ভারতের মু’সলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভে হা’মলার প্রেক্ষাপটে দুটি ম’সজিদে আ’গুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উ’দ্ধার করা কোরআনের বিভিন্ন পাতা মাটিতে পুঁতে রাখতে দেখা গেছে লোকজনকে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।
আর ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ৫০০ জনের মতো একদল হিন্দু আশক নগর এলাকায় একটি ম’সজিদের দরজা ভেঙে ফেলে ভেতরে ঢোকে। এরপর সেটির মিনারে উঠে হিন্দুত্ববাদী পতাকা টানিয়ে দেয়। তারা ম’সজিদটিতে আ’গুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তী সন্ধ্যায় আরেকটি ছোট ম’সজিদ ও মু’সলমানদের দোকানে আ’গুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মু’সলমান বলেন, তারা তিন ঘণ্টা ধরে ম’সজিদটিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এরপর হিন্দুত্ববাদী স্লোগান দিতে দিতে চলে যায়। গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, বিকালে এসে ম’সজিদের ভেতরে যা ছিল সব পুড়িয়ে ফেলেছে। এরপর লুটপাট চালিয়েছে। ম’সজিদ লাগোয়া দোকানেও তারা আ’গুন দেয়। এরপর পাশের দুটি মু’সলমানদের বাড়িতে চড়াও হয়।
ওই ব্যক্তি বলেন, কি বলবো, তাও আমি জানি না। গত ৩৫ বছরে এমন দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি। হিন্দু-মু’সলমান এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছিলেন। ঈদুল আজহা ও দেউয়ালি আম’রা একসঙ্গে উদযাপন করেছি।
হিন্দু নারীরা সন্তানদের নিয়ে আমাদের ম’সজিদেও আসতেন বলে তিনি জানান। ওই ভারতীয় বলেন, এটা কেবল মু’সলমানদের জন্যই না, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের সেই শান্তি আজ নাই হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি সংবাদদাতারা বলেন, সং’ঘর্ষকারীদের কারও কারও হাতে ব’ন্দুক দেখা গেছে। সহিং’সতা হয়েছে মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মু’সলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। এসব এলাকার সড়কগুলো এখন অনেকটা ধ্বংসস্তূপের মতো রূপ নিয়েছে, রাস্তায় পুড়ছে যানবাহন, উড়ছে ধোঁয়া– বলেন বিবিসি হিন্দির সংবাদদাতা ফয়সাল মোহাম্ম’দ আলী। হা’মলার মুখে অনেকেই বাড়িঘর ছাড়ছেন। তিনি আংশিক পু’ড়ে যাওয়া ম’সজিদ দেখেছেন, যেখানে মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কুরআনের পাতা। আরেকটি ম’সজিদেও হা’মলা হয়েছে মঙ্গলবার বিকেলে। ব্যাপক প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একদল লোক ম’সজিদের মিনারে উঠছেন।
সাংবাদিকসহ অনেকেই টুইট করেছেন এই বলে যে হা’মলাকারীরা তাদের ধ’র্মীয় পরিচয় স’ম্পর্কে জানতে চেয়েছে। একজন ফটো সাংবাদিক বলেছেন, তাকে তার প্যান্ট খুলে ধ’র্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালেও মু’সলমানদের বাড়ি-সম্পত্তিতে হা’মলা অব্যাহত রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও মু’সলমানদের বাড়িঘর-ম’সজিদ সুরক্ষায় স্থানীয় হিন্দুদের টহল দিতেও দেখা গেছে।
উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, বাবরপুর, ব্রাহামপুর, গোরাখপার্ক, মৌজপুর, ভাজানপুরা, কবিরনগর, চান্দবাগ, গোকুলপুরি, কারওয়াল নগর, কাজুরিখাস ও কারদুমপুরেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।
কোনো কোনো আক্রান্ত এলাকায় আধাসাম’রিক বাহিনীর ভারী উপস্থিতি দেখা গেছে। নাগরিকত্ব আইনের বি’রুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বি’ক্ষো*ভকারীদের সরিয়ে দিতে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতা কপিল মিশ্র একদল হিন্দুকে উসকে দিলে এই সহিং’সতার সৃষ্টি হয়।