Site icon Aparadh Bichitra

ঢাবির চা বিক্রেতার প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ, ধর্ষক জামিনে মুক্ত

 “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির চা বিক্রেতা ‘স্বপন মামা’র প্রতিবন্ধী ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল গ্রামের মসজিদের সত্তর ছুঁইছুঁই এক মুয়াজ্জিন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এটা গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। আর এ বছরের ঘটনা হচ্ছে, সেই আসামী জামিন পেয়েছে এবং জামিনে বের হয়েই স্বপন মামা ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলের নামে করেছে মাদকের মামলা”। বিগত কয়েকদিন যাবৎ সামাজিক যোহাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এ সংবাদটি ভেসে বেড়াচ্ছে। মূল লেখক ‘মঞ্জুরুল ইকরাম’ – এর টাইমলাইন থেকে লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হল-

টিএসসির স্বপন মামার প্রতিবন্ধী ছোট মেয়েটাকে ধর্ষণ করেছিল গ্রামের মসজিদের সত্তর ছুঁইছুঁই এক মুয়াজ্জিন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এটা গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। আর এ বছরের ঘটনা হচ্ছে, সেই আসামী জামিন পেয়েছে এবং জামিনে বের হয়েই স্বপন মামা ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলের নামে করেছে মাদকের মামলা। থানা-পুলিশ, কোর্টকাছারি করতে গিয়ে লক্ষাধিক টাকার দেনায় পরেছেন স্বপন মামা, টাকা ধার করাটা আবার যার ধাতবিরুদ্ধ।

তবু তিনি মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া পাশবিক অন্যায়ের ন্যায্য বিচার চান। বিচার তো এদেশে এক অলৌকিক জটিল জ্যামিতিক নকশা; যার আলপনা রাঙানো হয় পেশিশক্তির জোরে, টাকাকড়ির উত্তাপে। এর কোনটাই এই বৃদ্ধ চায়ের দোকানীর নেই। ক্যাম্পাসে ৩৫ বছর হতে চললো বলে আমুদে লোকটার কিছু প্রভাবশালী আপনা লোক আছে। ক্যাম্পাসের পলিটিক্যাল রুইকাতলা থেকে শুরু করে সাংবাদিক, আইনজ্ঞরা সবিশেষ।কিন্তু তারা বর্ণিত কোন জড়তায় আক্রান্ত বলে একাধিকবার জানানোর পরেও কর্ণপাত করছেনা কেউই।

আমরা বড়জোর হেডব্যাং দিতে পারি ‘আমাদের যেন কিছুই যায়না ছুঁয়ে’ শুনতে শুনতে। এ দেশে এ যুগে লোকের সুখ দুঃখের কথা কাব্য ও সঙ্গীতের চেয়েও ঢেরবেশি থাকে কোর্টকাছারির বারান্দায়। সেই দেনদরবার করে দেবার জন্য নিম্নতর অধিকারীর হৃদয়ও কি সাড়া দেবে?

বছরজুড়ে লোকটার মুখে হাসি ছিলো না। আচরণ কিছুটা খিটখিটে ঠেকলে মাথায় আসতো, বয়সটা অনেক হলো। তাছাড়া নানাবিধ ঝামেলা ঠেকিয়ে রেখে আসছেন জীবনভর; ক্লান্তিকর এক যাত্রা। চোখের সামনে অবশ্যম্ভাবী মাইরের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন তিনি শ’খানেক ছাত্রকে, টিএসসির গেটে তালা দিয়ে চাবিটা হাওয়ায় লুকিয়ে ফেলে।

কখনোই অভিভাবকত্বের দাবি না তোলা এই নিঃস্বার্থ অভিভাবকের আকালের সময়ে একবার ভেবে দেখবেন, ঢাকা শহরের আর কোন মানুষটা ৩৫ বছর যাবত চা ও স্নেহ ফেরি করে রাতে ঘুমোতে যায় টিএসসির নামাজের জায়গায়। নিজের থাকার জায়গার চিন্তাও করেননি অন্যকোথাও থাকতে পারবেন না বলে। তার শক্তি তার

ভালোবাসা বহন করে চলা সেই অগণিত মানুষ।

হে ক্ষমতাবান মানুষেরা, আপনারা কি সাড়া দেবেন?

আর বাকি মানুষেরা, পরিচিত আইনজীবীদের সাথে কনসাল্ট করা, স্বপন মামাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা, বিতং করে এই ঘটনা নিজ টাইমলাইনে ল্যাখা বা তা করতে না চাইলে এই পোস্টটাই শেয়ার করা- দয়া করে সম্ভাব্য সকল উপায়ে আপনার উপস্থিতি জানান দিন আপাত অসহায় বুড়ো লোকটার পাশে। প্রিন্ট ও টিভি মিডিয়ায় কিছু রিপোর্ট হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোন হৈচৈ হয়নি। শীতল নৈঃশব্দের নৈরাশ্যে এই লোকটার ঝুলে পড়া কাঁধ ও আরো স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠা বয়সের বলিরেখা কি আমাদের একটুও অপরাধী করে দেয় না?