Site icon Aparadh Bichitra

এখন থেকে আর সেখানে বিমানটি দেখা যাবে না

রাজশাহী মহানগরীর সিএমবি মোড়ের নাম নিতেই শহরের মানুষের চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটি যুদ্ধবিমান। সেখানে ২৫ বছর ধরেই প্রতিস্থাপন করা ছিল এফ-৬ মডেলের এই বিমানটি। তবে এখন থেকে আর সেখানে বিমানটি দেখা যাবে না। তার কারণ ঐস্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হবে।

২৫ বছরের আগের স্থাপনের সেই যুদ্ধবিমানটি সর্বশেষ আকাশে উড়েছিল ১৯৯১ সালে। ১৯৯৪ সালে রাজশাহী মহানগরীর সিএমবি মোড়ে কংক্রিটের তৈরি একটি স্ট্যান্ডের ওপর বিমানটি স্থাপন করে সিটি কর্পোরেশন। ২৫ বছর পর গত মঙ্গলবার দুপুরে বিমানটি সেই স্ট্যান্ড থেকে নামানো হয়েছে। এখন বিমানটি নগরীর আলিফ-লাম-মীম ভাটা এলাকায় নবনির্মিত একটি সড়কের প্রবেশমুখে স্থাপন করা হবে। নতুন সড়কটি বিমানবন্দর রোডে এসে মিলিত হয়েছে। দুই রাস্তার সংযোগস্থলে থেকে বিমানটি বোঝাবে- এই দিকেই বিমানবন্দর। দুপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি দলকে ক্রেনে করে বিমানটি স্ট্যান্ডের ওপর থেকে নামাতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার কাজী শাহজাহান। তিনি জানালেন, দেশের আকাশসীমা সুরক্ষিত রাখতে ১৯৭৫ সালে এফ-৬ মডেলের যুদ্ধবিমানটি কেনা হয়েছিল। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এটি বিমানবাহিনীতে সার্ভিস দিয়েছে। শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সিটি কর্পোরেশন একটি অব্যবহৃত বিমান সিঅ্যান্ডবি মোড়ে স্থাপনের আবেদন করলে এটি স্থাপন করা হয়েছিল। এখন আবার এটি স্থানান্তরের জন্য আবেদন করা হলে তারা কাজ শুরু করেছেন। কাজী শাহজাহান জানান, তারা এসেছেন যশোর থেকে। বিমানটি অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। এই মডেলের বিমানের ইঞ্জিন থাকে ভেতরে। তবে এই বিমানটিতে ইঞ্জিন নেই। তবে দুই পাখার সঙ্গে এখনও আছে ড্রপ ট্যাংক। আছে পাইলটের বসার স্থানও। পাখা এবং ড্রপ ট্যাংকগুলো খুলে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আবার পাখা ও ড্রপ ট্যাংক লাগিয়ে প্রতিস্থাপন করা হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানিয়েছেন, সিএমবি মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি নির্মাণ করা হবে ৫০ ফুট উচ্চতার। বিমানটি অপসারণের মধ্য দিয়েই কাজ শুরু হল। আগামী এক মাসের মধ্যে স্ট্যান্ড নির্মাণ করে বিমানটি নতুন স্থানে প্রতিস্থাপন করা হবে।

এদিকে বিমানটি যে স্থানে ছিল সেটি জেলা পরিষদের জায়গা। বিমানটির জন্য ফাঁকা ছিল ৩১ দশমিক ৬৫ শতক জমি। এখন ম্যুরাল নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন সংলগ্ন আরও ৯ দশমিক ৫৯ শতকসহ মোট ৪১ দশমিক ২৪ শতক জমি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে গত ২০ নভেম্বর জেলা পরিষদে চিঠি দিয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। তবে গত মঙ্গলবার জেলা পরিষদ একটি চিঠি দিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে বলেছে, ১৯ দশমিক ৬৩ শতক জমিতে ম্যুরালটি নির্মাণ করা যেতে পারে। এই চিঠিতে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের প্রাচীর না ভেঙ্গে এবং গ্যারেজ ও গাছপালা অক্ষত রেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমতিসাপেক্ষে ম্যুরাল নির্মাণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে।