বাকেরগঞ্জে ভন্ড ফকির রিয়াজের ভন্ডামীতে কালামের প্রাণহানী

0
643

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে থেমে নেই ভন্ড ফকিরের ভন্ডামী। হৃদয় চমকানো কথা বলে বশ করেছেন গ্রামের সরল সোজা মানুষদের। বাস্তবে কোন রোগী সুস্থ না হলেও হুজুগে বাঙালীরা আসেন তার আস্তানায় রোগ মুক্তির কামনায়। মৃত কাঞ্চন ফকিরের পুত্র ভন্ড ফকির রিয়াজ, তাজেম খলিফার পুত্র পারভেজ খলিফা, নিয়ামতি ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের সুমন, ভন্ড ফকির রিয়াজের পুত্র অনিক, স্ত্রী লাকী বেগমে ও বোন শারমিন ফকিরের আস্তানা প্রশাসনের নজরদারিতে না পড়ায় প্রাণ দিতে হয়েছে এক বৃদ্ধাকে।

এবার তিনি জ্বীনের আছর ছাড়ানোর কথা বলে পানিতে ডুবিয়ে মারলেন পটুয়াখালী সদর থানার বাহাদুরপুর খলিসাকাঠী গ্রামের মৃত তোজম্মার মৃধার পুত্র কালাম মৃধাকে। এই ঘটনায় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিয়াজের বোন শারমিন ফকিরকে আটক করেছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ বলেন, ‘চিকিৎসার নামে রিয়াজ ফকির কয়েকজন মিলে কালাম মৃধাকে পানিতে ডুবিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যাকারী পলাতক রয়েছে। এই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’

নিহত কালামের স্ত্রী পারভীন বেগম বলেন, ‘স্বামী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার সুস্থতার জন্য শুক্রবার সকালে দুই দেবরকে সঙ্গে নিয়ে রিয়াজ ফকিরের বাড়িতে যাই। রিয়াজ ফকির তার চাচাতো ভাই অসিম ফকিরসহ ৪-৫ জন মিলে সকালে ও বিকেলে আমার স্বামীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও বাড়ির পুকুরে ডুবিয়ে দেয়।

এতে অসুস্থ হয় পড়লে তাকে মাজার সংলগ্ন একটি রুমে রাখা হয়। সন্ধ্যার পরে মারা যান তিনি। হত্যাকারীরা লাশ রাতেই বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাগানে ফেলে রাখে। রাত ৩টার দিকে রিয়াজ ফকিরের বোন অনিকা বেগম আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। শনিবার সকালে অনিকা বেগম আমাকে অন্যত্র নিয়ে যাওযার চেষ্টা করলে আমার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে।’ এ বিষয় বাকেরগঞ্জ সদর

থানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার সাঈদ জানান, হত্যার বিষয়টি আমরা জেনেছি। চিকিৎসার নামে ভন্ড ফকিরদের এটি একটি ব্যবসা। তাদের চিকিৎসায় মানুষ ভাল হয় না এরা সবাই প্রতারক, সরল মানুষের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে। তেল-পানিপড়া, ঝাড়ফুঁক, গলায় মালা পরানো এসব কোন কিছুতেই রোগ ভাল হয় না।

তবে, এসব কুচিৎিসায় অসুস্থ লোক ভাল না হলেও সুস্থ লোক অসুস্থ হয়ে যায়। এ বিষয়গুলো যদি এই জামানায় এসেও সাধারণ মানুষ না বোঝে তাহলে আর কিইবা করার আছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে রিপোর্ট আসলে বলা যাবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিয়াজ ফকিরের বোন ও নিহত কালাম মৃধার স্ত্রীকে পারভিনকে পুলিশ হেফাজতে এনেছি। যদি এঘটনার সাথে কারও সংশ্লিষ্টতা থাকে তাদের আইনের মাধ্যমে বিচার করা হবে।

স্থানীয়রা জানান, রিয়াজ ফকির ও তার সহযোগিরা গাউছে আজম হযরত কালু শাহ দেওয়ানের মাজার শরীফের ব্যানারের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × 5 =