ইয়াকুব নবী ইমন, নোয়াখালী প্রতিনিধি: বর্তমান সরকারের ”আমার গ্রাম, আমার শহর“ ভিশনকে সামনে রেখে নোয়াখালীর প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে তথ্য প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল পোষ্ট অফিস বা পোষ্ট-ই সেন্টার। এই প্রকল্পের আওতায় নানামুখি সেবা পাচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে কম্পিউটার শিখে অনেক বেকার যুবক-যুবতী আত্মনির্ভর হচ্ছে।
জানা গেছে, এক সময়ের জনপ্রীয় ও গ্রামীন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ডাক বিভাগ যখন ধ্বংসের পথে ঠিক তখনি প্রধানমন্ত্রীর “আমার গ্রাম, আমার শহর” ভিশনকে সামনে রেখে মাঠে নামে ডাক বিভাগ। হাতে নেয়া হয় ডাক বিভাগকে ডিজিটাল করার প্রকল্প।
এরি অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে শহর ও গ্রামের পোষ্ট অফিসগুলোতে প্রতিষ্ঠা করা হয় পোষ্ট-ই সেন্টার। যা পরবর্তিতে ডিজিটাল পোষ্ট অফিসে রুপান্তর করা হয়। নানামুখী তথ্য প্রযুক্তির সেবা দিয়ে মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ডাক বিভাগ। বিশেষ করে স্বল্প খরচে অল্প সময়ে কম্পিউটার শিখে বেকারত্ব গুছিয়ে স্বাভলম্বী হচ্ছে এলাকার অনেক যুবক-যুবতী।
সোনাপুর উপ ডাকঘরের আওতাধীন ডিজিটাল পোষ্টা অফিসে কম্পিউটার শিখতে আসা জান্নাতুল নাইম জানান, ডাক বিভাগকে ধন্যবাদ এমন উদ্যেগ গ্রহন করার জন্য। এখান থেকে কম্পিউটার শিখে আমরা নিজেরা স্বাভলম্বী হচ্ছি, অন্যদের শিখিয়ে তাদেরও আত্মনির্ভরশীল হতে সহযোগীতা করছি।
একই কথা জানালেন বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর ডিজিটাল পোষ্ট অফিসে কম্পিউটার শিখতে আসা শিক্ষার্থী আবদুর রহমান আসিব ও নিশি আক্তার।
ডাক বিভাগ ও উদ্যোক্তাদের যৌথ পরিশ্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল পোষ্ট অফিসের কার্যক্রম। এই সেবা বেগবান করতে সরকারের কাছে আরো সহযোগীতা ছেয়ে ডিজিটাল পোষ্ট অফিস উদ্যোক্ত ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সোনাপুর উপ ডাকঘর ডিজিটাল পোষ্ট অফিসের উদ্যোক্তা মো: এফ এ ফুয়াদ জানান, আমরা যে ভাবে মানুষকে তথ্য প্রযুক্তির সেবা দিচ্ছি তা অন্য কোন মাধ্যমে সম্ভব নয়।
সরকার আমাদের যে সহযোগীতা করছে তা বর্তমান সময়ে অপ্রতুল। সরকারের ভিশন বাস্তবায়ন করতে হলে উদ্যোক্তাদের পাশে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিয়ে দাঁড়াতে হবে সরকারকে। উদ্যোক্তা ও সরকারের সম্মিলিত প্রচেষ্টা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির সব সেবা।
নোয়াখালী ডাক বিভাগের উপ-পোষ্ট মাষ্টার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর “আমার গ্রাম, আমার শহর” ভিশন বাস্তবায়ন ডাক বিভাগের এই উদ্যোগ কাজে লাগানোর মাধ্যমেই সম্ভব। সরকারের যে কোন উন্নয়ন কাজে ডাক বিভাগ সব সময় পাশে থাকবে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, সভ্যতার আদি কাল থেকেই ডাক বিভাগের প্রচলন। ডাক বিভাগ সভ্যতার অংশ। তাই ডাক বিভাগকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার নানামুখি উদ্যেগ গ্রহন করেছে। ডাক বিভাগের যে কোন প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনকে পাশে পাবে।
ডাক ও টেলি যোগাযেগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ঢাকায় উদ্যোক্তা সম্মেলনে বলেন, তলানি থেকে আমরা ডাক বিভাগকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছি। এ সফলতা উদ্যোক্তাদের। ডাক বিভাগের এই উদ্যোক্তারাই হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে আগামীর নতুন প্রজন্মের বাহিনী।