পিএইচডি ডিগ্রি দিতে আইন মানা হচ্ছে কি না ইউজিসিকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ

0
548

দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইন-বিধি মেনে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি দিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষক, গবেষকদের পিএইচডিতে জালিয়াতি বন্ধ করার জন্য গবেষণা প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আগে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে তা যাচাই বা নিরীক্ষার পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট।

পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রির ক্ষেত্রে নকল, জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ইউজিসি চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ বছরের ২১ জানুয়ারি একটি অনলাইন পোর্টালে ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর।

এই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ২৬ জানুয়ারি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান। পরে ২৮ জানুয়ারি ভিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অভিযোগ ওঠা সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

আবুল কালাম লুৎফুল কবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। শিক্ষক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরকে অব্যাহতির পাশাপাশি অভিযোগটি তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ৬০ দিনের মধ্যে দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মো. মনিরুজ্জামান লিঙ্কন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

রিটকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বিশেষ করে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক-গবেষকরা যে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি নেন, এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন সময় জেনেছি এ ডিগ্রি নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক-গবেষকরা জালিয়াতি বা বিভিন্ন অনৈতিক পথ অবলম্বন করছেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল।

এর মধ্যে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি খবর ছাপা হয় একটি অনলাইন পোর্টালে। তখন বিষয়টি নজরে এনে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি অর্জনে জালিয়াতি রোধের নির্দেশনা চেয়ে রিট করি। আদালত রুল জারির পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন। এ আইনজীবী বলেন, আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনেও যদি অবৈধ পথ বেছে নিতে হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা কোথায় আছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × three =