মহিলা যুবলীগের ব্যানারে বনানীর মাদক সম্রাজ্ঞী সুন্দরী তাসলির লাগামহীন অপকর্ম

0
1586

বনানী প্রতিনিধিঃ রাজধানীর গুলশান, বনানী, কড়াইল, মহাখালী, সাততলা এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো ব্যানারে গজিয়ে উঠেছে শত শত নেতাকর্মী। মিটিং শেষে অনুষ্ঠানে বড় বড় নেতাদের ছবি পুজি করে ফেসবুক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজেকে উচ্চমানের ক্ষমতাবান ব্যক্তি নেতা বলে দাবি করেন। অনুসন্ধান দেখা যায় কেউ রিক্সা চালক, কেউ হোটেল বয়, কেউ নৌকার মাঝি, কেউ বাঙালি ব্যবসায়ী, কেউ অটোচালক, কেউ বাসের হেলপার, কেউ দিনমজুর, কেউ বিএনপির নেতা -কেউ জামাত অথবা শিবিরের নেতাকর্মী। তারাই এখন বড় মাপের নেতা। মাদক ব্যবসাসহ তাদের অপকর্ম গুলো ঢেকে রাখার জন্য নিয়েছেন দলীয় পোস্ট। কারণ একটাই দলের মাদকব্যবসার দখল চাঁদাবাজি ফিটিংস অপকর্ম থেকে বাঁচতে দলীয় সাইনবোর্ডের কোন বিকল্প নাই।

যত টাকা প্রয়োজন দিতে প্রস্তুত। কড়াইল বস্তিতে এমন অনেক নেতার সন্ধান পাওয়া গেছে।কখনো এমপি মহোদয়, কখনো কাউন্সিলর, কখনো মহানগর, কখনো স্থানীয় নেতাদের ছবি ব্যবহার করে চাঁদাবাজি দখলবাজি বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত পুলিশ হচ্ছে নিরুপায় বড় বড় নেতাদের সাথে ছবি দেখলো তাদেরও কিছু করার থাকে না। এমনই মাদকের লিস্ট পাপতো অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড লাগিয়ে অপরাধ করে যাচ্ছে। অপরাধের টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্লাব পার্টি অফিস। একাধিক মামলার আসামি হয়েও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

তারাই শাসন করছেন প্রতিটি ওয়ার্ড ইউনিট ব্লক। এমন গর্জে ওঠা নেতানেত্রীদের নিয়ে আজকে আমাদের এই প্রতিবেদন। ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, গাজা, হেরোইন সহ এলকোহল জাতীয় নেশা দ্রব্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছে। আর অল্প সময়ে কোটিপতি হওয়ার নেশায় এই মাদকদ্রব্য আমাদের যুব সমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে সমাজের কিছু প্রভাবশালী লোকজন। তারা কখনো প্রশাসনিক লোকজনকে মোটায় টাকায় ম্যানেজ করে।

আবার কখনো প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে এই মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। বড় নেতা থেকে শুরু করে পাতিনেতা সারির অনেকেই সরাসরি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এটা নতুন কিছু। কোন দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নিচের স্তরের নেতা নেত্রীরা মাদক ব্যবসা করে একটা সময় দলীয় ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট করে। তবে শুরু থেকে তাদেরকে দমন করা হলে কেউ কলংকিত ইয়াবা সম্রাট বদি হতে পারতো না মনে করে মাদকবিরোধী সচেতন মহল।

শুধু নেতা বদি একাই কলংকিত নয়, তার পাশে রয়েছে হাজারো কলংকিত নেতা বা নেত্রী। এদের মধ্যে রাজধানীর বনানী এলাকার কড়াইল বস্তির মাদক সম্রাজ্ঞী তাসলি ওরফে সুন্দরী তাসলি অন্যতম। তাসলি ১৯ নং ওয়ার্ড মহিলা যুবলীগের নেতা হয়ে গেছেন বলে এলাকায় এমনটা শোনা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন এই নারী। সেই এলাকার টিএনটি স্যাটেলাইট বাসিন্দা ফুল মিয়াকে মিথ্যে মামলা অনেকদিন কারাগারে রেখেছেন এই মাদক সম্রাট তাসলি।

তার স্বামী মোস্তফা শ্রমিকলীগের সাবেক নেতা। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই মাদক কারবারী। তবে মাদক ব্যবসায় স্ত্রী তাসলির সাথে মোস্তফার তেমন একটা বনিবনা না হওয়া সে নিজেই একটি মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। মোস্তফা ও তাসলির ইয়াবা ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করে। বসে বসে মোটা অংকের টাকা কামাই করে ফর্মা সুমন কিছুদিন আগে জামিন পেয়েছেন। ভয়ঙ্কর সোর্স রাসেল, স্যাটেলাইট সর্বক্ষণ দেখা যায়।

প্রশাসনের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে এরা সবাই আত্মগোপনে থাকলেও অভিযান শেষ হওয়ার পরে আবার তারা ইয়াবা ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাসলি নেত্রী হওয়ার সুবাদে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনা। তার নিয়ন্ত্রনে রয়েছে মাদক বিক্রির একটি বিশাল সিন্ডিকেট। অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানী উঠে এসেছে মাদক সম্রাজ্ঞী তাসলির মাদক ব্যবসার নানা দিক।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, কড়াইল বস্তির বেলতলা থেকে স্যাটেলাইট বস্তির বেলতলা ব্রিজে দাড়িয়ে এক যুবক। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন বয়সী মানুষ তার কাছে যাচ্ছে এবং কয়েক সেকেন্ডর মধ্যে ওই যুবক পকেট থেকে বের করে টাকার বিনিময়ে তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, যুবকের নাম সুমন। সুমন ইয়াবা সম্রাজ্ঞী তাসলির সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য।

কিছুদিন আগে মাদক মামলায় জেল খেটে জামিনে এসেছে। তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুবেল ও রোমান নামে দুই তরুণ। লোকজন তাঁদের কাছ থেকে গাঁজার পুরিয়া কিনে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় দাঁড়িয়েই এই দৃশ্য দেখা যায়। কৌতুহল জাগল ক্রেতা সেজে ওদের সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু তারা নতুন মুখের কাছে গাঁজা বিক্রি করতে রাজি হন না, তা আগে থেকেই জানা ছিল। এ কারণেই একজন মাকদসেবীর সহায়তায় তাঁদের কাছে গিয়ে ১০০ টাকার গাঁজা কেনা হয়।

প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রি করছেন, পুলিশ ধরবে না? এমন প্রশ্ন করা মাত্রই সুমন মিয়া বললেন, ‘মাল পাইছেন চলে যান। ওসব জেনে লাভ নেই।’ এরই পরই তিনি উল্টো প্রশ্ন ছুড়লেন “পুলিশ ‘ম্যানেজ’ না থাকলে কারও বাবার ক্ষমতা আছে এই বস্তিতে ইয়াবা গাঁজা বিক্রি করার? কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে আসি।

হাফেজের স্ত্রী বিনা ও তার ভাই গাজা মিজান ঘরে বসেই ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে। বনানী থানার এসআই আবু তাহের ভূইয়া অভিযান চালিয়েছে বাসা ভেঙ্গে দিয়েছিল। অর্থের বিনিময়ে নাকি আবার পুনরায় আগের মতোই বসবাস করছেন তারা। বিনা প্রশাসনের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে একমাস জেল খেটে এখন জামিনে থাকলেও থেমে নেই ইয়াবা ব্যবসা।

গাজীপুর থেকে মাঝে মাঝে এসে মাদক বিক্রি করে আবার চলে যায়। সে গাজীপুর থাকে আর এই দম্পতি সিন্ডিকেটি পরিচালনা করে ইয়াবা সুন্দরী তাসলি ও বিশাল একটি চক্র, এসব মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে ভয়-ভীতির কোন ছাপ নেই। তাহলে কী মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের খবর ওই এলাকায় পৌছায়নি। নাকি তাসলির মতো সবাই পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করেই চালাচ্ছে মাদক ব্যবসা? নাকি তারা এসব অভিযানকে পাত্তাই দিচ্ছে না। তাই বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াই নিজেকে বিশাল মাপের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন।

অবশ্য কড়াইল এলাকায় অনুসন্ধানে কালে বনানী থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার কথা জানায় এলাকার সাধারণ মানুষ। ইয়াবা, গাঁজাসহ বিক্রেতা ও ক্রেতা ধরার পর ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে ২/১ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।


সুত্র জানায়, তাসলির কাছে প্রশাসনের লোকজনও অসহায়। কারন কোন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে উল্টো তাকেই গ্রেপ্তার হতে হয়। তাসলির কাজে কেউ বাধা দিলেই সে নিজের শরীরের কাপড় নিজেই টেনে ছিড়ে ফেলে ঐ লোককে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেয়। এ ছাড়া জামাইবাজারের আবদুল খালেকের ছেলে জসিম, জিল্লু, ওরফে ফরমা রাসেল, মোশারফ হত্যা মামলার আসামি নেতা শহিদুল ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলের অন্যতম কারবারী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

nineteen − six =