ছয় হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই নারীর মৃত্যু

0
536

সিলেট নগরীর পশ্চিম কাজিরবাজার মোগলটুলা এলাকার বাসিন্দা সংকটাপন্ন একজন মহিলা রোগীকে চিকিৎসা প্রদানে অস্বীকৃতি ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, রোববার (৩১ মে) দিবাগত রাত ১২ থেকে অসুস্থ্ এই রোগীনিকে ভর্তি করতে ৬টি হাসাতালের সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের কাকুতি-মিনতি করেও ভর্তি করাতে পারেননি তার স্বজনরা। শ্বাসকষ্ট থাকায় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নানা অজুহাতে ওই রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।অবশেষে রাত প্রায় আড়াইটার দিকে স্বজনরা যখন তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তখন চিকিৎসকরা জানান মনোয়ারা বেগম (৬৩) বেঁচে নেই। জানা গেছে, মনোয়ারা বেগম দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগছেন। রবিবার রাত ১২টার দিকে তার শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে তাকে নগরীর সোবহানীঘাটস্থ আল-হারামাইন হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। আইসিইউ বেড খালি নেই অজুহাত দেখিয়ে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স থেকেই নামায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও অক্সিজেন নেই অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর রোগীর স্বজনরা তাকে নিয়ে আসেন নগরীর সোবহানীঘাট বিশ্বরোডের মা ও শিশু হাসপাতালে। সেখান থেকেও তাদেরকে ফিরতে হয় নিরাশ হয়ে। তবে রোগীর স্বজনরা বাগবিতণ্ডা করে সেখান থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন।

পরে মনোয়ারা বেগমের গন্তব্য হয় নগরীর তালতলাস্থ পার্ক ভিউ হাসপাতালে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীকে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার বুকের এক্স-রে করা হয়।

এরপর ভর্তি না দিয়ে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসকরা। তখন মনোয়ারা বেগম প্রচণ্ড বুকের ব্যথায় কাতরাতে থাকলে স্বজনরা তাকে ভর্তির জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু রাগীব রাবেয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তাকে ভর্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করে।

শেষমেশ রাত আড়াইটার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তখন জানান মনোয়ারা বেগম আর বেঁচে নেই। অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা গেছেন।

এদিকে, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও শংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেটের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মারা যাওয়া রোগীর পরিবারের স্বজনরা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − one =