ন্যায়ের জন্য জনগণকে গর্জে ওঠার আহব্বান

0
515

কেরালার কালিকটে পপুলার ফ্রন্টের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাবরী মসজিদের রায় ন্যায় পরিপন্থী, ন্যায়ের জন্য জনগণকে গর্জে ওঠার আহব্বান জানান। বাবরি মসজিদের ন্যায় বিচারের দাবিতে কেরালা জুড়ে পপুলার ফ্রন্টের বিশাল প্রতিবাদ প্রদর্শন।সুপ্রিম কোর্টে বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘিরে শুরু হয়েছে জোর সমালোচনা।

ইতিমধ্যে বাবরী মসজিদের রায়কে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে অন্যায্য ও হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন ।অন্যদিকে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে এই রায় ন্যায় বিচারের বিরুদ্ধে তাই ন্যায়ের পক্ষে জনগণকে আওয়াজ তোলার দাবি জানান।

আজ পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এই ন্যায় বিরোধী রায়ের বিরুদ্ধে কেরালা রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয় ।গোটা কেরালা জুড়ে পপুলার ফ্রন্টের সদস্যদের বিক্ষোভ কর্মসূচি লক্ষ করা যায়। এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে লক্ষ করা যায় ।

বাবরী মসজিদের মালিকানা কেন্দ্রীক সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় অন্যায়। তাই এই রায় গ্ৰহণ যোগ্য নয়। এটা সংবিধান প্রদত্ত সংখ্যা লঘুদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা বিরোধী। এই রায় সমস্ত গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক নীতি ও মূল্যবোধ বিরোধী। এই রায় বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থাকে অপমান করছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এই রায় বিচার ব্যবস্থার সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতাকে বিপন্ন করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট সম্পূর্ণ জমি মন্দির নির্মাণ করার জন্য হস্তান্তর করেছে। মুসলিমরা অন্য কোন বিকল্প স্থানেই বাবরী মসজিদ নির্মাণ করতে পারবে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট এই সত্য স্বীকার করেছে যে, কোন মন্দির ধ্বংস করে বাবরী মসজিদ বানানো হয়নি এবং এটাই মেনে নিয়েছে যে, মসজিদের ভিতরে মূর্তি প্রবেশ ও মসজিদ ভেঙে দেওয়া আইনের লঙ্ঘ ছিল। ফলে রায় এই সকল সত্য স্বীকারের পরিপন্থী। সারাংশ হল অধিগৃহিত ও ধ্বংস প্রাপ্ত মসজিদের আসল মালিকের মালিকানা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। যারা জোর করে দখল করেছে এবং আইন অমান্য করেছে তাদেরকে উক্ত স্থানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব দেখেছে যে কিভাবে বাবরী মসজিদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার ফলে বাবরী মসজিদ ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার – বাবরী মসজিদ উক্ত স্থানে নির্মাণ করা হবে- আজও অপূর্ণ থেকে গেল।

এটা নিছক একটি মসজিদ- মন্দিরের দ্বন্দ্ব নয়। তথ্যের উপর নির্ভর করার পরিবর্তে এই রায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিশ্বাস ও ধর্মীয় দাবিকে বেশী প্রাধান্য দিয়েছে। আসল দাবিদারদের আবেদনেরও বাইরে গিয়েছে এই রায়। ন্যায়ের নীতির উপরে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সংখ্যাগরুদের স্বাৰ্থকে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এই বিষয়ের মীমাংসা হচ্ছে না, বরং এর মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থানের উপর সংখ্যাগুরুদের দাবিকে আরো শক্তিশালী করেছে।

এই রায়ের ঠিক পূর্বে আরএসএস এই রায়ের জন্য ভয় ও নীরবতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন ধরণের কাপ সৃষ্টির উপায় অবলম্বন করেছে। আরএসএস নিজেকে হিন্দু অধিকারের একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থাপন করেছে।

ভিন্ন মত প্রকাশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার এবং নাগরিক দায়িত্ব। বিচার ব্যবস্থাসহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সমস্ত দিক ঠিক করার প্রয়োজন আছে যদি সেগুলি ভুল পথে চলে যায়। এই অবস্থাতে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া জনগণকে নীরবতা ভঙ্গ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং সত্যের জন্য সরব হওয়ার ডাক দিচ্ছে।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পপুলার ফ্রন্টের জাতীয় সহ সভাপতি ও এম এ সালাম ,জাতীয় সাধারণ সম্পাদক এম মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, জাতীয় সম্পাদক আব্দুল ওয়াহিদ সেট, জাতীয় কমিটির সভাপতি ই এম আব্দুল রহিমান,কেরালা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন ইলামারাম।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five − four =