টেকনাফ-উখিয়ায় এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার আওয়ামী লীগ নেতার ঘরে মিলল ৪০ হাজার পিস ইয়াবা

0
487

করোনালয়ের এমন ভয়াল পরিস্থিতিতেও মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার থেমে নেই। সোমবার একদিনেই পুলিশ, ও বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। অপর এক অভিযানে র‌্যাব উদ্ধার করেছে ১৩৬ বোতল ফেনসিডিল। এসব ঘটনায় ৪ পাচারকারী আটক হয়েছেন। তবে টেকনাফ সীমান্তে চাঞ্চল্যকর বিষয়টি ঘটেছে, টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা নুর হোসেনের বাড়ি থেকে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনাটি। ওই ঘটনায় আজ সোমবার টেকনাফ থানায় ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেনসহ ৪ পাচারকারীর বিরুদ্ধে ইয়াবা পাচারের একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্য তিন পাচারকারী হচ্ছে যথাক্রমে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ইয়াবা পাচারকারী শাহ আলম, দীল মোহাম্মদ ও লালাইয়া। চেয়ারম্যানসহ ৪ পাচারকারীর সবাই পলাতক।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ কালের কণ্ঠকে জানান, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেনের ঘর থেকে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, চেয়ারম্যান নুর হোসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারী। তবে তার বিরুদ্ধে এতদিন ধরে থানায় কোনো মামলার রেকর্ড নেই।

থানার ওসি আরো জানান, সাবরাং এলাকার তিন ইয়াবা পাচারকারী শাহ আলম, দীল মোহাম্মদ ও লালাইয়া দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবারে জড়িত রয়েছে। এই তিন কারবারী এক লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা মিয়ানমার থেকে পাচার করার সংবাদ পেয়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নামে।

টেকনাফ থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জামশেদ একদল পুলিশ নিয়ে চেয়ারম্যান নুর হোসেনের ঘরে অভিযান চালিয়ে চালানের ৪০ হাজার পিস উদ্ধার করে। এ সময় চেয়ারম্যানও অপর তিন পাচারকারীকে পুলিশ ধরতে পারেনি।

তবে এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও টেকনাফ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল আলম এবং চেয়ারম্যান নুর হোসেনের শ্বশুর শফিক মিয়া জানান, চেয়ারম্যান নুর হোসেন কোনো দিনই ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত ছিল না। তারা বলেন, চেয়ারম্যান ইয়াবা পাচারের খবর শুনে নিজেই পাচারকারীদের বিষয়ে থানাকে অবহিত করেন এবং সরেজমিন ইয়াবার চালান উদ্ধারে যান। অথচ পুলিশ উল্টা একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

তারা বলেন, চেয়ারম্যান ইয়াবা পাচারের খবর শুনে নিজেই পাচারকারীদের বিষয়ে থানাকে অবহিত করেন এবং সরেজমিন ইয়াবার চালান উদ্ধারে যান। অথচ পুলিশ উল্টা একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

এদিকে বিজিবি-৩৪ ব্যাটালিয়ানের রেজু আমতলী বিওপি’র সদস্যরা আজ ভোরে উখিয়া উপজেলার তুলাতলী জলিলের গুদা নামক সীমান্তে ওঁৎ পেতে থেকে এক লাখ ৫০ হাজার পিচ ইয়াবার একটি বড় চালান উদ্ধার করেছে। সেই সাথে বিজিবি সদস্যরা তিনজন পাচারকারিকেও আটক করেছে।

বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, আটক পাচারকারী যথাক্রমে জোবায়ের (২১), আনোয়ার (২১) ও বাপ্পী (২০) উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তারা সীমান্ত পার হয়ে মরিচের বস্তায় ভরে এ পরিমাণ ইয়াবার চালান পাচারকালে বিজিবি সদস্যরা হাতেনাতে আটক করে।

অপরদিকে র‌্যাব- ১৫ এর একদল সদস্য এক অভিযান চালিয়ে টেকনাফের জাদিমোড়া এলাকা থেকে ১৬৭ বোতল ফেনসিডিলসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে। আটক পাচারকারী নুরুল ইসলাম (৫৪) টেকনাফে জাদিমোড়া এলাকার বাসিন্দা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × two =