চোরের ভয়ে গরু আর পরিবার নিয়ে এক ঘরে বসবাস

0
803

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের দুর্গম চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়ায় চোরের ভয়ে গরু আর পরিবার নিয়ে এক ঘরে বসবাস করছে বলে জানা গেছে! উপজেলার রেহাইশুরিবেড় গ্রামে গরু চোরের ভয়ে গোয়াল ঘরের পরিবর্তে দুই হতদরিদ্র পরিবার গরু পালন করছে বসতঘরে। রেহাইশুরিবেড় গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে গরুচোর আতঙ্ক বিরাজ করায় দুইটি পরিবার এক সপ্তাহ ধরে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।

জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার দুর্গম রেহাইশুড়িবেড় গ্রামের কৃষক সুলতান ব্যাংক লোনের টাকায় দুটো গরু ক্রয় করেন। গত শনিবার রাতে তার দুটো গরু চুরি হয়ে যায়। এর আগে রেহাইশুরিবেড় গ্রামের মান্নান শেখের একটি গরু ও পানাগাড়ী গ্রামের মো: শ্যামল হোসেনের একটা গাভী ও দুইটা ষাড় গরু চুরি হয়েছে। এরপর থেকেই এলাকার কৃষকরা গরু পালন করছেন বসতঘরে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, পেশায় দিনমজুর তোফাজ্জলের বাবা এক বছর পূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সহায় সম্বল বলতে ১৩ শতাংশের ভিটে বাড়ি রয়েছে। স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়ে ও প্রতিবন্ধী বোনকে নিয়ে অতিকষ্টে দিনাতপাত করছেন তিনি। বাবার চিকিৎসার সময় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকার ঋণ পরিশোধের তোফাজ্জলের একমাত্র অবলম্বন অস্ট্রেলিয়ান জাতের আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের এই ষাঁড় গরুটি।

তোফাজ্জলের স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, গত শনিবার সন্ধ্যার পর চোরের দল আমাদের ষাঁড় গরুটি নিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশীরা টের পেয়ে ডাক-চিৎকার দিলে চোর পালিয়ে যায়। আমরা আশায় দিন গুণছি, গরুটি বড় হলে বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করব, তাই গরুর নিরাপত্তায় আমরা বসতঘরে গরুর সাথে বাস করছি।

একই গ্রামের দিনমজুর আল আমীনের স্ত্রী শেফালি বেগম জানান, কী করব ভাই! চোরের ডরে গরু আর পোলাপান নিয়া একঘরে বাস করছি। এলাকায় গরুচুরির উপদ্রব বাড়ায় গোয়ালঘরে গরু পালতে সাহস পাই না।

প্রতিবেশী সুরুজ আলী জানান, এলাকায় গরুচোর আতঙ্ক থাকায় আমি প্রতিরাতে দুই তিনবার উঠে গোয়ালঘর চেক করি।

এদিকে গরু চুরি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen − ten =