তেল নিয়ে রূপগঞ্জ ওসির তেলেসমাতি

0
731

সাম্প্রতিক সময়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসানের দেহরক্ষী কনস্টেবল রবিউলকে প্রত্যাহার করা হয় ।  দীর্ঘদিন যাবৎ রূপগঞ্জে দায়িত্ব পালনকালে ওসির ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করে আসছিলেন বলে জোড়ালো অভিযোগ ছিলো ওসি ও তার বডিগার্ড রবিউলে বিরুদ্ধে । এমন ঘটনার সংবাদ প্রকাশের পর তেলে-বেগুণে জ্বলে উঠেন ওসি মাহমুদুল ।

তারই নির্দেশেই বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারী ) দুপুরের দিকে রূপগঞ্জের দড়িকান্দি থেকে শাহাদাৎ হোসেন (২৮)  আটক করা হয়। তার কাছ থেকে ৮ সিলভার কালারের ড্রমে মজুদকৃত ৩শ ৩০ লিটার ডিজেল উদ্ধার দেখানো হলেও প্রত্যাক্ষদর্শীদের দাবী পুলিশের জব্দ করা তেলের পরিমাণ ছিলো ৮ টি ড্রামে মোট ১৭০০ লিটার । এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে তাতে দেখানো হয়েছে ৩৩০ লিটার। পুলিশ এই মামলায় আরও আট জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা আরো ৩০/৩৫ জনকে আসামী করা হয়েছে । ওসি মাহমুদুল হাসানের ক্যাশিয়ার রবিউলকে প্রত্যাহার করার ক্ষোভ থেকে এমন ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্ট হয়েছে রূপগঞ্জজুড়ে ।

পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ কে প্রত্যাহরের পর দুই মাস মনিরুল ইসলাম দায়িত্ব পালনকালে ক্যাশিয়ার রবিউলের কোন সমস্যা না হলেও পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম নারায়ণগঞ্জে যোগদান করে পুলিশ কনফারেন্সে সকল কর্মকর্তাদের বলেছেন মিথ্যা মামলা যেন না হয় । এমন নির্দেশ থাকার পরও শুধু মাত্র বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওসি মাহমুদুল হাসান তেল নিয়ে তেলেসমাতি করে যাচ্ছেন দারোগাদের কঠোর নির্দেশ দিয়ে । যা এখন রূপগঞ্জে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

জেলার রূপগঞ্জ থানায় দায়েরকরা তেলচুরির এক মামলায় জড়িত না থাকার পরও একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে রুপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে ।

মামলার আসামি করা এক ব্যক্তি ৩ মাস ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে জেল খাটছেন বলে জানা গেছে তবে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ মামলায় ।

এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক সোহেল সিদ্দিকী নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট বলেছেন ভিন্ন কথা । তিনি দাবী করেছেন মামলার  ৮ নং এজাহারভূক্ত আসামী আবদুল মোমেন যে কারাগারে রয়েছে তা আমার জানা নাই । একই সাথে তদন্তে তার যেহেতু বাবার নাম অথবা ঠিকানা নাই সেহেতু এই মামলা থেকে বাদ দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ আদালতে এ মামলায় গ্রেফতার করা শাহাদাত হোসেন (২৮) নামে এক আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। শাহাদাত রুপগঞ্জের নলপাথর এলাকার নিয়াজুল সিকদারের ছেলে। যার রিমান্ড শুনানীর ধার্য্য করা হয়েছে আগামী রোববার ।

মামলার ৮ জনের নাম উল্লেখসহ ও ৩৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে । এজাহারভুক্ত ৮ আসামি হলেন, গ্রেফতারকৃত শাহাদাত হোসেন (২৮), আব্দুল ইমাম শান্ত (৩০), মিলন (৩৮), হামিদুল্লাহ (৩৪), মাহফুজ (৩৫), শরীফ (৩৮), হোসেন (৩২), টাইগার মোমেন ওরফে টাইগার মমিন (৩৫)। এদের মধ্যে টাইগার মমিন ৩ মাস ধরে কারাগারে অন্তরীন রয়েছেন।

মামলায় পুলিশ উল্লেখ করেন, ১২ ফেব্রুয়ারি দাউদকান্দি ব্রীজের পূর্বপাশে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৮টি ড্রামে ৩৩০ লিটার ডিজেলসহ মিনি কভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো ম ০২ ২৬০০) আটক করা হয়। এসময় একজনকে ধরতে পারলেও বাকিরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এদের মধ্যে কারাগারে থাকা মমিনের নামও আসে।

মমিন সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরের বাসিন্দা। মামলার সকলের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে চোরাই তেল বিক্রির অভিযোগ তোলা হয়। আর সরাসরি ওসি নির্দেশেই এই মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে রুপগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সোহেল সিদ্দিকি জানান, এখানে ১ ও ২ নং আসামির নাম ঠিকানা সনাক্ত করা হয়েছে বাকিদের কে কোথায় আছে জেনে তদন্ত করে নাম রাখা কিংবা বাদ দেয়া হবে। তাদের নাম ঠিকানা এখনো অনিশ্চিত, আর জেলে থাকার ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হবে।

সোহেল সিদ্দিকী আরো জানান , তেল নিয়ে যে কেলেংকারী তা সম্পূর্ণ মিথ্যা । যাদের নাম এসেছে তাদের কেউ জড়িত না থাকলে অভিযোগ পত্রে অব্যাহতি দেয়া হবে । নাম বাদ দেয়ার ক্ষেত্রেও কেউ টাকা দাবী করেছে এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবেন না ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 3 =