Site icon Aparadh Bichitra

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনে শিশুকে না জড়ানো

শিমুল খুব খিটখিটে। কেউ দুষ্টুমি করলেও বুঝে না। খেলতে গিয়ে কিছু হলেই অন্যকে আঘাত না করে ক্ষান্ত হয় না। তার বয়স এখন নয়-দশ। অল্পতেই রেগে যাওয়া,কারো সাথে হেসে কথা বলতে না পারাটাই তার অভ্যাস হয়ে গেছে। বাড়ির আশেপাশে তার কোনো বন্ধু নেই। স্কুলে বন্ধু নেই। শিক্ষকদের অভিযোগ শিমুল খুব আক্রমণাত্মক আচরণ করে। অল্পতেই তেড়ে আসে। বন্ধুদের হাসি তামাশাও সহ্য করতে পারে না। সারাক্ষণ খিটখিটে মেজাজে থাকে। শিমুলের মা একটা অফিসে সারাদিন কর্মব্যস্ত সময় কাটান। বাবাও অন্য একটা অফিসে সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকেন। সকালে বেরিয়ে যান, সন্ধ্যায় ফেরেন। মনুর মা-ই শিমুলের ভরসা।

সকাল আর সন্ধ্যায় মায়ের মুখ দেখে শিমুল। রাতে কোনোদিন বাবাকে দেখে, কোনোদিন না। ছুটির দিনে বাবা মা বাসায় থাকেন। কিন্তু, সারাদিন বাবা মায়ের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি, খিটিমিটি লেগেই থাকে।

শিমুল যখনই মায়ের সাথে কোনো কথা বলতে যায়, শুধুই ধমক আর ধমক দেন। বাবা তো ঠাস ঠাস করে মারধোর ছাড়া আর কিছুই যেনো পারেন না। একা হয়ে যায় শিমুল। শিমুল রপ্ত করে, খিটখিটে মেজাজ, ধমক,মারধোরই একমাত্র রাগ প্রকাশের ভাষা। তাই সবার সাথেই এমন করে।

    এখানে সমস্যাগুলো কি?

১. পিতা-মাতার সুসম্পর্কের অভাব।

২. পিতা-মাতার সারাক্ষণ রাগতসুরে কথা বলা।

৩. পিতা-মাতার অনিয়ন্ত্রিত রাগ।

৪. শিশুর একাকীত্ব।

৫. শিশুর অনুকরণের স্বভাব।

৬. শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের বয়সকে গুরুত্ব না দেয়া।

    করণীয়

    ১. স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনে শিশুকে না জড়ানো। শিশুর ওপর যেনো এর বিরূপ প্রভাব না পড়ে।

    ২. শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের বয়সকে খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা।

    ৩. প্রচণ্ড রাগের মুহূর্তেও শিশু যখন কোনো আবদার নিয়ে আসে, তাৎক্ষণিক ‘মুড’ পরিবর্তন করা।

    ৪. শিশুর ওপর রাগের প্রভাব না ফেলা।

    ৫. শিশুকে সঙ্গ দেয়া।

    ৬. শিশুকে ছুটিরদিনে বা প্রতিদিন যতটুকু সম্ভব সময় দেয়া খুব প্রয়োজন।

    আমাদের প্রচণ্ড রাগের মুহূর্তগুলোতে আমরা যে আচরণ করি, প্রারম্ভিক বিকাশে শিশুরা সেটাকেই অনুকরণ করে। শিশুর জীবনে এমন রাগের মুহূর্তেও সে এই আচরণেরই প্রতিফলন ঘটায়। তাই আমাদের উচিৎ প্রচণ্ড রাগের মুহূর্তেও নিজেকে সামলে নেয়া। তাকে হাসিমুখে সময় দেয়া। তার কথা শোনা। তাহলে সে শিখে নেবে এমন মুহূর্তেও তার অন্যের সাথে ভালো আচরণ করতে হয়।