যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার

0
518

বাইশ বছরের এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযোগ, স্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদতে তাঁর স্বামীই ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা তরুণী বাঘাযতীনের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা। ওই তরুণীর মা মারা গিয়েছেন।

বাবা বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। বর্তমানে বেকার। তাই ইদানীং চাকরির সন্ধানে ছিলেন নির্যাতিতা ওই তরুণী।

গত কাল,রবিবার পাটুলি থানায় দায়ের করা নিজের অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, বাঘাযতীনের একটি আশ্রমে তাঁর যাতায়াত ছিল। সেই সূত্রেই স্থানীয় ই-ব্লকের বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা জানিয়ে ওই মহিলার কাছে চাকরির খোঁজও করেন নির্যাতিতা।ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, আশ্রম সূত্রে পরিচিত ওই মহিলা তাঁকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়িতে এক দম্পতি ভাড়়া থাকেন। ওই দম্পতি (বিষ্ণুপদ মণ্ডল এবং রণিতা মণ্ডল) বেলেঘাটার একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করেন। তাঁদেরকে বলে ওই তরুণীকে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন মহিলা

তদন্তকারীদের নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ওই দম্পতির মাধ্যমে বেলেঘাটার ব্যাগের কারখানায় চাকরি পান তিনি। এ মাসের শুরু থেকে সেখানে কাজ শুরু করেন দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে। ওই দম্পতির সহযোগিতায় কাজ পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি গিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে, ওই মহিলার ই-ব্লকের বাড়িতে। যেখানে ওই দম্পতি ভাড়া থাকেন।

নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, যখন তিনি ওই দম্পতির ঘরে ঢোকেন তখন বিষ্ণুপদের স্ত্রী রণিতা সেখানে ছিলেন না। বিষ্ণুপদ একাই ছিলেন। অভিযোগ, ঘরে বসার কয়েক মিনিট পর বিষ্ণুপদ তাঁকে জোর করে বিছানায় শুইয়ে দেন। তরুণীতখন বাধা দেন।চেঁচিয়েও ওঠেন। অভিযোগ, সেই সময়েই ঘরে ঢোকেন রণিতা। কিন্তু রণিতা তাঁকে সাহায্য করার বদলে উল্টে বিষ্ণুপদকে সাহায্য করেন। রণিতার প্রত্যক্ষ সাহায্যে তাঁর সামনেই নির্য়াতিতাকে ধর্ষণ করে বিষ্ণুপদ।

নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রথমে লজ্জায় এবং ভয়ে তিনি কাউকে কিছু বলতে পারেননি। কয়েকদিন পরে এক আত্মীয়কে ঘটনাটির কথা বলেন তিনি। তারপর সেই আত্মীয়ার সাহায্যেই রবিবার রাতে পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার সকালে তাঁর করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিষ্ণুপদ এবং রণিতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ১১৪ (একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি একই অপরাধ ঘটানো) এবং ৫০৬ (ভয় দেখানো)ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।সোমবার ওই দম্পতিকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি গ্রহণের জন্যওই আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনার পিছনে কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তবে, তরুণীর সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ওই দম্পত্তির বিকৃত যৌনতার শিকার হয়েছেন তরুণী। অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × 2 =