ইতালিতে বাড়ছে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা

0
641

গোটা ইউরোপে যখন ইসলাম আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে তখন ইসলাম গ্রহণের হার কমেনি। সম্প্রতি ইউরোপে ইসলাম সর্ম্পকে মানুষের জানার আগ্রহ বাড়ছে। বাড়ছে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা।এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালে ইতালির সাবেক একজনপার্লামেন্ট সদস্যর মেয়ের ইসলাম গ্রহণ নিয়ে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছিল তোলপাড়।

ম্যানুয়েলা ফ্রাংকো বারবাতো নামের এই তরুণীর এখন নতুন নাম আয়েশা।ইসলাম গ্রহণের পর ইসলামের অনুশাসন তিনি মানছেন। পূর্ণাঙ্গ হিজাবী এইনারী ইতালির এক সাবেক এমপি ফ্রাংকো বারবাতোর মেয়ে। তিনি তার বাবার খ্রিষ্টধর্ম থেকে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন।ম্যানুয়েলার এই ইসলাম গ্রহণের ঘটনা এখন ইতালিতে আলোচনার বিষয়। খ্রিষ্টান উগ্রপন্থীরা কঠোরভাবে সমালোচনা করছেন তার।

সমালোচনা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তার বাবাও। ফ্রাংকো বারবাতোকে হাফিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার মেয়ে তো মুসলমান হয়ে গেল, এখন আপনার কেমন লাগছে?তার উত্তর ছিল, ‘শুধু খারাপ না, খুবই খারাপ লাগছে। কারণ এটি একটি অত্যন্ত কঠোর ধর্ম, খুবই চরমপন্থী, একদম সেকেলে! এই ধর্মটিমৌলবাদী। আমার মেয়ে আমার সাথে থাকাবস্থায় আমি নিজে দেখেছি। প্রতিদিন দেখেছি নামাজের সময় হলে সে সন্তানের কথাও ভুলে যায়!

এজন্য আমি তার প্রতি রাগ করতাম। সে যা নিজের জন্য পছন্দ করেছে আমি তাতে খুবই ব্যাথিত।তবে আয়েশা ইসলাম গ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দিত, সন্তুষ্ট। তিনিবলেন, ‘আমার আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য আমি গর্বিত।এসব আল্লাহর নিয়ম, আমার অভিযোগ করার কী আছে?’ নিজের হিজাব পরিধান নিয়ে চারপাশে যত কথা। তার উত্তরে আয়েশা বলেন, ‘হিজাব আমার জীবনের অংশ, যা আল্লাহ আমার জন্য পছন্দকরে দিয়েছেন।আয়েশা আগে বাবার সাথে থাকলেও প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর তার স্বামীকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন।সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গ্রাজুয়েশন করছেন। বিবাহিত জীবনে তার দুই শিশু সন্তান রয়েছে। ইতালিতে ১৭ লাখ মুসলমানের বসবাস। ইতালীর সরকারি সংস্থার হিসাবে দেশটিতে প্রায় বিশ হাজারসাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।ইতালির এই চিত্র প্রমাণ করে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ধর্ম হিসাবে ইসলামের প্রসার ঘটছে। হাফিংটন পোস্টঅবলম্বনে জুমবাংলানিউজ/এসওআর জার্মান ফুটবলার ওজিলের সঙ্গে এরদোগানের ইফতারের ছবি ভাইরাল। আর্সেনালের জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিলের সঙ্গে ইফতার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

গেল শনিবার ইস্তানবুলে ইফতার করেন তারা।এদিন অটোমান যুগের দলমাবাহাস রাজপ্রাসাদে রাজকীয় ইফতার পার্টি হয়। এতে এরদোগানের টেবিলের একপাশে বসেনওজিল ও তার বাগদত্তা এমিনে গুলসে। এ সময় হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায় তাদের।ইতিমধ্যে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। শিগগির বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন ওজিল। দীর্ঘদিনের বান্ধবী গুলসের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছেন তিনি। বহুল প্রতীক্ষিত এ বিয়েতে অতিথি হিসেবেওদেখা যেতে পারে এরদোগানকে। ইতিমধ্যে তুর্কি প্রেসিডেন্টের হাতে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র তুলে দিয়েছেন ওজিল ও গুলসে।সবাই তুরস্কে ব্যাপক জনপ্রিয়। সেই ছবি নিয়েও সমালোচনা হয়। ওজিল জার্মানির হয়ে খেললেও জাতিতে তুর্কি। তার হবু স্ত্রীও তুর্কিবংশোদ্ভূত। পেশায় মডেল ও অভিনেত্রী গুলসে অবশ্য সুইডেনের নাগরিক।গেল বছর বর্ণবৈষম্য ও অসম্মানের অভিযোগ এনে জার্মান জাতীয় ফুটবল দল থেকে সরেদাঁড়িয়েছেন ওজিল। এর নেপথ্যেও ছিলেন এরদোগান।রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে তুরস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওজিল। পরে এর একটি ভিডিও ক্লিপ নিজেরইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন তিনি। তাতে দেখা যায়, এরদোগানকে আর্সেনালের জার্সি উপহার দিচ্ছেন এ মিডফিল্ডার। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি জার্মানরা।

ডানপন্থী রাজনীতির কারণে এরদোগানের ভাবমূর্তি নিয়ে পশ্চিমাবিশ্বে প্রশ্ন আছে। এমন একজনের সঙ্গে ছবি তোলায় জার্মানদের মূল্যবোধ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয় ওজিলের বিরুদ্ধে। তবু তাকে বিশ্বকাপের দলে রাখেন কোচ জোয়াকিম লো।বিপত্তিটি বাধে প্রথম রাউন্ড থেকে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিলে। ব্যর্থতার দায় এসে পড়ে ওজিলের কাঁধে। ফলে উগ্র সমর্থকদের কাছ থেকে ঘৃণিত বার্তা হতে শুরু করে মৃত্যুর হুমকিও

পান তিনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ২৯ বছরের মিডফিল্ডার।পুলিশের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন ডাচ নারী সংযুক্তআরব আমিরাতের পর্যটন পুলিশ সদস্যদের সহনশীল, মার্জিত ও সভ্য আচার-আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন ইউরোপীয় এক পর্যটক। ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী ওই নারী পর্যটক হলেন নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ক্রিশ্চিনা ডাফানো। আল-জাজিরা, ওয়ার্ল্ডনিউজ।আমিরাতের পর্যটন বিভাগের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ডাচ নারী ক্রিশ্চিনা ডাফানো ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। শনিবার আবু ধাবি পুলিশের এক বিবৃতিতে তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের তথ্য জানানো হয়েছে, এবং এ সংক্রান্তবেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে।কালেমা পাঠের পর ডাফানো তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন নুরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলাম গ্রহণের পর শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদপরিদর্শনে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন ওই নারী। পরে তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।আমিরাত পুলিশের ডেপুটি পরিচালক কর্নেল আহমাদ আলমুরাউই বলেন, ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী, তাকে সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দীক্ষা দেয় আমিরাতেরপর্যটন পুলিশ।সম্প্রতি ইউরোপে মানুষের ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেড়েছে। বাড়ছে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যাও।ইতালির সরকারি সংস্থার হিসাবে এ সংখ্যা প্রায় ২০হাজার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন তারা। ইতালির এই চিত্র প্রমাণ করে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রসার ঘটছে।

এরই অনন্য নজির ফ্রাংকো বারবাতোর মেয়ের ইসলাম গ্রহণ।কার্টুন পত্রিকা শার্লি হেবদোতে উগ্রপন্থীদের হামলার পর হামলাকারীদের নিন্দা করতে গিয়ে ফ্রান্স এবং ইউরোপজুড়ে ইসলামের সমালোচনার বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, নতুন কারোইসলাম গ্রহণ করা তো দূরের কথা, মুসলমানরাই সেখান হয়তো টিকে থাকতে পারবে না।ভয়াবহ বিষোদগারে মুসলমানদের জীবন অতীষ্ঠ হয়ে যাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উল্টা চিত্র। ওই ঘটনার পর ইসলাম গ্রহণের হার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। ইমাম সাহেবরাজানাচ্ছেন, মসজিদে এসে ফরাসিরা কলেমা পড়ছেন।গত সপ্তাহে এক নওমুসলিম আরটিএল রেডিওকে জানান, ‘ওই ঘটনাই আমাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে, সবার কাছে সত্যিকারের ইসলামের রূপরেখা তুলে ধরেছে।’ওই রেডিওর ভাষ্যানুযায়ী, প্যারিসের গ্রেট মসজিদ ইসলামে ধর্মান্তরের ৪০টি সনদ বিতরণ করেছে।

গত বছর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২২টি। অর্থাৎ চলতি বছর ইসলাম গ্রহণের হার প্রায় ৫০ ভাগ বেড়ে গেছে।স্ট্রাসবার্গ ও আবারভিলিয়ার্সেও ইসলাম গ্রহণের হার অনেক বেশি। এই দুটি নগরীতে ইসলাম গ্রহণ বেড়েছে ৩০ ভাগ। আর লিওঁ নগরীতে বেড়েছ ২০ ভাগ।এসবশহরের মসজিদের ইমামরা বলছেন, নওমুসলিমদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তারা বিস্মিত। আরো বড় কথা হলো, নওমুসলিমদের মধ্যে বৈচিত্র্যও দেখা যাচ্ছে। তাদের একজন চিকিৎসক, একজন স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল, একজন পুলিশ অফিসার। তারা সবাইগ্রেট মসজিদে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন।শার্লি হেবদোতে হামলার কয়েক দিন পর ফরাসি পরিালক ইসাবেলে ম্যাটিতক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ করেছিলেন। তার এই ঘোষণা ছিল অপ্রত্যাশিত, বিস্ময়কর।প্যারিসে শার্লি হেবদোতে উগ্রপন্থীদের হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছিল। মহানবিকে (সা.) নিয়েকার্টুন প্রকাশ করার প্রেক্ষাপটে এই হামলা চালানো হয়।এই হামলায় সমালোচনায় মুখর হয়েছিল মুসলিম দেশ আর সংগঠনগুলো। তারা বলেন, এ ধরনের হামলাকারীদের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এ ধরনের কার্টুন না আঁকারও আহ্বান জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × 2 =