিতার বদৌলতে আজ আমি এ পর্যায়ে এসেছি, এ কারণে আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ ও মহান আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞ্যাপন করছি।

বরগুনা বাসীর হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান পাওয়া এসপি মো: মারুফ হোসেন তাঁর সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের ব্যাপ্তি এবং মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে তাঁর প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি নিষ্ঠার সাথে পালন করবে এ  প্রত্যাশা সকলের।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen + 6 =