নীলফামারী কিশোরগঞ্জের গাড়াগ্রামে ভূমি দস্যূতার দীর্ঘ মেয়াদী কৌশল

0
760

মোজাহারুল ইমলাম ও আবু সুফিয়ান: প্রাচীন কালের পাকিস্তানী আমলে প্রাসাশনিক কাঠামো যখন দূর্বল ও ভঙ্গুর ছিল- তখন প্রচলিত প্রবাদ শোনা গেছে “জোর যার মূল্লুক তার, লাঠি যার মাটি তার” কিন্ত বর্তমান বঙ্গবন্ধুর সু-যোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে মানবাধিকার শতভাগ নিশ্চিত করেছেন তখন কেন এখনো এ প্রবাদটির চির কবর হয় নাÑতাই ভাবনা! এরকমই এক ভূমি দস্যূতার দীর্ঘ মেয়াদী অভিনব ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের  জুম্মাপাড়ায় । পৈত্রিক ওয়ারশি সূত্রে প্রাপ্ত একটি জমির মালিক হচ্ছে মোঃ লাল মিয়া গং। তফসিলে বর্ণিত উক্ত জমির  সি.এস. নং ১৮০৯ এবং পরিমান  ৪৬ শতাংশের মধ্যে ২৩ শতাংশ। হঠাৎ একদিন উক্ত জমিতে  স্থানীয় ব্যক্তি মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং মনোয়ার হোসেন নামীয় ব্যক্তিদ্বয় স্ব-দলবলে আকম্মিক ভাবে জমিটি বেদখল দেয় । ঘটনা জানতে পেরে জমির প্রকৃত মালিক লাল মিয়া ও তার সহোদররা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা সেখানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর হুমকি দেন। তারা দাবী করে যে, স্থানীয় ব্যক্তি রেয়াজ উদ্দিন গত ০১/০৬/১৯৫০ ইং সালে উক্ত জমি ”খামার গাড়াগ্রাম ইসলামীয়া মাদ্রাসার” নামে ওয়াকফ দলিল দান করে এবং সেই দলিল মোতাবেক পরবর্তী এস,এ রেকর্ড এবং বি.এস রেকর্ড মাদ্রাসার নামে হয়। তাই উক্ত জমি মাদ্রাসার বিধায় অত্র মাদ্রাসার স্ব-ঘোষিত বর্তমান সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও স্ব-ঘোষিত মোতয়াল্লী মনোয়ার হোসেন জমিটি বেদখল দেয়। কিন্তু কীভাবে জমির প্রকৃত মালিক মোঃ লাল মিয়া গং থেকে রেয়াজ উদ্দিন (মৃত্যু ) মালিক বনে গেল এবং কিভাবে  উক্ত জমি মাদ্রাসায় দান করল? অপরাধ বিচিত্রা আবুল কালাম আজাদ এবং মনেয়ার হোসেন কে এই প্রশ্ন করলে তারা এর কোন উত্তর দিতে রাজী হন নাই ।

তাই উক্ত জমি মাদ্রাসার বিধায় অত্র মাদ্রাসার স্ব-ঘোষিত বর্তমান সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও স্ব-ঘোষিত মোতয়াল্লী মনোয়ার হোসেন জমিটি বেদখল দেয়। কিন্তু কীভাবে জমির প্রকৃত মালিক মোঃ লাল মিয়া গং থেকে রেয়াজ উদ্দিন (মৃত্যু ) মালিক বনে গেল এবং কিভাবে  উক্ত জমি মাদ্রাসায় দান করল? অপরাধ বিচিত্রা আবুল কালাম আজাদ এবং মনেয়ার হোসেন কে এই প্রশ্ন করলে তারা এর কোন উত্তর দিতে রাজী হন নাই ।

উল্লেখ্য যে, রেয়াজ উদ্দিন উক্ত মাদ্রাসার নাকি মোতোয়াল্লী ছিলেন। আর তার সৃষ্ট দলিল শর্তে তার জেষ্ঠ পুত্র পরবর্তী মোতোয়াল্লী হওয়ার ঘোষনা আছে। পরবর্তীতে উক্ত মাদ্রাসার স্ব-ঘোষিত মোতোয়াল্লী রেয়াজ উদ্দিনের মৃত্যুর পর বর্তমানে  মোঃ আবুল কালাম আজাদ অত্র মাদ্রাসার স্ব-ঘোষিত সভাপতি এবং মনোয়ার হোসেন উক্ত দলিল শর্ত মতে মৃত রেয়াজ উদ্দিনের জেষ্ঠ পুত্র হিসেবে স্ব-ঘোষিত মুতোয়াল্লী হন।

মামলার কাগজ পত্রে মনোয়ার হোসেনকে রেয়াজ উদ্দিনের জেষ্ঠ পুত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু অপরাধ বিচিত্রার অনুসন্ধানে জানা যায়, মনোয়ার হোসেন আসলে রেয়াজ উদ্দিনের নাতী সম্পর্ক। কেন এমন হলো? এ বিষয়ে মনোয়ার হোসেনকে প্রশ্ন করলে তিনি এর কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই।

আসলে মনোয়ার হোসেন লাল মিয়ার জমি আত্মসাতের হীন অপকৌশল চরিতার্থ করার জন্যেই এ ধরনের অপকর্ম করেছে। এখানে মনোয়ার হোসেন সম্পর্কে কিছু চানচল্যকর তথ্য উল্লেখ না করলেই নয়Ñএলাকাবাসীর ভাষ্য মতে এই ব্যক্তি একজন ক্রিমিনাল এবং মামলাবাজ লোক। সরলতা ও অসহয়তার সুযোগ নিয়ে প্রতিবেশীদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার অসংখ্য নজির রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এখন পর্যন্ত কিছু মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি তিনি পরোক্ষভাবে তার ছেলের মাধ্যমে জাল টাকার কারবারের সাথেও জড়িত। তার এসব মামলার বেশির ভাগই জমি-জমা কেন্দ্রীক । আসলে অবৈধ পন্থায় অর্থ-বিত্ত আর প্রাচুর্য্যরে মালিক হওয়াই তার আসল উদ্দেশ্য। যাইহোক তারা দু-জনেই এখন অত্র মামলায় এই জমিটির বেদখলকারী।

জমির প্রকৃত মালিক লাল মিয়া গং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি অফিসে  খাজনা দিতে গিয়ে ভ্রমাত্মক এই এস.এ রেকর্ড  এবং ভুয়া এই ওয়াকফ দলিলের বিষয়ে জানতে পেরে  গত ১৫/০৬/২০১৫ ইং তারিখে জমির মালিক ঘোষনা মূলক  ডিক্রির দাবিতে নীলফামারী সহকারী জর্জ আদালতে আইনের আশ্রয় নেন যার মামলা নং ৫২/২০১৫। প্রায় দীর্ঘ ৪ বছর পর আদালতে উক্ত এস.এ রেকর্ড  এবং ওয়াকফ দলিল ভুল ও মিথ্যা প্রমাণিত হলে গত ২৯/০৮/২০১৯ই ং তারিখে  বিজ্ঞ আদালত  জমির প্রকৃত মালিকের পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রাদান করেন।

মির প্রকৃত মালিক লাল মিয়া গং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি অফিসে  খাজনা দিতে গিয়ে ভ্রমাত্মক এই এস.এ রেকর্ড  এবং ভুয়া এই ওয়াকফ দলিলের বিষয়ে জানতে পেরে  গত ১৫/০৬/২০১৫ ইং তারিখে জমির মালিক ঘোষনা মূলক  ডিক্রির দাবিতে নীলফামারী সহকারী জর্জ আদালতে আইনের আশ্রয় নেন যার মামলা নং ৫২/২০১৫। প্রায় দীর্ঘ ৪ বছর পর আদালতে উক্ত এস.এ রেকর্ড  এবং ওয়াকফ দলিল ভুল ও মিথ্যা প্রমাণিত হলে গত ২৯/০৮/২০১৯ই ং তারিখে  বিজ্ঞ আদালত  জমির প্রকৃত মালিকের পক্ষে রায় ও ডিক্রি প্রাদান করেন।

ততদিনে গরীব লাল মিয়া গং মামলার খরচ চালাতে গিয়ে নিঃস্ব প্রায়। যাইহোক উক্ত ওয়াকফ দলিল সম্পাদনের তারিখ দেখানো হয়েছে ১/৬/১৯৫০ এবং দলিল নং-৪১০৩। কিন্তু সেই সময়ে বৃহত্তর  রংপুর জেলার সব রেকর্ড শাখায় উক্ত ৪১০৩ নং দলিলের দাতা- গ্রহিতা, এমনকি খতিয়ান ও দাগ নং বা জমির বিবরণ-পরিমানের সাথে উক্ত দলিলের কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় নাই। উল্লেখ্য যে, উক্ত ওয়াকফ দলিলের  মূল দলিল তারা দেখাতে পারে নাই।

তারা দলিলের মাত্র ভূয়া নকল তৈরী করে সংগ্রহে রেখেছে। সুতরাং এই ওয়াকফ দলিল যে মিথ্যা বা বানোয়াট বিজ্ঞ আদালতে তা প্রমাণিত হয়েছিল। অপরাধ বিচিত্রা আরও জানতে পায় সেই সময় মৃত রেয়াজ উদ্দিন এলাকার নিরক্ষর, গরীব ও অসহায় ব্যক্তিদের জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয় ও রেকর্ডের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে প্রতারণায় পারদর্শী ছিলেন। আর এই ধরনেরই এক অপকর্মের ফসল ছিল ১৯৬২ সালের এই এস.এ রেকর্ড।

উপরন্তু দুর্বৃত্ত  মোঃআবুল কালাম আজাদ বিজ্ঞ আদালতের উক্ত রায় ও ডিক্রিকে অমান্য ও অগ্রাহ্য  করে গত ১৯/০২/২০২০ ইং তারিখে জেলা জর্জ আদালতে আপিল করেন যার মামলা নং-৭৬/২০১৯। সেখানে তিনি নালিশ করেন যে, উক্ত জমিতে তাদের রোপিত  তামাক ও ভ্ট্টুাক্ষেত লালমিয়া গং বিনষ্ট করিয়া  জমি দখলের পায়তারা করছেন। অথচ  নিম্ন আদালতে রায় পাওয়ার পর জমির প্রকৃত মালিক লালমিয়া গং উক্ত ফসল রোপন করেছিল।

এদিকে আপিল কারীরা মোকদ্দমা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেন। সেই মোতাবেক আদালত গত ২৩/০২/২০২০ ইং তারিখে  বাদী পক্ষকে “কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দ্বারা  বারিত করা হবে না”- মর্মে  ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছিল এবং তার জবাব  নির্দিষ্ট সময়েই দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু উক্ত নোটিশে আদালত জমির প্রকৃত মালিক  পক্ষকে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আদেশ দ্বারা বারণ করেন নাই । সুতরাং জমি সংগত কারণেই পূর্ব রায় মোতাবেক প্রকৃত মালিকের দখলে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এদিকে দুর্বৃত্তরা অসহায় প্রকৃত মালিকদের ফসল সহ জমি আত্মসাৎ ও বেদখলের নিমিত্তে আপিল  মোকদ্দমার  অযুহাতে তাদের বিরুদ্ধে থানায় বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ দেয়।

দুবৃত্তরা  ধনাঢ্য ক্ষমতাবান ও দেওয়ানি প্রকৃতির হওয়ায় কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ দ্বারা জমির প্রকৃত মালিকদের দখল ছাড়িয়া দেওযার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন  করিতেছে। এমনকি মিথ্যা মোকদ্দমায় জড়িত করারও হুমকি প্রদর্শন করিতেছে।

এমতাবস্থায় উপায়-অন্ত না পেয়ে এই অসহায় প্রকৃত মালিক পক্ষ নীলফামারী পুলিশ সুপারের  স্মরনাপন্ন হন। যাই হোক  এখন পুলিশ সুপার  উল্লেখিত অসহায় লাল মিয়া গং দের কিভাবে এবং কতটুকু সহায়তা নিশ্চিত করবে-  তা অপরাধ বিচিত্রা পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশ করবে। ফলোআপ চলবে-

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

10 + ten =