জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেচেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, অবকাঠামোগত উন্নয়নও হচ্ছে। বড় বাজেট হয়েছে। এই বাজেট বাস্তবায়নে প্রয়োজন বড় রাজস্ব। তাই সবাইকে রাজস্ব দিতে হবে ।
ঢাকা চেম্বার অব কমা’র্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অ’তিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, হয়’রানির কথাটা আপনাদের অনেকের মুখে আসবে। হয়’রানির বিষয়টা আপনারা ওদের সঙ্গে সমঝোতায় না গিয়ে আমাদের বলে দেন, কোন অফিসার হয়’রানি করছে। তখন তাকে আম’রা শক্ত হাতে ধরবো।
তিনি বলেন, আমি যখন আমা’র অফিসার্সদের সঙ্গে কথা বলি তখন এই কথাগুলোও বলি- আপনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যেটা নেন তাদের বাধ্য করে সেটা চু’রি সেটা ময়লা খাবার। অথবা আরও যেটা তার গায়ে লাগে সেটা আমি বলি তাদের।
অনেকে হ’জ করতে যায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কিন্তু কম না লোক। হ’জের মৌসুমে আমি ছুটি দিতে দিতে একদম হয়রান হয়ে যাই। এখন যদি হ’জের পরে স্বভাব পরিবর্তন না হয়, তাহলে কি লাভ এটা করে?’
নতুন ভ্যাট আইনের ওপর এই কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) শাহনাজ পারভীন, উপ-প্রকল্প পরিচালক জাকির হোসেন খান, ডিসিসিআই এর আয়কর উপদেষ্টা স্নেহাশিষ বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবার ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হবেই এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, যারা মেশিন নষ্ট করবে তাদের দায়ী করা হবে। ব্যবসায়ীদেরও, আমাদের কর্মচারীদেরও। নষ্ট করা যাবে না। নষ্ট করলে নিজের পয়সায় আবার সেখানে লাগিয়ে দিতে হবে। আর একটা মেশিন কিনে দিতে হবে।
অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায়ে ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) চালু করতে একটু সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রয় প্রক্রিয়া শেষ হতে হবে, আবার আমাদের ব্যবসায়ীর সংখ্যাও একটু বেশি। সবাইকে দিতে দিতে একটু সময় লাগবে। কিন্তু তাই বলে ভ্যাট আদায়টা বন্ধ থাকবে না। ভ্যাট আদায় করতেই হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্র পূরণ হবে না জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এবার রেভিনিউ (রাজস্ব) আদায়ের পরিমাণ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার নিচে থাকবে। ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ছিল আমাদের লক্ষ্যমাত্র। এটার জন্য খুব সমালোচনা হচ্ছে। মিডিয়ার লোকজন এবং অনেক থিংক ট্যাংক বলছেন রেভিনিউ কেন আদায় হয় না। রেভিনিউ তো আসলে গলায় পাড়া দিয়ে আদায় করা যায় না। রেভিনিউ আদায়ে সবার সহযোগিতা দরকার।
কিছু সংশোধনী এনে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রচলিত ভ্যাট আইনে পৃথিবীর সব দেশে একটা রেটই থাকে। আম’রা আমাদের ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন রেট করেছি। ভ্যাট কাঠামো নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। উন্নত দেশে এর থেকে অনেক বেশি ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে হয়। ফাঁকি দেয়ার কোনও সুযোগ থাকে না।
কর্মশালায় ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভ্যাট ফ্রি লিমিট ৫০ লাখ টাকায় উন্নীতকরণ, ভ্যাট রিফান্ড সিস্টেম এবং ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আম’দানিতে অগ্রিম কর অব্যাহতি ইত্যাদি পদক্ষেপ বেসরকারিখাত নির্ভর অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।