আন্তর্জাতিক স্বর্ন চোরাকারবারী চক্রের সদস্য প্রতারক শাহেদ

0
867

অবি ডেস্ক: আন্তর্জাতিক স্বর্ন চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য প্রতারনার মহাগুরু মো. শাহেদ এখন কারাগারে। কয়েদিন আগেও সে ছিলো দেশের অন্যতম আওয়ামীপন্থি বুদ্ধিজীবী। তার ফোনের কললিস্টে স্বর্ন চোরাকারবারিদের নাম পাওয়া গেছে। যেসব চোরাকারবারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল অথবা যাদের ওপর হুলিয়া রয়েছে তাদের সঙ্গে গভীর সখ্যতা ছিল এই সাহেদের।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের জয়পুরের একটি হোটেলে তাদের পরিচয় ঘটে ভারতীয় স্বর্ন চোরাকারবারী মারিয়ার সাথে। পরবর্তীতে মারিয়া তাকে স্বর্ন চোরাকারবারে প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব লুফে নেন প্রতারক জগতের জাদুকর শাহেদ। শাহেদের আমন্ত্রণে মারিয়া একাধিকবার বাংলাদেশে আসে। চক্রটি দুবাই থেকে পাশের দেশ হয়ে বাংলাদেশে স্বর্ন নিয়ে আসতো। এরপর তারা সোনা সরবরাহ করতো দেশের কালো বাজারে। এছাড়াও শাহেদের সঙ্গে বাংলাদেশের ঢাকা বিমানবন্দরসহ নৌপথে যারা স্বর্ণ চোরাচালান করে থাকে তাদের সঙ্গে তার লিয়াজোঁর সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র‌্যাবের রিমান্ডে শাহেদ তার দোষ স্বীকার করেছে। র‌্যাব জানিয়েছে, সাতক্ষীরার অস্ত্র মামলায় তাকে আলাদাভাবে রিমান্ড নেয়া হবে। এছাড়াও জানা গেছে, শাহেদের মাথায় মোট ২৯টি মামলার খড়গ ঝুলছে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, র‌্যাবের রিমান্ডে শাহেদ তার প্রতারণার দোষ স্বীকার করেছে। তাকে আমরা আলাদাভাবে রিমান্ডে নিবো। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।


আরো জানা গেছে, শাহেদ বিভিন্ন কাজে বিদেশে যেতো। সে ৩টি দেশে বেশি যেতো। সেগুলো হচ্ছে- ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর। ২০১২ সালে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় একটি উড়োজাহাজের মধ্যে এক ক্লিনারের সে নম্বর নিয়েছিল। ক্লিনার তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, কেন তিনি তার নম্বর নিচ্ছেন? উত্তরে শাহেদ বলেছিলো, পরে তার সঙ্গে সে কথা বলবে। এরপর ওই ক্লিনারকে সে একদিন বিমানবন্দরের পাশের উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে তার চেম্বারে ডেকে নিয়েছিলো। আলাপচারিতায় তার কাছে জানতে চায় যে, একাধিক স্বর্ন চোরাকারবারির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে বা তাদের নম্বর দিলে তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দেয়া হবে। এরপর একাধিকজনের নাম এবং নম্বর সংগ্রহ করে সে। পরে শাহেদ জানতে পেরেছে, ওই ক্লিনার নিজেও স্বর্ণ চোরাচালানকারী চক্রের সদস্য। তার নাম জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

সূত্র জানায়, শাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে চাওয়া হয়, কোন সূত্র ও সাহসের ওপর ভর করে সরকারি প্রটোকল নিতো সে। উত্তরে জানান, ঢাকার বাইরে তিনি গেলে তার সঙ্গে একাধিক গাড়ি এবং গ্যানমান দেখে সরকারের অনেক লোক ভড়কে যেতো। সবাই মনে করতো, সে অনেক বড়সড় লোক। এ সময় সে কাউকে পাত্তা দিতো না। তখন সে পুলিশকে নানা কাজে ব্যবহার করেছে। এছাড়াও একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে তার নামে হওয়া মামলাগুলো থেকে গ্রেপ্তারি পরোওয়ানা ঠেকিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

five + nineteen =