কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করল পাষণ্ড বাবা

0
486

বরগুনা জেলার আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে ছেলে সন্তান না হওয়ার ক্ষোভে জিদনী (৪০) দিন বয়সী নামের এক কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার।  খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে এবং বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে আটক করেছে পুলিশ। মায়ের হত্যা মামলা দায়ের।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর সিকদার ও সীমা দম্পতির সোহাগী (৯) এবং জান্নাতি (৩) বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

গত ৮ ডিসেম্বর ওই দম্পতির জিদনী নামের আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বাবা কন্যা সন্তান জন্মের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তিনি একটি ছেলে সন্তানের আশা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময় বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার জিদনিকে নিয়ে ঘড়ে সুয়ে ছিল। এ সময় তার স্ত্রী সীমা বেগম এবং তার শ্বাশুড়ি পারুল বেগম ঘড়ের বাহিরে চাল ঝাড়ার কাজ করছিলেন। শিশুটির মা সীমা বেগম এবং নানী পারুল বেগম কাজ শেষে রাত ১১টার সময় ঘড়ে প্রবেশ করে জিদনিকে দেখতে না পেয়ে ডাক চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এবং বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে এসে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঘড়ের পেছনের ডোবা থেকে ঘুমানোর কাঁথা বালিশ এবং বিছানাপত্রসহ জিদনির মরদেহ উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ রাত ৩টার সময় লাশ উদ্ধার করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

এলাকাবাসীর ধারনা পরপর ২টি কন্যা সন্তান থাকার পরও আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় রাগে ক্ষোভে বাবা জাহাঙ্গীর সিকদার নিজ কন্যা শিশু (৪০ দিন বয়সী) জিদনীকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, কন্যা সন্তান হওয়ার পর স্ত্রী সীমার সঙ্গে রাগ করে কোন কথা বলত না স্বামী জাহাঙ্গীর সিকদার এবং সন্তান জিদনিকে নতুন কোন কাপর চোপরও কিনে দেয়নি সে।

পানিতে ফেলে শিশু হত্যার খবর পেয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মহরম আলী ও আমতলী, তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ রবিউল ইসলাম এবং আমতলী থানার ওসি শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মা সীমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে শুক্রবার দুপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাবা জাহাঙ্গীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোন তথ্য পাওয়া গেলে তাকে আসামি করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

thirteen − 1 =