তিনি ছিলেন বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রেতা

0
1012

সংখ্যালঘু পরিবারের সম্পত্তি দখল, জালিয়াতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন রাজশাহী আওয়ামী লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।তার শত কোটি টাকার সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র।

দুদকে দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, রাজশাহীর বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ডাবলু সরকারকে রাজাকারপুত্র আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করেন, সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িঘর দখল ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন ডাবলু সরকার। অথচ তিনি ছিলেন বিআরটিসি বাসের টিকিট বিক্রেতা। বাসের টিকিট বিক্রেতা থেকে আজ শত কোটি টাকার মালিক তিনি।

মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, ডাবলু সরকারের বাবা রশিদ সরকার রাজশাহীর কুখ্যাত রাজাকার আবদুস সাত্তার ওরফে টিপুর সহযোগী ছিলেন। সে হিসেবে ডাবলু সরকার রাজাকারপুত্র। ডাবলু সরকার আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী। তার পরিবারের সবাই আগে মুসলিম লীগ ও পরে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ভগ্নিপতি মীর ইকবালের হাত ধরে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেন ডাবলু।

এরপর নগরীর কুমারপাড়ায় ‘সখিনা বোর্ডিং’ দখল করে এক হিন্দু ব্যবসায়ীকে দেশছাড়া করেন ডাবলু। পরে সেখানে ১৬তলা বিশিষ্ট ‘সরকার টাওয়ার’ নির্মাণ করেন তিনি।

পাশাপাশি নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে আবদুল জলিল বিশ্বাস মার্কেট নামমাত্র মূল্যে দখলে নিয়েছেন ডাবলু। রাতের আঁধারে ছোটবনগ্রামের বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করে ১২ বিঘা জমি দখল করেছেন তিনি।

এদিকে নগরীর কুমারপাড়ার বিআরটিসির ডিপোর জায়গাটি এক হিন্দু পরিবারের কাছ থেকে দখলে নেন ডাবলু সরকার। সিঅ্যান্ডবি মোড়ের পাশে জায়গা দখল করে তিন তারকা হোটেল নির্মাণ করছেন তিনি। সেখানে তার দুই অংশীদার বিএনপি নেতা শিমুল ও এনায়েত। এছাড়া কুমারপাড়ায় রঘুশাহ নামের এক হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে পাঁচ কাঠা জমিও দখল করেন তিনি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাবলু সরকার বলেন, সামনে দলের সম্মেলন, তাই আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। এর আগের কমিটিতে উপ-দফতর সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

13 + thirteen =