ডিমলার বাইশপুকুর মৌজায় মনুহারা চড়ে ভূমিদস্যুদের খুঁটির জোর কোথায় ???

0
758

মোজাহারুল ইসলাম ও আবু সুফিয়ান: নীলফামারীর ডিমলায় মনুহারা চড়ে ভূমিদস্যুদের কবলে শত শত পরিবার। ডিমলা উপজেলায় বাইশপুকুর মৌজার মনুহারা চড়ের শত শত  ১৯৪৭ পূর্ব প্রজা-উত্তরসূরীদের আতঙ্কিত জীবন যাপন চলছে শেষ সম্বল ভিটে বাড়ীটুকুও হারানোর ভয়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান), জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সহ স্বনামধন্য  বাংলা সান সোলার এনার্জি লি: এর মত বড় বড় রাঘব বোয়ালরা যখন ভূমিদস্যু রুপে অবতীর্ণ হয়েছে, তখন তাঁদের নিজেদের ভাষ্যমতে প্রশাসন, ভূমি সংশ্লিষ্ঠ অফিস সমূহের সিংহ ভাগ কর্মকর্তা -কর্মচারী তাদের পক্ষেই থাকবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।  যদিও প্রশাসনের এমন কোন আচরণ এখনো দৃশ্যমান হয়নি বলে সেই জলপাইকুঁড়ি জেলাধীন আমলের নবাব প্রজা-উত্তরসূরীগণ অপরাধ বিচিত্রাকে জানান। ১৯৪৭ সালের পূর্বেই ভারত বর্ষে জমিদার প্রথা বা নবাবী কার্যক্রম সবই বিলুপ্ত হয়েছে। তাছাড়া সাবেক জলপাইকুঁড়ি জেলাধীন  নবাব মোশারফ হোসেন খাঁন বাহাদুর সাহেব ছিলেন অঢেল সম্পত্তির মালিক। শুধুমাত্র বাইশপুকুর মৌজা ও হাতিবান্ধা থানার মধ্যখানে তিস্তা নদীর মনুহারা চড়ে নয়শত একর জমির তথ্য পাওয়া গেছে যার প্রায় ছয়শত একরই বর্তমানে তিস্তা নদী গর্ভে বলে সাবেক নবাব প্রজা-উত্তরসূরীগণ অপরাধ বিচিত্রাকে বলে।

আর  নদীর একুল ভাঙ্গে ওকুল গড়ার খেলার মধ্যে যে তিনশত একর জমি, তা তখনকার  আমল থেকে ভোগদখল করে আসছে যে প্রজাকুল ও পরবর্তীতে সেই প্রজাকুলের  শত শত পরিবার-সেখানে লোভ পড়ে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান), জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সহ স্বনামধন্য বাংলা সান সোলার এনার্জি লি:। ভূমিদস্যুরা  নবাব  প্রজাকুলকে  এসব বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার হুমকি দিচ্ছে। শুধুমাত্র বাইশপুকুর মৌজা ও হাতিবান্ধা থানার মধ্যখানে তিস্তা নদীর মনুহারা চড়ে নয়শত একর

জমির তথ্য পাওয়া গেছে যার প্রায় ছয়শত একরই বর্তমানে তিস্তা নদী গর্ভে বলে সাবেক নবাব প্রজা-উত্তরসূরীগণ অপরাধ বিচিত্রাকে বলে। আর  নদীর একুল ভাঙ্গে ওকুল গড়ার খেলার মধ্যে যে তিনশত একর জমি, তা তখনকার  আমল থেকে ভোগদখল করে আসছে যে প্রজাকুল ও পরবর্তীতে সেই প্রজাকুলের  শত শত পরিবার-সেখানে লোভ পড়ে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান), জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সহ স্বনামধন্য বাংলা সান সোলার এনার্জি লি:। ভূমিদস্যুরা  নবাব  প্রজাকুলকে  এসব বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার হুমকি দিচ্ছে।

আবার কখনো কখনো তাঁরা প্রতি পরিবারে  একাধিক ব্যক্তিকে চাকুরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শত শত ভূমিহীন অসহায় মানুষদের  উত্তেজনাকে থামিয়ে রেখে তাদের বিপক্ষে ভুয়া দলিল তৈরী করে ঐ সমস্ত তিন ফসলী জমি কেনা বেচা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধার বিপরীতে। উদ্দেশ্য বাংলা সান সোলার এনার্জি লি: কে শিল্প কারখানা করতে দেওয়া। অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে  অনেক বার বলেছেন তিন ফসলী জমিতে শিল্প কল-কারখানা নয়।

কিন্তু ভূমিদস্যুরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেই শুধুু অগ্রহ্য করছে না অসহায় ভূমিহীন সাবেক নবাব প্রজা-উত্তরসূরীদের তথা বর্তমানে বাংলাদেশের গর্বিত শত শত কৃষক-কামলা জনগোষ্ঠীকে প্রতারণা করেই চলেছে। জমিদার বা নবাব প্রথার শুরু থেকে এবং বিলুপ্ত হওয়ার পর প্রায় ৭০-৮০ বছর ধরে যে কৃষকেরা বংশ পরস্পরায় ঐ সমস্ত জমি নিজ নিজ দখলে রেখে চাষাবাদ করে  জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে বাংলাদেশ সরকারের আইন কী বলে এখন তা খতিয়ে দেখার উপযুক্ত সময় হয়েছে এবং সরকার তা খতিয়ে দেখবেন বলে বিশিষ্ঠজনেরা ও এলাকাবাসী আশা করছেন। তাছাড়া লোভ লালসার গ্রাসে পড়ে ভূমিহীন এসব  মনুহারা চড়বাসীদের আশ্রয় কোথায় এবং কী হবে তার স্বদুত্তর কারো জানা না থাকলেও প্রভাবশালী ক্ষমতাবান  ভূমিদস্যুদের ইচ্ছাই শেষ কথা বলে তারা দাবি করছে।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের জোড়ালো পদক্ষেপে যখন  দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, ক্যাসিনো ব্যবসায়ী প্রভৃতি রাঘব বোয়ালরা বে-কায়দায়, তখন ডিমলার বাইশপুকুর মৌজায় মনুহারা চড়ে ভূমিদস্যূদের খুঁটির জোর কোথায় তা সরকার নিশ্চয় খুঁজে বের করবে বলে ডিমলাবাসী আশা করে।  ভূমিদস্যূদের পক্ষে দু-একজন চামচা বাদে বাইশপুকুর মনুহারা চড়ের  সমস্ত ভূমিহীনরা এখন এক হয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা সরকারকে অবগত করে নিজেদের অধিকার আদায় করবে বলে তারা অপরাধ বিচিত্রাকে জানায়।

অপরাধ বিচিত্রা ঈগল টিমের অনুসন্ধান: অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানী ঈগল টিম মনুহারা চড়ের স্থায়ী বাসিন্ধাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং মানবিক বিষয়কে অপেক্ষা করতে না পেরে  অনুসন্ধানে নামে।  অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গোটা ভারত বর্য (ভারত, পাকিস্থান ও বাংলাদেশ) যখন এক ছিল এবং নবাবী আমলের প্রচলন ছিল সেই সময়ে জলপাইগুড়ি জেলার অন্তভুক্ত ছিল ডিমলা তথা বাইশপুকুর মৌজার তিস্তা নদীর মনুহারা চড়।

স্থানীয়দের ভায্যমতে এই অঞ্চলে মনুহারা  নামক ক্যান্টনমেন্ট ছিল যা আজ মনুহারা চড় নামে পরিচিত। স্থানীয়রা আরো বলেন, তৎকালীন নবাব মোশারফ হোসেন খাঁন বাহাদুর এর অন্যান্য এলাকার মত আমাদের মনুহারা চড়েই নয়শত একর জমি (তিস্তা নদী গর্ভ ও চড় সহ) আছে। যার খতিয়ান নং ২০, ৮০ ও ৯০৩। তিনি অত্যান্ত মানবিক ও জনদরদী ছিলেন বলে জমিদারী ও নবাবী প্রথা বিলুপ্তী হওয়ার কারণে এখানকার সমস্ত সম্পত্তি প্রজাদেরকে নিজ দখলীয়  অংশ গুলো মৌখিক ভাবে দান করার ঘোষণা দেন এবং পরবর্তীতে জলপাইকুঁড়ি জেলাধীন থাকা অবস্থায়ই উনার ওয়ারিশ রহিমুন্নেছা ও করিমুন্নেছা মহোদ্বয়গণ একই কথা বলে যায়।

বর্তমান মনুহারা চড়বাসী আরো জানান কয়েক বছর আগে লায়লা কবির নামে এক বয়স্ক ভদ্র মহিলা নিজেকে রহিমুন্নেছা ও করিমুন্নেছা মহোদ্বয়ের নাতনী বলে দাবি করে বলেন এই সম্পত্তি আমার পূর্ব পুরুষগণ যাদেরকে দান করে গেছেন তারা প্রায় শত বছর থেকে ভোগ দখল করে খেয়ে যাচ্ছেন। সুতরাং এখানে আর আমার কোন অধিকার নেই। অনুসন্ধানে লায়লা কবির ভদ্র মহিলার বর্তমান ঠিকানা জানা যায়-বাসা: ঘোরাশাল, নরসিংদী এবং অফিস: ধানমন্ডি, ঢাকা। পেশায় তিনি একজন বিশিষ্ঠ শিল্পপতি।

স্থানীয় সাবেক প্রজাকুল উনার সাথে যোগাযোগ করলে তিনিই একই কথা বলেন বলে চড়বাসীরা অপরাধ বিচিত্রাকে জানান। অনুসন্ধানে আরো জানা যায় নাবাব মোশারফ হোসেন খাঁন বাহাদুর সাহেব প্রজাকুল অশিক্ষিত  এবং জমিজমার বিষয়ে জ্ঞান না থাকার সুবাদে ভূমিদস্যূরা বেশ কিছু বছর থেকে এই ষড়যন্ত্রের বীজ বপণ করে চলেছে। শুধু তাই নয় ভূমি সংশ্লিষ্ট অফিস গুলোকে হাত করিয়ে কিছু ভুয়া লোককে  প্রকৃত ওয়ারিশ বানিয়ে অনেক জমির দলীল, রেকর্ড সহ আরো অনেক কিছু তৈরী করে ফেলেছে।

যা সরকারী ভাবে যদি সঠিক তদন্ত করা হয়, থলের বিড়াল অবশ্যই বেড়িয়ে আসবে। যেহেতু অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধান চলমান আশা করছি পরবর্তী সংখ্যা গুলোর যে কোনটিতে ভূমিদস্যুদের  নাম ও ঠিকানা সহ নতুন করে যে সমস্ত কোম্পানী ঐ সব তিন ফসলী জমিতে নিজের জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের সকলের বৃত্তান্ত প্রকাশ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 5 =