নিজেদের সন্তানই খাদ্য হয়ে উঠছে মেরু ভাল্লুকদের কাছে

0
520

জলবায়ু বিপর্যয়ে অভিশাপের মুখে যোগ্যতমের টিকে থাকার নীতিতে নিজেদের সন্তানই খাদ্য হয়ে উঠছে মেরু ভাল্লুকদের কাছে। সম্প্রতি মস্কোর একদল গবেষক এই তথ্য তুলে ধরেছেন। নতুন দশকের প্রথম থেকে পৃথিবীর তাপামাত্রা বেড়েই চলেছে। দুই মেরুতে বিরামহীন বরফ গলছে। অ্যান্টার্কটিকায় বরফের বুক চিরে বয়ে চলেছে নদী।

বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন, মেরু দেশের বরফ গলে সমুদ্রের তল উপচে উঠবে। ভাসিয়ে দেবে বহু শহর। পরিবেশ বদলের এই নিরন্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পালটে যাচ্ছে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা। অভিযোজনের লক্ষ্যে অভ্যেসগুলো বদলে নিতে হচ্ছে মেরু ভাল্লুক, পেঙ্গুইনদের।

সরেজমিনে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেলেন, বেঁচে থাকার তাগিদে মেরু ভাল্লুকের দল নিজেদের সন্তানদেরই গ্রহণ করছে খাদ্য হিসেবে।

মস্কোর এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেরু ভাল্লুক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া মর্দভিনস্তেভ জানাচ্ছেন, মেরু ভাল্লুকরা যে মাংসাশী, তা দীর্ঘকাল আগে প্রমাণিত। কিন্তু এখন যা হচ্ছে, তা বিরল বলেই মনে হচ্ছে। স্বজাতিকে ভক্ষণের প্রবণতা বাড়ছে ওদের মধ্যে। এ বিষয়ে আরও বিশদে গবেষণা প্রয়োজন।

কিন্তু কেন এই প্রবণতা, সেই উত্তরও খুঁজে বের করেছেন গবেষকরা।

তাদের মতে, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে মেরু প্রদেশে। সাধারণত বরফের নিচে থাকা সিল শিকার করে খেয়ে এরা অভ্যস্ত। কিন্তু বরফ গলে যাওয়ায় সিলরাও সমুদ্রের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে খাদ্য সরবরাহ কমছে।  পূর্ণবয়স্ক মেরু ভাল্লুকরা স্ত্রী এবং শাবকদের আক্রমণ করে তাদেরই মাংস ছিড়ে খাচ্ছে।

তারা জানাচ্ছেন, কখনও শিকার মেরে বরফের তলদেশে জমা করে রাখছে, ভবিষ্যতের খাদ্যের সঞ্চয় হিসেবে।

তবে আর্কটিক অঞ্চল বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার উত্তোলনে অভিযান জোরদার করেছে ব্যবসায়ীরা। ফলে সেসব জায়গা থেকে উৎখাত হতে হচ্ছে সিল বা মেরু ভাল্লুকদের। সেটাও খাদ্য সংকটের একটা কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

twenty − eight =